তখন ষষ্ঠ শ্রেনিতে পড়ি। আমি বরাবরই আনমনা উড়োল চণ্ডি টাইপের। মেঘলার সাথে নিত্য খুনশুটির কারণে আমি কখনোই বন্ধু শব্দটির মূল্যায়ন করেনি। ক্লাস শুরু করতো ভেংচির ফুলঝুরি দিয়ে। আমার ভিষন অসহ্য লাগতো ওকে। গনিত ক্লাস। মাস্টার মহাশয়ের বীজ গণিতের অমিয় ত্রিপিটক গলাধঃ করণের অপচেষ্টা অব্যাহত। হঠাৎ আমার খেয়ালিপনা লক্ষ করে (a+b)^2 এর সূত্র জিজ্ঞাসা করে বসলেন। আমি দাঁড়িয়ে হতচকিত! কয়েক সেকেণ্ড উত্তর খোঁজার ব্যর্থ চেষ্টা করে মাথা নিচু করতেই দেখি মেঘলা একটা চিরকুট, হাত পিছনে দিয়ে ধরে আছে। আমি উত্তর দিতে পেরেছিলাম কিন্তু মেঘলাকে হাতের উপর দশটি বেতের প্রহার গপ গপ গিলে ফেলতে হয়েছিল। মেঘলার জন্য খুব খারাপ লেগেছিল সেই দিন। ক্লাস শেষে মেঘলার সাথে দেখা করি। ক্রন্দন রত মেঘলার প্রহার প্রাপ্ত হাতটি আমার হাতে নিয়ে অপলোক দৃষ্টিতে দেখতে থাকি--মনের অজানেতই তার হাতে চুমু এঁকে দেই-- অনুগ্রহের স্বরে তার কাছে ক্ষমা চাই---সে মৃদু হেসে বলেছিল-----ইটস ওকে! তার পর থেকে মেঘলা আমার খুব ভালো বন্ধু।
দুই মাস পরে মেঘলার বাবা মারা যায়। মেঘলাদের বাসাই শোকের মিছিল। মেঘলার মুখের দিকে বারবার তাকনোর চেষ্টা করছিলাম কিন্তু আহঃ ওর মলিন মুখ! যে একবার ওর মুখ খানি দেখেছে দ্বিতীয় বার দেখবার দুঃসাহস করনি নিশ্চিত। সিদ্ধান্ত হয় রাজশাহীতে জানাজা পড়িয়ে গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়াতে ২য় জানাজার পর কবরস্থ করা হবে। মেঘলারা চলে গেল! আর কখনো মেঘলার সাথে দেখা হয়নি। এখনো মনে মনে খুঁজি মেঘলাকে।
বিদ্রঃ গল্পটিকে অনু গল্প বলা যায় কি না?
গুনীজনদের মতা মত আশা করছি।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:২৪