জাহাঙ্গীর বাবু
২০১১ সাল থেকে সিঙ্গাপুরে কাজের সুবাদে তার সাথে পরিচয়। মহৎ হৃদয়ের একজন মানুষ ,অত্যন্ত বিনয় বুদ্ধিমান শিক্ষায় তিনি একজন প্রকৌশলী। প্রতি নিয়ত আমার সহ পরিচিত জনদের কাজের খোঁজ খবর রাখেন। কর্মহীনদের কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য সাহায্য করে থাকেন।
জু চাট এরিয়ায় একটি বিলাস বহুল আবাসিক ভেঞ্চুরা ভিউ ভবনের নির্মাণ কাজের সময় আমি তখন ডি জে বিল্ডার্স নামে নির্মাণ কোম্পানির সাইট ইঞ্জিনিয়ার। কবির ভাই পুরো ভবনের মেটাল,এলুমিনিয়াম,গ্লাস এর আইটেম গুলোর ঠিকাদার শুনলি কোম্পানির ম্যানেজার।আমাদের সব কন্টাক্টর,আমার বস ডাল জিৎ সিং এর কাছে পুরো দস্তুর এক হিরো।আমি বাংলাদেশী , এই পরিচয় টুকু যেন দুজনের কাছে মনে হয়েছে শেকড়ের কাছে ফিরে যাওয়া।সম্পর্কের শুরু।এর পর রেষ্টুরেন্ট ,আড্ডায় নুরিয়া ভাবি সহ অনেক সময় কেটেছে রবার্ট লেনের সালিমার রেষ্টুরেন্টে।আমার গ্যাং ছিল ইঞ্জিনিয়ারদের গ্যাং পনের বিশ জনের ,আমার মাধ্যমেই আমার বন্ধুদের ও প্রিয় ভাজন হয়ে উঠেন। তার হাসি মাখা মুখ,শান্ত বচন অল্পতেই আকৃষ্ট করতো সবাইকে .আমার প্রায় লেখাতেই কমেন্টস করা তারা রুটিন কাজের একটি হয়ে যায়.ব্যস্ত মানুষ।কমেন্টস না করতে পারলে ফোন করেও খবর নিয়েছেন অসংখ্য বার.বলতেন তোমার মগজে আছে ব্রো ,এতো লিখো কি করে.
২০১৬ সালের দিকে প্রতিষ্ঠিত করেন নিজের কোম্পানি ব্রুকলিন্জ ,ব্যাস সাহস,বুদ্ধি ,বিচক্ষণতা,দায়বদ্ধতা তাকে সিঙ্গাপুরের বাইরেও সিঙ্গাপুর সরকারের পক্ষে এনে দেয় সম্মাননা। হয়েছেন সিঙ্গাপুর প্রেসিডেন্টের সফর সঙ্গী ,তার কোম্পানি কাজের জন্য, গুণগত মান ও সঠিক সময় কাজ সম্পন্নের জন্য পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বয়স আমার চেয়ে বছর দশেক কম হবে ,কিন্তু মানবতায় ছাড়িয়ে গেছেন সিঙ্গাপুরের অনেক বাংলাদেশী কোটি কোটি পতিদের।বুঝিয়ে দিয়েছে টাকা থাকলেই হয়না ,মনুষত্ব্য ও থাকা চাই। মানবতার ফেরিওয়ালা হতে আল্লাহর রহমতের প্রয়োজন। আল্লাহ কবির হোসাইন কে পছন্দ করেছেন বলেই তিনি দাঁড়াতে পেরেছেন সিঙ্গাপুরের অসহায় অভিবাসী বাংলাদেশী ও দেশের দরিদ্র মানুষের পাশে। এই মহৎ কাজে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন তার ভক্ত,প্রিজন,তার বন্ধু বান্ধব সবার উপর আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আর তার স্ত্রী নুরিয়া ভাবি।
২০১৮ সালে আমার বাবা অসুস্থ থাকায় দেশে চলে আসি ,২০১৯ সাল পর্যন্ত ফিরা হয়নি সিঙ্গাপুর ,আব্বা চলেগেলেন ২৩ এপ্রিলে পরপারে।ফোন করে সান্তনা দিতে ভুলেননি। দেশেও কোথায় জব হচ্ছিলো না.কবির ভাই প্রায় ফোন করে সাহস যোগাতেন।বলতেন আল্লাহর উপর ভরসা রাখো। আমার স্ত্রী কন্যাদের আল্লাহ ভক্তির কথা স্মরণ করাতেন।ধার্মিক একজন মানুষ।বর্তমান যে জব করছি তার আগের জবটাও কবির ভাই দেশে একটি কনফারেন্স আসেন হোটেল সোনার গাঁয়ে ,সেখানে কথায় কথায় রেফার করেন আমার নাম.সে চাকরিটা আমার জীবনে আরেকটি টার্নিং পয়েন্ট আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে। মাত্র পঁচিশ দিন পর কবির ভাইকে বললাম ভাই আরেকটা অফার পেয়েছি এখন আপনি না বললে কি করে এই কাজটা ছাড়ি ,এক কথায় বললেন আই উইল ম্যানেজ,জাস্ট গো ফর দা নিউ চ্যালেঞ্জ।
