গত বছর, এক সন্ধ্যেয় কল্লোল এসে বললো-
চল, তোকে নিয়ে একটু নিউমার্কেট যাবো।
সামনে ১৪ই ফেব্রুয়ারি। রিনির জন্য কিছু একটা কিনতেই হবে। তুই পছন্দ করে দিবি।
আমি একটু হেসে বললাম- দাড়া,
শার্টটা একটু বদলে নেই। শেষ মাসের বেতনটা এখনও পাওনা;
আসার পথে ছাত্রীর বাড়ি থেকে একটু ঘুরে আসা যাবে।
টেবিলের উপর পড়ে থাকা মানিব্যাগটা পকেটে পুরতে গিয়ে মনে হলো- দরকার নেই; বহুদিন ধরেই ওটা খালি পড়ে আছে।
দু’চারটা খুচরো পয়সা, টুকটাক রিকশার ভাড়া, এই তো!
বাড়িও যাওয়া হয় নি অনেকদিন; সারাদিন শুয়ে বসে থাকি- অথচ সেইদিন
ফোনে বললাম- কতো কাজ, কতো ছুতো!
এসব ভাবতে ভাবতে-
কখন যে এসে পড়েছি জনাকীর্ণ রাস্তাতে,
খেয়ালই নেই;
তারপর হাঁটতে হাঁটতে-
ঝলমলে নিউমার্কেট; শাড়ির দোকান।
দোকানদার বললো- পছন্দ করুন।
অনেকক্ষণ নাড়াচাড়া শেষে, কল্লোলের কথা ভুলে গেছি, চোখ আটকে গেলো ডান দেয়ালে;
আমি তখন ভাবছি-
এই শাড়িটাতে মা’কে খুব মানাবে।
হাতে নিলাম। "দাম কতো?" দোকানী বললো- "ষোল শো।"
জিজ্ঞাসা করার দরকার ছিলো না। তবু দরকার ছিলো। একদিন টাকা নিয়ে এসে কিনে নিয়ে যাবো। এই শাড়িটাতে মা’কে খুব মানাবে।
আমি বললাম- রাখুন।
তারপর একদিন,
এমন সময়, টাকা নিয়ে গেলাম সেই দোকানে। সামনে ১৪ই ফেব্রুয়ারি।
যেয়ে দেখি- সবই আছে। শুধু ওই শাড়িটা নেই।
রঙ ছিলো হালকা নীল।
ওটা আমি কোথায় পাবো?
আমি ভাবছি,
আকাশের একটা টুকরো কেটে মা’কে যদি পাঠানো যেতো।