হারিয়ে যাওয়ার পর যদি মূল্য পাওয়া যায় তাহলে হারিয়ে যাওয়াই ভালো। ভালোবাসার মানুষটির কাছে নিজেকে মূল্যহীন করে রাখলে মূল্য কমে না। যে ভালোবাসে না সে এই অমূল্যের কারণে হয়ত কেটে পড়ে। ভুল পথে না হাঁটাই ভলো। আমরা একসঙ্গে সব পেতে চাই। জীবনের শুরুতে যদি সব স্বপ্ন পুরণ হয় তাহলে সমস্যা কোথায়! যদি গন্তব্যের চেয়ে যাত্রাপথ উত্তম হয় তাহলে আজীবন স্বপ্ন দেখে যাওয়াই ভালো। সাদার চেয়ে কিছু কিছু কালো ভালো আর আলোর চেয়ে কিছু অন্ধকার।
জীবনের জন্য যতো আলো প্রয়োজন ঠিক ততটাই প্রয়োজন অন্ধকারের। অন্ধকার কেটে গিয়ে আলো আসলে সেই আলো যদি স্থায়ী না হয় তাহলেও ভয় নেই। দুটোর সমন্বয়েই পূর্ণতা। প্রতিকূলতা আসলেই যে কাউকে দূরে ঠেলে দিতে হবে এটা কোনও কথা নয়। কোন ব্যক্তির জীবনে প্রতিকূলতা নেই। সবার জীবনেই প্রতিকূলতা আছে, আছে অনেক সীমাবদ্ধতা। হয়ত কারও জীবনে বেশি আর কারও জীবনে কম। ধনী বা গরীব কষ্ট সবার জীবনেই আছে, হয়ত তার ধরনটা ভিন্ন। সুখ আছে সবখানে।
কিছু মানুষ অপেক্ষা করাতে পছন্দ করে। তারা নিজের গুরুত্ব আর অস্তিত্ব টের পেতে চায়। প্রাপ্তির লোভই সবচেয়ে কষ্ট দেয়। দিন যতো গড়ায় লোভ ততই বাড়ে। মানব থেকে মহামানব কেউই তার মনকে বেঁধে রাখতে পারেননি। সৃষ্টিকুলের সেরা মানবও না। তিনি আল্লাহর কাছে আয়েশা রা.কে বেশি ভালোবাসার জন্য মাফ চেয়েছিলেন। কারণ এতে সমতা বজায় থাকেনি। কারও জন্য ভুলে যাওয়া খুব সহজ হলেও কোমল হৃদয়ের মানুষগুলো কিছু ভুলতে পারে না। দুঃখগুলো আজীবন তাদের তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। সুখে থাকার অভিনয় করে পৃথিবীর কতশত মানুষ বেঁচে আছে তার গবেষণা হলে খুব ভালো হতো। সামাজিক মানুষগুলোই বেশি অভিনয় করেন সুখে থাকার।
কেউ কেউ আবার দুঃখ বিলাস করতে ভালোবাসেন। ঠাকুর হাজার লুচ্চামি করার পর বলেছিলেন ‘দুঃখরে ভালোবাসিলাম’। হু এটাই সত্যি। প্রশান্তি একমাত্র আল্লাহর তায়ালার হাতে। ধন সম্পদ গাড়ি বাড়ি নারী কোথাও তিনি প্রশান্তি রাখেননি। একজন রিকশাঅলার ঘরেও প্রাসাদের সুখ শান্তি থাকতে পারে বা আছে। আবার অনেক প্রাসাদেও অশান্তির আগুন জ্বলছে। আমরা সাদা চোখে যা দেখি সেটি সত্য নয়। সত্য লুকিয়ে থাকে আড়ালে। সত্য খুঁজে বের করতে হয়। সত্যটা সবসময় বীভৎস হয়। যাদের আমরা অভিভাবক ভাবছি তারা কি সত্যি আমাদের অভিভাবক? তারা রক্ষক নাকি ভক্ষক। তারা কি শুধুই দায়িত্ব পালন করছেন নাকি ভালোও বাসছেন। তাদের সব চিন্তা-ভাবনা কি সঠিক। মানুষ বড়ই স্বর্থপর। নিজের ভুল আর দোষের বোঝা সে অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়। দিতে ভালোবাসে।
অনেক সময় ভাগ্যের ওপর ভুল বা দোষের বোঝা চাপিয়ে জুলুম করে সবথেকে বেশি মানুষ। হ্যা, এটি অবশ্যই জুলুম। একশবার জুলুম। মানুষ স্বর্থপর হবে এটা কিন্তু দোষের নয়। সৃষ্টিগতভাবেই আমরা সবাই স্বার্থপর। কেউ বেশি কেউ কম। কিন্তু নিজের স্বর্থ হাসিল করতে গিয়ে যদি অন্যকে ক্ষতির মুখে ফেলা হয় সেটি নিশ্চয়ই ভালো নয়। খুবই খারাপ। ‘মায়া’ জিনিসটা বড়ই পীড়াদায়ক। যার যতো বেশি মায়া সে তত বেশি দুখি।
তবে মায়া কাজ করে বলে যারা লুচ্চামি করেন তারা কিন্তু ভালো মানুষ নয়। বাড়ির বোয়ার সঙ্গে বা অফিসের আয়ার সঙ্গেও মানুষ খারাপ কাজ করে। ঘরে সুন্দরী বউ থাকতেও করে। অসৎ কর্ম সাধন করার পর তাকে সাহায্য করা মানুষটি সবার শ্রদ্ধার পাত্র। ভালোবাসার নামে প্রতারণা করা অনেক বড় পাপ। মিথ্যে আশা দেয়ার থেকে কষ্ট পেলেও সত্যটা বলে দেয়া ভালো। যেটা পারবে না সেটা বলাও ভয়াবহ অপরাধ। জেনেশুনেও কতো অপরাধে জর্জরিত হয় মানুষ। তবু অনুতাপ নেই। যাদের ঘাড়ে পা রেখে ওপরে উঠছেন কখনও কখনও তাদের ওপরও একটু ইহসান করবেন। একজন ভিখারী হাত পেতে কতটাকা চায়? পাঁচ কিবা দশ টাকা। এসব মানুষদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ফিরিয়ে দিবেন না কখনও।
আঁকিবুকি
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৩