somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মালেয়শিয়া ভ্রমন, কিছু অজানা কথা।

১৬ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্যাস্ত জীবনের হাজার কাজের ভীরে মন যখন একটু প্রশান্তির খুজে হারিয়ে যেতে চায় তখন আমরা দুর দুরান্তে হারিয়ে যেতে চাই, কেউ দেশে কেউ বিদেশে। আমি খুব ভ্রমনপ্রিয় মানুষ, জীবনের তাগিদ কিংবা মনের খোরাক আমাকে বার বার দেশ থেকে দেশান্তরে টেনে নিয়ে গেছে। ২০১৩ সালের জানুয়ারীর ২০ তারিখ আমি প্রথম মালেয়শিয়া ভ্রমনে আসি। উদ্দেশ্য দেশ দেখা আর পাশা পাশি কিছুটা ব্যাবসায়িক আলোচনা, বাজারজাতকরন যাচাই বাছাইকরণ। তখন জানতাম না এই দেশ আমাদের দেশের মত ধান্দাবাজ লোকের আরেক অভয় অরাণ্য।
আমি সবে মাত্র ইমিগ্রেশন পার করে ট্রেন এর টিকিট কাউন্টার খুজতে বেড়িয়েছি কুয়ালা লামপুর যাবার জন্য ( কুয়ালা লামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট কুয়ালা লামপুর মেইন শহর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত ) কিছুক্ষন পর লক্ষ করলাম আমাকে এক জন কালো পোশাক পরা ভদ্রলোক কাছে ডাকছেন, আমি ভাবলাম ইমিগ্রেশন অফিসার কেননা মালায়শিয়া ইমিগ্রেশন পুলিশ কালো পোষাক পরে। আর আমাদের দেশের কিছু আসাধু দালাল চক্রের অবদানে আমাদের দেশী যেই কাউকে এই দেশের ইমিগ্রেশন অফিসাররা এয়ারপোর্টের যেখানে সেখানে আটক করে নানান প্রশ্ন করে থাকেন, তাই বাধ্য হয়ে আমি ঐ ভদ্রলোকের কথায় সায় দিলাম।
ওনি আমার কাছে এসে একটা পরিচয় পত্র দেখিয়ে বললেন যে তিনি ইমিগ্রেশন অফিসার, মালয়শিয়ার এই জাতিয় পরিচয় পত্র মালায় ভাষায় তাই কিছু বুঝার উপায় ছিল না, তিনি আমার পাসপোর্ট দেখতে চাইলেন, দেখালাম। তারপর জানতে চাইলেন কোথায় যাব, বললাম কুয়ালা লামপুর যাব, তখন তিনি আমাকে বললেন আমার হোটেল বুকিং আছে কিনা, বললাম আছে, তখন তিনি ঐ হোটেলে কল দিলেন এবং দেখলেন আমার অরিজিনালি বুকিং আছে, তখন জানতে চাইলেন আমার কাছে কত ইউ এস ডলার আছে, আমি সরল মনে বলে দিলাম ২,২০০ ইউ, এস ডলার আর ৩০০ মালায় রিংগিত আছে।
তারপর তিনি বললেন তিনি আমাকে কুয়ালা লামপুর নিয়ে যাবেন তার জন্য আমাকে ১০০ রিঙ্গিত দিতে হবে, আমি বললাম যে আমি একা যেতে পারব কিন্ত তিনি নাছুরবান্দা আমাকে দিয়ে আসবেন, তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে তার সঙ্গে রওনা দিলাম, তিনি আমাকে যথা সময়ে আমার হোটেলের সামনে নামিয়ে দিলেন। ঐ দিনের জন্য আমি বেঁচে গেছি কেননা আমার ড্রাইবার ভাল ছিলেন, বলা হয় নাই তিনি ইমিগ্রেশন অফিসার ছিলেন না, তিনি ছিলেন লিমোজিন কোম্পানির টেক্সি ড্রাইভার। পরে জানতে পারি এই সব ড্রাইভার এয়ারপোর্টে ফাঁদ পেতে বসে থাকে যারা মাঝ রাস্তায় আপনাকে ছিনতাই করে সব কিছু কেড়ে নিয়ে মাঝপথে ফেলে চলে যাবে। যাইহোক ঐ যাত্রায় আমি বেঁচে গেছি। তাই যেকোন বাংলাদেশী মালেয়শিয়া প্রথম আসবেন দয়া করে এয়ারপোর্টের টেক্সি এড়িয়ে যাবেন। আর দ্বিতীয়ত এড়িয়ে চলবেন পুলিশ, বিশেষত রাতের বেলায় মালেয়শিয়ান পুলিশরাও ফাঁদ পেতে বসে থাকে রিংগিত কামানোর কালো জাল বুনে। কেননা ওরা বেশিরভাগই পোশাকধারী ছিনতাইকারী, বাকে পেলে সব কাগজ পত্র থাকার পরও আপনার পকেট কাটতে চাইবে। তাই মালেয়শিয়া ভ্রমণে সতর্ক থাকুন সব সময়।
থাকার জন্য কুয়ালা লামপুর বুকিত বিনতাং এরিয়াতে বাজেট হোটেল থেকে শুরু করে পাঁচ তারকা হোটেল পাবেন, যেখান থেকে শহরের সব চেয়ে আকর্ষণীয় পেট্রনাস টুইন টাওয়ার মাত্র ১০ মিনিটের হন্টন দূরত্ব। কেনাকাটার জন্য প্যাভিলিয়ন শপিং মল বিখ্যাত, আর ইলেক্ট্রনিক্স পন্য কেনা কাটার জন্য ল’ইয়েত প্লাজা বিখ্যাত। কম দামে কেনা কাটার জন্য চলে যেতে পারেন চাইনা টাঊন পেতালিং স্ট্রিট, তবে দরদাম করবেন সাবধানে, কেননা এই মার্কেট অনেকটা আমাদের দেশের বঙ্গ বাজার টাইপের।
কুয়ালা লামপুরের কাছাকাছি আছে পোর্ট ডিকছন সমুদ্র সৈকত, পাহারে ঘেরা গেন্টিং হাইল্যান্ড, আর হাতে যদি সময় বেশি থাকে চলে যেতে পারেন লাংকাভি আইল্যান্ড, পারহাটিয়ান আইল্যান্ড, বাতুফিংগি পেনাং। মালেয়শিয়া খাবার খুব সস্তা, খুব সহজেই মিলবে বাংলাদেশী মালিকানাধীন রেস্তোরা, তাছারা ইন্ডিয়ান রেস্তোরা পাবেন এখানে সেখানে খুব সহজে। ভাষা জটিলতায় খুব বেশি পরতে হবে না কেননা এইখানে কম বেশি সবাই ইংরেজি ব্যাবহার করে। শুধু একটু সাবধানে থাকবেন ইন্ডিয়ান তামিল টেক্সি ড্রাইভার থেকে আর মধ্যরাতের পুলিশ থেকে। আশা করি উপভোগ করবেন চির সবুজ মালেয়শিয়া।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:৪৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দেশনায়ক তারেক রহমানকে সম্পৃক্ত করার নেপথ্যে  

