ব্যাংক আমাদের কি কি কাজে লাগে?
আমারা আমাদের নগদ মুদ্রা ব্যাংকে জমা রাখি। যাতে ব্যাংকে আমাদের সঞ্চিত মুদ্রা নিরাপদে থাকে। বর্তমানে আধুনিক ব্যাংক আমাদের লেনদেন এর মাধ্যম হয়ে দায়িয়েছে। আমি আবার বলছি “লেনদেনের মাধ্যাম”। এটা বিনিময় এর মাধ্যম না। বর্তমানে বিনিময় এর মাধ্যম হচ্ছে মুদ্রা। এক এক দেশের মুদ্রার নাম, এক এক রকম। আমাদের দেশের মুদ্রার নাম টাকা। ব্রিটিশদের মুদ্রার নাম পাউন্ড। যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রার নাম ডলার। বিনিময় মাধ্যম হিসেবে মুদ্রা প্রচলন কবে থেকে শুরু হয়েছে? কিভাবে শুরু হয়েছে, সেগুলো আপনারা বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম থেকে জানতে পারবেন।
০১। ব্যাংকের প্রধান কাজ হচ্ছে আমাদের থেকে আমানত গ্রহন করা। কথাটি বই এর ভাষায় বললাম। ব্যাংকের আসল কাজ হচ্ছে আমাদের টাকা কে নিরাপত্তা দেয়া। আমাদের টাকা কে পাহারা দেয়া। মনে করেন, আমি ১০ লাখ টাকা কামিয়েছি। বাসায় রাখলে চুরি হতে পারে। ছিনতাই হতে পারে। তাই আমি এই টাকাটি ব্যাংকে রাখবো। আমার নামে একাউন্ট খুলে, সেই একাউন্ট নাম্বারে টাকা জমা রাখলাম। এই টাকাটাই ব্যাংকের কতৃপক্ষ নিরাপদে রাখবেন। এই সার্ভিস এর জন্য, বছর শেষে ব্যাংক কে একটি চার্জ দিতে হয়। ব্যাক্তিগত একাউন্ট হচ্ছে সঞ্চয়ী বা সেভিংস একাউন্ট। আর ব্যাবসায়িক কারনে, দোকানের নামে একাউন্ট টি হচ্ছে চলতি হিসাব বা কারেন্ট একাউন্ট।
চাহিবার মাত্রই আমি টাকা তুলতে পারবো। মন চাইলে ১০০ টাকাও তুলতে পারি। ১০ হাজার ও তুলতে পারি। সম্পন্ন ১০ লাখ ও তুলতে পারি। এটা আমার চাহিদা অনুযায়ী। তবে জমার অধিক তুলতে পারবো না। মনে করেন আমার একাউন্টে ৯ লাখ টাকা আছে। আমি ৯ লাখ ১ টাকা তুলতে পারবো না।
০২। ব্যাংকের মাধ্যমে আমি টাকা পাঠাতে পারি। মনে করেন আমি সোহেল রানা কে টাকা পাঠাবো। সেই ক্ষেত্রে ব্যাংক আমাকে সাহায্য করিবে। আমি সোহেল রানার ব্যাংক একাউন্ট এর বিবরণ নিবো। একাউন্ট নাম্বার, ব্যাংকের নাম ও শাখা। সব কিছু ঠিক থাকলে সোহেল রানা ২ মিনিটে টাকা পেয়ে যাবে। সোহেল রানার একাউন্ট যদি পূবালী ব্যাংকে হয় আর আমার ব্যাংক যদি সোনালী ব্যাংক হয় তাহলে আরটিজিএস এর মাধ্যমে সোহল রানা কে টাকা পাঠানো যাবে।
০৩। কাউকে চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করা যায়। মনে করেন আপনার কাছ থেকে কেউ ১০ লাখ টাকা পাবে। বাসায় চুরি হবার ভয়ে টাকা রাখেন না। আপনি তাকে চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করিতে পারেন। এতে করে প্রাপক চেকে থেকে নগদ উত্তোলন করতে পারেন। বা এই চেক নিজ একাউন্টে জমা রাখতে পারেন।
০৪। এটিএম এর মাধ্যমে ইমারজেন্সি টাকা উত্তোলন করা যায়। মনে করেন আপনার বাপ মা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এখন সন্ধ্যা বেলা। ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ। আপনি চাইলে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারবেন। আপনি কোন অভিজাত হোটেলে খেতে গেলেন। পস মেসিনের সিস্টেম থাকলে এটিএম এর মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করিতে পারেন। তাছাড়া অনলাইনে কেনাটাকা করতে এই এটিএম কার্ড বেশ সুবিধা প্রধান করেছে। বেশ কিছু দিন আগে দারাজে একটি পন্য অর্ডার দিয়েছিলাম। এটিএম কার্ড ছিলো বিধায় অনলাইনে মূল্য পরিশোধ করতে পেরেছি। এটিএম বুথ না থাকলে ই-কমার্স সম্প্রসারণ হতো না। অনলাইনে ট্রেনের কাটার সময়, টিকেটের মূল্য এটিএম কার্ডের মাধ্যমে পরিশোধ করা যায়।
সঞ্চয়ী ও চলতি একাউন্ট ছাড়াও নিদিষ্টি মেয়াদের জন্য টাকা ফিক্সড ডিপোজিট বা ডিপিএস এর মাধ্যমে ব্যাংকে টাকা সঞ্চয় করা যায়। এখন কোন কোন বলবে ব্যাংকে টাকা রাখিয়েন না। ব্যাংক সুদ দেয়। সুদ হারাম। আমরা তো সুদের টাকা পাওয়ার জন্য ব্যাংকে টাকা রাখি না। উপোরক্ত চারটি কারনে ব্যাংকে টাকা রাখি।
আপনারাও এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুলেন যেখানে এই চারটি সুবিধা পাবো। যেখানে কোন সুদের কারবার হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:০২