কোভিড ১৯,করোনা ভাইরাসের মহামারী আক্রমণে বিশ্ব এখন পর্যদুস্ত। আমেরিকা ইটালির চেয়েও প্রবাসীদের সেবায় সিঙ্গাপুর সবার চেয়ে এগিয়ে ,এমন সময় বাংলাদেশী বংশদ্ভুদ,সিঙ্গাপুরের নাগরিক কবির হোসেন সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশী তথা অভিবাসীদের কাছে হয়ে উঠেছেন মানবতার ফেরিওয়ালা। কবির হোসাইন ও তার স্ত্রী নুরিয়া দাঁড়িয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশে।বাড়িয়েছেন সাহায্যের হাত.গুগল প্লে ষ্টোরে চালু করেছেন বিশেষ গ্রোসারি এপস।
সিঙ্গাপুর এর পর বাংলাদেশে ও ঈদ উপহার সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ করলেন সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী কবির হোসাইন, সেই সাথে দেশ ও দেশের বাইরে সবাইকে ঈদের জানিয়েছেন শুভেচ্ছা ।
গত ২৪/০৫/২০ বাংলাদেশের ঢাকা উত্তরায় ৫০ নং ওয়ার্ডের দেওয়ানপাড়ায়, সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী ব্রুকলিঞ্জ ষ্টিলনেস ষ্টিল কোম্পানির CEO কবির হোসেন এর উদ্যোগে, প্রবাসী সিঙ্গাপুর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মোঃ আমিনুল ইসলাম বুলবুল এর মাধ্যমে তার পরিবারের সহায়তায় ৩৩ জনকে নগদ ৫০০ অর্থ টাকা করে, ২৫ জনকে ৫৪৫ টাকার মধ্যে চাউল, সেমাই, সয়াবিন তৈল, দুধ, আলু, পিয়াজ, চিনি দিয়ে প্যাকেট করে, ঈদ উপহার সামগ্রী কর্মহীন পরিবারের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন, উপহার সামগ্রী পেয়ে কর্মহীন পরিবারগুলোর মুখের হাসি থেকেই ভালোবাসা ও দোয়ার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন,
এছাড়া তিনি রাজাপুর উত্তর পাড়া পাবনা জেলার সময়ের বাতিঘর যুবসংঘ-কে ৪০০০০/= চল্লিশ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন, যা দিয়ে সময়ের বাতিঘর যুব সংঘের কর্তৃপক্ষ ২০০ হতদরিদ্র মানুষের হাতে ঈদ উপহার পৌঁছে দিয়েছেন। অজো পাড়া গাঁয়ে পাবনাবাসী ও উত্তরা দেওয়ান পাড়ার কর্মহীন মানুষ যাকে কখনো দেখেনি , অথচ তার দেওয়া ঈদ উপহার পেয়ে খুশিতে আত্মহারা, এই ভালোবাসা এই আনন্দের সত্যি কোন তুলনা হয়না।
মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসার টানে, মানবতার টানে, আল্লাহকে সন্তুষ্ট রাখার জন্য, আল্লাহর শ্রেষ্ঠ জীব গুলোর মুখে হাসি ফোটানোর জন্য, তার মনুষ্যত্ব বোধ থেকে তিনি এই কাজগুলো করে যাচ্ছেন, তার কাজে অনুপ্রেরণা উৎসাহ যোগাচ্ছেন তারই সহধর্মিনী।
যারা কবিরের সহযোগিতা পেয়েছেন। তারা দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে দোয়া করছেন, তাকে এবং তার পরিবারের সবাইকে সমস্ত বিপদ আপদ থেকে হেফাজতে রাখেন, আল্লাহ যেন তাকে নেক হায়াত দান করেন এবং আল্লাহ যেন তাকে আরো বেশি সম্পদশালী বানিয়ে দেন। তিনি যেন সবসময় এভাবে মানবতার দূত হয়ে মানুষের পাশে থাকতে পারেন। উপহার পাওয়া এক বিধবা বিদ্যা মহিলার কৃতজ্ঞতা স্বরূপ কবির হোসেন এর জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা,এক নজরে দানবীর কবির হোসেন এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় ও তার সামাজিক কার্যক্রম গুলো।
