somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যদি ইচ্ছে করে আবার এসো

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




যদি ইচ্ছে করে আবার কাছে এসো। কাশবনে বসে হাতে হাত রেখে গল্প করো মনভরে। ফের যদি মন চায়,...। আরেকটি সিদ্ধান্তের চোরাবালিতে যদি ঢিসমিস হয়ে যায় সব, কষ্ট পাবো না। হাসি মুখে মেনে নিতে শিখে গেছি। প্রকৃতি জুড়ে বসন্ত বার বার আসবে। দাঁত বের করে কামড়ে খেতে চাওয়া শীতও আসবে নিয়ম করে প্রতিবছর। আমাবশ্যা মেঘ, রোদ্দুর বৃষ্টি এগুলো চাইলেই থামিয়ে দেয়া যাবে না।

যদি হাসতে ইচ্ছে করে গাল ভরে, আট্টলিকায় যদি যাও ক্লান্ত হয়ে, তবে দক্ষিণের মাঠে পলাশ গাছ তলে ঢু মেরো। ফাগুনের বাতাসে মেখে নিও সারা গায়। হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়ো গায়, লতাপাতার মতো জড়িয়ে ধরো, যেমন ধরতে ওইসব দিনগুলিতে।

কিন্তু অন্যসব মেয়েদের মতো তুমিও হয়ত মোটাদাগের কিছু নিয়মের আড়ালে লুকিয়ে ফেলবে নিজেকে; বা লুকিয়ে যাবে।

ভেতরের আত্মাটা তীব্র ছটফট করলেও শরীরটা নীরবই দেখা যায়। বাড়ির লোকজন তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বলবে, বউমা বেশ শান্ত। অফিসে বসে স্বামীটা হয়ত সারাদিন কলিগ নামক বন্ধুটার কাছে তোমার কোমলতার বর্ণনা দিতে দিতে কানের পোঁকা মেরে ফেলবে। অথবা যান্ত্রিক ওই জীবনে এসব লুতুপুতুর সময় কোথায়!!!

ধীরে ধীরে চারপাশটা বদলে যাচ্ছে। আশপাশের মানুষগুলো বড় বড় ইমারত তৈরি করছে। শার্ট টাই পরে ল্যাদা মিয়া বড় ভদ্দরলোক হয়ে গেছে। দিন দিন সবই বদলেছে। আমি বদলাতে পারিনি সিকি আনাও। অসলতা অবহেলায় কেটে গেছে অনেক সময়। জীবনের প্রতি নির্লিপ্ত ভাব এখনও কাটেনি। মানুষ দেখলে বলে উদাসীন অন্য এক জগতের মানুষ। সম্ভাবনার কোন হাতছানি নেই। চেনা মানুষ দেখলেই আমাকে একটা প্রশ্ন ছুড়ে দেয়- কী করবি জীবনে?

একটা কষ্টের কথা বলি

আগের দিন স্বপ্নের মধ্যে আম্মু আব্বু একসঙ্গে এলেন। শিওরে বসে বাবা মাথায় হাত রেখে বললেন, বাবা! তুই কি ভালো হবি না কোনদিন। মানুষের জীবনে এমন অনেক দুঃখ কষ্ট থাকে। তাই বলে কি বসে থাকবি। পুরুষ মানুষ কি বসে থাকতে পারে! তোর সঙ্গে যারা ছিল সবাই কতোকিছু করছে। তুই এভাবে পড়ে আছিস। তোর সেই উদ্যমতা কোথায় হারিয়ে গেল বাবা!

আম্মা আমার ঘরটা সুন্দর করে ঘুছিয়ে দিচ্ছিলেন। মেঝেটা নোংরা হয়ে আছে। বাবার দিক থেকে আমি মুখ ফিরিয়ে নিয়ে কাঁথা মুড়ি দিলাম। বড্ড ঘুম পাচ্ছে। এসব কথা শুনতে ভালো করছে না। জগতের কিছুই ভালো লাগছে না। বললাম- বাবা আজ বরং তোমরা যাও। বাবা মুখ অন্ধকার করলেন।