লিখেছেন এম টি উল্লাহ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৮


আগেই বলেছি ওয়ান ইলেভেনের সরকার এবং আওয়ামীলীগের যবনায় জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে পৌনে একশ মামলা হলেও মূলত অভিযোগ দুইটি। প্রথমত, ওই সময়ে এই প্রজন্মের নিকট উপস্থাপন করা হয়েছিল দেশনায়ক তারেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পকে নিয়ে ব্লগারদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



**** এডমিন টিমের ব্লগারেরা আমাকে বরাবরের মতোই টার্গেট করে চলেছে, এভাবেই সামু চলবে। ****

ট্রাম্পের বিজয়ে ইউরোপের লোকজন আমেরিকানদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী শংকিত; ট্রাম্প কিভাবে আচরণ করবে ইউরোপিয়ানরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পের বিজয়, বিশ্ব রাজনীতি এবং বাংলাদেশ প্রসংগ

লিখেছেন সরলপাঠ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২১

ট্রাম্পের বিজয়ে বাংলাদেশে বা দেশের বাহিরে যে সব বাংলাদশীরা উল্লাস করছেন বা কমলার হেরে যাওয়াতে যারা মিম বানাচ্ছেন, তারাই বিগত দিনের বাংলাদেশের ফ্যাসিস্টের সহযোগী। তারা আশায় আছেন ট্রাম্প তাদের ফ্যাসিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠেলার নাম বাবাজী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩১

এক গ্রামীণ কৃষক জমিদার বাড়িতে খাজনা দিতে যাবে। লোকটি ছিলো ঠোটকাটা যখন তখন বেফাস কথা বা অপ্রিয় বাক্য উচ্চারণ করে ক্যাচাল বাধিয়ে ফেলতে সে ছিলো মহাউস্তাদ। এ জন্য তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×