(গল্পের আগে কিছু বকবক করে নেই ৷ অনেকদিন লেখালেখিতে ছিলামনা নতুন বিবাহিত জীবনে একটু সময় দিচ্ছিলাম আর কি ৷ সবাই আমার নতুন জীবনের জন্য দোয়া করবেন আশা রাখি ৷ এটা একটা সিরিজ গল্প লেখার প্রচেস্টা আমার, তাই দ্বিতীয় সিরিজ পড়লে অনেক কিছুই অনেকে বুঝবেননা ৷ পিশাচ সংসারের প্রথম সিরিজটা পড়ে নিবেন সবাই তারপর এটা পড়বেন প্রথম সিরিজের লিংক দিয়ে দিচ্ছি ৷ আর ভুলগুলো অবশ্যই ধরিয়ে দেবেন ৷ পাশে থাকবেন)
পিশাচ সংসার প্রথম সিরিজ লিংকঃ Click This Link
"আজ আমার জীবনের সব চেয়ে আনন্দের দিন ৷ আজ আমার বড় ছেলে আর ছোট মেয়ে দুজনেরই বিয়ে হচ্ছে একই দিনে ৷ ভাই বোনে মিলেই আমাকে বলেছিলো আম্মু আমরা একই দিনে বিয়ে করবো ৷ আমিও আপত্তি করিনি ৷
আমার বড় ছেলে শাফিন ৷ আর ছোট মেয়ে শিরিন ৷
অবশ্য খারাপও লাগছে শিরিন চলে যাবে পরের বাড়ী ৷ আবার ভালো লাগছে শাফিনের বউ আসবে ও তো আমার আরেক মেয়ে ৷"
এতটুকুই লিখলাম আজ আমার সবচেয়ে কাছের লাল ডায়েরীতে ৷
এখানেই আমার নিঃশ্বাষটাও বেঁধে গেছে ৷ কারণ আমার জীবনের সব কিছু আমি কোথাও শেয়ার করতে না পারলেও এই লাল মলাটের ভেতরের পাতা গুলোয় শেয়ার করতে পারি ৷
-- নাদিয়া!
-- জ্বী চাচী ৷
-- কি হলো এসো? তোমার ছেলেমেয়ের জোড়া বিয়ে আর তুমি ঘরে বসে কি করছো?
-- না আসলে চাচী...
-- হ্যাঁ হয়েছে এসো এসো ৷ শাফিনের বরযাত্রী বের হবে এখনি ৷
-- হ্যাঁ চলুন ৷
বাহ আমার ছেলে মেয়েদের একদম রাজকন্যা আর রাজপুত্রের মতন লাগছে ৷ শাফিনের বরযাত্রী গেলো; একটু পর আরেক বর যাত্রী আসবে আমার শিরিনটাকে নিতে ভাবতেই কান্না পেয়ে যাচ্ছে ৷
শাকিলের অনুপস্থিতিতে আমার ছেলেমেয়েরাই আমার সব তার মধ্যে একজন পর হয়ে যাবে ৷ কিন্তু কি করা এটাই তো নিয়ম ৷
আমার ইচ্ছা ছিলো শিরিনকে আরো পরে বিয়ে দেবো কারণ, একমাস হলো ওর ১৮ বছর হয়েছে সবে ইন্টার পাশ করলো ৷
কিন্তু ওই যে ভাই বোনের শখ একই দিনে বিয়ের ৷ ছোটবেলা থেকেই ওরা আমার বাধ্য ছেলেমেয়ে মুখফুটে একটা ইচ্ছের কথা বলেছে আমি না করি কি করে?
-- ভাবী ৷
-- হ্যাঁ মৌলী বলো ৷
-- শিরিন ডাকছে ৷
-- হ্যাঁ যাচ্ছি ৷
বেখেয়ালভাবে ঘুরতে গিয়ে সামনে রাখা মাটির কলস টা ভেঙ্গে গেলো ৷ ইশ্ শুভ দিনে কি হলো এটা?
-- ভাবী তুমিও না ৷ এসব কেউ মানে?
