ঈশপের গল্প অনেক শুনেছেন এবার শুনুন ঈশানের গল্প।
সাপ এবং ব্যাঙ
এক দেশে ছিলো এক সাপ।
একদিন এক ব্যাঙের সাথে তার দেখা হলো।
ব্যাঙের আচার আচরণে মুগ্ধ হয়ে সাপ তাকে বন্ধু হবার প্রস্তাব দিলো।
ব্যাঙ কিছুতেই রাজী হয়না।ব্যাঙ বললো, দেখো সাপ তোমাদের সাথে আমাদের
জাতিগত বিদ্বেষ আছে।যদিও তুমি আপাতঃদৃষ্টিতে ভালো এবং সৎ, তবুও তুমি তো সাপ্।
আমি কি করে তোমাকে বিশ্বাস করি?
সাপ ছিলো খুব চালাক আর বাকপটু।
সে ব্যাঙকে মোটিভেট করতে অনেক ভাবে চেষ্টা চালিয়ে গেলো।
সে বোঝালো, আমাদের বন্ধুত্ব হলে দুনিয়া আখেরাতে ফায়দা হবে।
দুনিয়াতে কেউ তোমাকে হামলা করলে, আমি প্রটেকশন দিবো।
আখেরাতে আল্লাহ অনেক খুশি হবেন।দুই বিপরীত মতাদর্শের প্রাণী মিলেমিশে আছে,
এটা দেখে আল্লাহ আমাদের মাফ করে দিবেন।তিনি বান্দাদের মধ্যে হানাহানি নয়,
মিল মহব্বত দেখতে চান।আখেরাতের কথা শুনে ব্যাঙ একটু নরম হইলো।
তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হইলো।দুইজন মিলেমিশে জংগলে ঘোরাঘুরি করতে লাগলো।
তারপর একদিন... ... ...
ব্যাঙ বললো, দোস্ত তোমার সবকিছুই আমার পছন্দ,
শুধু একটা ব্যাপার- তুমি আঁকাবাঁকা হয়ে চলো কেনো? সোজা হয়ে চলতে পারোনা?
সাপ ভাবলো, আমার জাতীয় বৈশিষ্ট্যর উপর আঘাত। আমার চৌদ্দ গোষ্টী আঁকাবাঁকা হয়ে চলে আর এই ব্যাঙ বলে কি?
সাথে সাথে সে ফোঁস করে উঠলো, তবেরে ব্যাঙ
আইজ তোরে খাইছি। ব্যাঙ দেখলো, মহাবিপদ। সে লাফ দিয়ে পালালো। আগে আগে ব্যাঙ লাফিয়ে লাফিয়ে ভাগতেছে আর পিছে পিছে আঁকাবাঁকা হয়ে সাপ ধাওয়া করতেছে।
পথে পড়লো এক খাল। খালের কিনারে গিয়ে ব্যাঙ ক্যাঁক করে আওয়াজ করে লাফ দিয়ে ঐপারে চলে গেলো।খালের পারে মাঠে পোলাপাইন খেলতেছিলো। ব্যাঙের আওয়াজ শুনে তারা দেখলো, একটা সাপ ব্যাঙটাকে ধাওয়া দিতেছে। তারা একটা লাঠি নিয়ে এসে, পিটিয়ে সাপটাকে মেরে ফেললো।তারপর সাপটাকে লম্বা করে মাঠে শুইয়ে রাখলো।
পোলাপাইন চলে যাবার পর, ব্যাঙ সাপের কাছে আসলো।
বললো- দোস্ত সেই তো সোজা হইলা, মরার পরে সোজা হইলা আর কি।
নীতিকথাঃ
১- জোট করার আগে জেনে নিন, যতোই ভালো মানুষ সাজুক না কেনো, কেউ তার আসল বৈশিষ্ট্য ছাড়তে পারেনা।
নীতিকথাঃ ২- সময় থাকতে সোজা হয়ে যান, নাহলে জনগণই পিটিয়ে লম্বা করে দেবে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৪৮