সিঙ্গাপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, ব্রুকলিঞ্জ ষ্টিলনেস ষ্টিল কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড CEO কবির হোসাইন। বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এর কারণে গত ৭/৪/২০ সিঙ্গাপুরে সার্কিট ব্রেকারে ও লকডাউন হওয়ায়, শ্রমিকদের আবাসস্থল এবং ডরমেটরিতে আটকে থাকা কর্মহীন হয়ে পড়া প্রবাসী শ্রমিকদের মাঝে, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, কিভাবে তারা খাবে, ঘরে আটকে থাকার কারণে বাহিরে গিয়ে কোনকিছু কিনার সামর্থ থাকলেও কিনতে পারছে না। আবার অনেকে কিনার আগ্রহ থাকলেও অর্থাভাবের জন্য কিনতে পারছে না। এরমধ্যে মুসলিম উম্মাহর রোজা শুরু হয়ে গেল, এই কারণে প্রবাসী শ্রমিকরা আরো বেশি হতাশাগ্রস্ত হয়ে গেল। কিভাবে তারা ভালো খাবারগুলো কিনে খাবে, প্রতিবছর প্রবাসীরা মসজিদে গিয়ে ইফতার করতে যেত, এবছর লকডাউন এর জন্য মসজিদে যেতে পারছে না। জামায়াতের সাথে নামাজ পড়তে পারছেনা এই অবস্থায় হতাশাগ্রস্থ শ্রমিকদের সামনে মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে হাজির হলেন, বাংলাদেশি সন্তান ব্রকলিঞ্জ ষ্টিলনেস ষ্টিল কোম্পানির কর্ণধার কবির হোসাইন ও তার সহধর্মিনী।
সিঙ্গাপুর প্রবাসী শ্রমিকদের দুরবস্থার কথা চিন্তা ভাবনা করে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশি শ্রমিকদের আবাসস্থলে ও বিভিন্ন ডরমিটরিতে গিয়ে ইফতার ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন , তার সহধর্মিনীকে সাথে নিয়ে পৌঁছে দিচ্ছেন সিঙ্গাপুরে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। ভালোবাসা পাগল মানবদরদী কবির ও তার সহধর্মিনী সকালে ঘুম থেকে উঠেই বেরিয়ে যেতেন বিভিন্ন সাপ্লাইয়ারদের কাছে, ক্রয় করতেন ফ্রুটস ও ইফতার সামগ্রী, যেমন মুড়ি, চানাচুর, খেজুর, তরমুজ, আপেল, মালটা। এবং তার সহধর্মিণীর নিজ হাতে বানানো কেক, পরে সেগুলো প্যাকেট করে, লরিতে করে পূর্বে অর্ডারকৃত নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দিতেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানব সেবায় নিয়োজিত থাকতে থাকতে ভুলে যেতেন নিজের লাঞ্চ করার সময় কফি টাইম রেস্টিং টাইমিং। রোজার মধ্যে অনেক সময় এক জায়গায় বসে স্বাভাবিক ভাবে ইফতার করতে পারেননি। লরিতে বসেই ইফতার সেরে নিয়েছেন। অনেক সময় নির্দিষ্ট টাইম এর ইফতার করতে পারেননি। জনাব কবির ও তার সহধর্মিণী লকডাউন ও রমজানের সময় প্রতিনিয়ত নিয়োজিত রেখেছেন মানব সেবায়। ফোন করে খোঁজখবর রাখছেন। প্রবাসী শ্রমিকদের সাথে।