-- আমি মানি মৌলী ৷
-- আরেহ কিছুই হবেনা চলুন ৷
-- না ৷ তুমি শিরিনকে বলো আমি পরে আসছি এখন যাবোনা ৷ কে যানে কেন বাধা পরলো ৷ আমি শাফিনকে একটা ফোন করে আসি ও ঠিকঠাক পৌছালো কি না ৷ মনের ভেতর খুতখুত করেছে
-- ভাবী সত্যিই তুমি পারো,৷ আচ্ছা আমি যাচ্ছি ৷
নাহ মন মানছেনা ৷ শাফিনরা নাকি জ্যামে আটকা পড়েছে ৷ আজ এভাবে বাধা পরে গেলো খুব অশান্তি লাগছে ৷
শিরিনের বর যাত্রী এসে গেছে এদিকে শাফিনরা নাকি এখনো জ্যামে ৷ কি যে অবস্থা! !
যাই বিয়ে শুরু হলে শিরিনের সাথে আর কথা বলতে পারবোনা ৷ তখন তো যাওয়া হলোনা ৷
-- মামনী ৷
-- আম্মু কখন ডেকেছি তোমাকে ৷ কই ছিলা??
-- সরী রে মা কাজে আটকে পড়েছিলাম ৷
-- কাজ না কুসংস্কার আম্মু?
-- আরে বাদ দে তো মা ৷
-- আম্মু তুমি তো পুরোনো দিনের মানসিকতার মানুষ না ৷ এখনকার মতো ৷ আর তোমার সব কিছুই ঠিক কিন্তু কিছু কিছু ব্যাপার তুমি পুরোনো দিনের মানুষদের মতো বিশ্বাষ করো ৷ ফুপী বলল কলস নাকি ভেঙ্গেছে তাই তুমি টেনশানে পরে গেছো ৷ এসব কি ঠিক আম্মু?
-- আচ্ছা বাবা সরী সরী ৷ হয়েছে ? চলে যাওয়ার আগে বুঝি ঝগড়া করবি??
-- না আম্মু ৷ ভাইয়া পৌছে গেছে?
-- না রে জ্যামে পরেছে ৷ পৌছে যাবে চিন্তা করিস না ৷
-- আম্মু দেখো নতুন কেউ আসছে যদিও নিধি আপুকে আমি আগে থেকেই চিনি আমার ভালোই লাগে কিন্তু তবুও তুমি একদম তোমার মতো থাকবে এটা তোমার বাড়ী ৷ আমি থাকবোনা সো দেখতেও পারবোনা কিন্তু তুমি কোন প্রবলেম মনে হলে আমার কাছে চলে যাবে ৷
-- মেয়েটা আমার সত্যি বড় হয়ে গেছে ৷ আমাকে বোঝাচ্ছে পাগলী টা আমার কোন সমস্যা হবে না রে ৷
যাক বিয়ে মিটে গেলো মেয়েটা চলে গেলো বুকের কলিজাটা মনে হয় কেউ খুলে নিয়ে গেলো এতো খারাপ লাগছে ৷ যাবার আগে ফয়সালকে শুধু একটা কথাই বলতে পেরেছিলাম ৷
" বাবা আমার মেয়েকে শুধু ভালোবেসো"
আর কিছু বলতে পারিনি বুক ফেটে কান্না আসছিলো ৷
মৌলী এসে বলে গেলো শাফিনরা তখনো পৌছায়নি ৷ একটা বিয়ে কমপ্লিট হয়ে গেলো আর শাফিন রা পৌছাতেই পারলোনা? ফোন করলাম শাফিনকে;
-- বাবা কি ব্যাপার? এখনো যাস নি?
-- আম্মু কি আর বলবো মাত্র পৌছলাম সাত ঘন্টা লাগলো এক ঘন্টার রাস্তা ৷
বুকের ভেতরটা হঠাৎ কেঁপে উঠলো ৷ এই সময় বিভ্রাট তো আরো একবার ঘটেছিলো ৷ সাত ঘন্টা জ্যাম কিন্তু এক ঘন্টার রাস্তা ৷ হায় খোদা এটা আবার কেনো রিপিট হলো? এটা কি শুধুই কাকতালীয়?
নাকি আবারো সেই অভিশপ্ত ইঙ্গীত???
চলবে....
পরের পর্বের লিংকঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৩২