আম্মুকেও বললাম- আর মা তুমি সবসময় এসে আমার রুম গুছিয়ে দাও কেন? আমি কি এখনও ছোট আছি। আমি সব করতে পারি। নিজের ভালো মন্দও বুঝি। কি করতে হবে, না হবে তাও বুঝি। মা মুখ কালো করলেন। দরজাটা ভেজিয়ে দিয়ে চলে গেলেন দুজনে।

ওইদিনই শেষবার আম্মু আব্বুকে দেখেছি। এরপর কখনও আর উনারা আসেননি। আমি অনেকদিন দুপুরে শুধু এজন্য ঘুমাই যদি উনারা একটা বার আসেন, মাফ চেয়ে নেবো। বাবার কবরের পাশে দাঁড়াতে এখন লজ্জা হয়। চারিদিকটা যেন আগের তুলনায় বিষণ্ন হয়েছে। কেমন যেন ভুতুড়ে পরিবেশ।

সময় গড়িয়েছে। নতুন নতুন বসন্ত এসেছে।

সবকিছু ঠিক হয়ে গেছে আজ। আমি আর হিমির জন্য বসে থাকি না পুকুরঘাটে। তার হাতে হাত রাখার ইচ্ছেও মরে গেছে। খাচ্ছি দাচ্ছি ঘুমাচ্ছি, বেশ কেটে যাচ্ছে দিন।

শয়তান বলে যে মেয়েটি আমায় গালি দিয়েছিল সে দুদিন আগে ইনিয়েবিনিয়ে ভালোবাসার কথা বলতে চাইল। বেশ খুশি হয়েছিলাম কিন্তু হ্যা বলতে পারিনি। আমার আটপৌরে জীবনের সঙ্গে আর কাউকে জড়াতে চাই না। এখন নিঃসঙ্গতা খুবই ভালো লাগে।

#হাবিজাবি
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মহাকাশের দূত ও সৌর শক্তির ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:২০


মহাকাশের দূত ও সৌর শক্তির ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি
সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী সৃষ্টি প্রফেসর শঙ্কু — তাঁর নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিজ্ঞানের আশ্চর্য সব আবিষ্কার, একেকটি কল্পনার জগৎ, আর রহস্যে ঘেরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিশুদের গুড টাচ ব্যাড টাচ শেখানো আপনার দায়িত্ব

লিখেছেন অপলক , ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৩৪

বর্তমানে বাংলাদেশে একক পরিবার বেশি। আগের যুগে যৌথ পরিবারে শিশুরা বয়োজৈষ্ঠ্যদের কাছে অনেক কিছু শিখত, নিরাপত্তা পেত। এখন সে সুযোগ অনেকটাই কম। কিন্তু পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, ৫ বছরের শিশুও... ...বাকিটুকু পড়ুন

সুন্নী না হয়ে জান্নাতি হওয়ার কোন সুযোগ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৬:৫৯



সূরাঃ ১৭ বনি ইসরাঈল, ৭৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭৭। আমার রাসূলদের মধ্যে তোমার পূর্বে আমি যাদেরকে পাঠিয়ে ছিলাম তাদের ক্ষেত্রেও সুন্নাত (নিয়ম) এরূপ ছিল। আর তুমি আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলার প্রথম নারী কবি চন্দ্রাবতী...

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:০৪

বাংলার প্রথম নারী কবি চন্দ্রাবতী...

ময়মনসিংহ গীতিকা প্রকৃতপক্ষে একক কোনো কাহিনী নির্ভর বই না। 'ময়মনসিংহ গীতিকা' হচ্ছে কবিতা বা গানের সংকলন, যা বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষের মুখেমুখে প্রাচীন কাল থেকে ভিন্নভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাটারি অটো রিক্সা বন্ধ করা কী খুব কঠিন কাজ?

লিখেছেন চোরাবালি-, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৪৮



বাংলাদেশের জন্য বিষফোঁড় হল এখন অটো রিক্সা, স্বল্প পরিশ্রমে সহজ আয়ের মাধ্যম হিসাবে খুবই জনপ্রিয় একটা পেশা। স্বল্প ভাড়ার জন্য অনেক মানুষ এখন পায়ে হাঁটা ভুলেই গেছে আর হাঁটার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×