সাধারণ কর্মহীন শ্রমিকরা একটা সময় বিভিন্ন মালামালের অর্ডার করতেন, যেগুলো ক্রয় করে আবার তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হতো। কবির হোসেনের কোম্পানির ম্যানেজার (সিঙ্গাপুরিয়ান) নিজে লরি ট্রাক চালিয়ে, বাজারগুলো পৌঁছে দিতেন, কবির হোসেন শত কষ্ট হলেও চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। নির্দিষ্ট সময় নির্দিষ্ট জায়গায় বাজারগুলো পৌঁছে দিতে। একটা সময় অর্ডার এর পরিমাণ বেশি হওয়ায়। তিনি তার নিজ উদ্যোগে প্লে স্টোরে একটি অ্যাপস ক্রিয়েট করেন। অ্যাপসটির নাম বিসিএস, এই অ্যাপস এর মাধ্যমে গৃহবন্দী কর্মহীন শ্রমিকরা তাদের পছন্দের মালামাল অর্ডার করেন , এবং নির্দিষ্ট সময়ে তাদের কাছে পৌঁছে দিতেন। এখন কবির হোসাইনের এই অনলাইন অ্যাপস এর মাধ্যমে সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকরা ঘরে বসেই তার পছন্দের মালামালগুলো, ক্রয় করতে সক্ষম হয়েছেন, প্রবাসীদের কাছে কবির ভাই মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, এক মানবতার ফেরিওয়ালা ,সিঙ্গাপুর গভারমেন্ট থেকেও তিনি তার কার্যক্রমের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন।
কবিরের এসব মহতী ও মানব সেবা মূলক কাজে তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতার ভূমিকা পালন করেছেন, সিঙ্গাপুর আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাংবাদিক শাহাদাত রাসেল, mwc কর্মী জসিম, বিজয় বিমল, সিঙ্গাপুর শ্রমিক লীগের সভাপতি রেজাউল করিম, সিঙ্গাপুর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আরিফ হোসেন, আরও নাম না জানা অনেকেই, যাদের সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে, বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে উপহার সামগ্রী পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন, ঈদের দিন তাদের কে ফোন করে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ দিতে ভুলে যাননি জনাব কবির। ফোন করে ঈদের দিনও ঈদের খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন সিঙ্গাপুরের প্রতিটি ডরমিটরিতে এবং প্রবাসী শ্রমিকদের আবাসস্থলে।
ব্রুকলিঞ্জ ষ্টিলনেস ষ্টিল কোম্পানির CEO কবির হোসেন ও তার সহধর্মিণী দেশ ও দেশের বাইরে সিঙ্গাপুরের সকল প্রবাসীকে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এবং সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। তিনি এও বলেছেন যে কোনো দুর্যোগে সিঙ্গাপুর প্রবাসী সহ বাংলাদেশের মানুষের সাথে, সার্বিক সহযোগিতায় সব সময় আছেন থাকবেন ইনশাআল্লাহ।
২০১১ সাল থেকে সিঙ্গাপুরে কাজের সুবাদে তার সাথে পরিচয়। মহৎ হৃদয়ের একজন মানুষ ,অত্যন্ত বিনয় বুদ্ধিমান শিক্ষায় তিনি একজন প্রকৌশলী। প্রতি নিয়ত আমার সহ পরিচিত জনদের কাজের খোঁজ খবর রাখেন। কর্মহীনদের কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য সাহায্য করে থাকেন। আমি কবির হোসাইন,মিসেম নুরিয়া কবির ও তাদের বুকলিন্জ কোম্পানির শুভকামনা করছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০২০ সকাল ৯:০০