তিতলীর বয়স মাত্র চার বছর। সে জানে না জন্মই বা কি আর মৃত্যুই বা কি। সবাই কাঁদছে কেন এতো, তারও যে খুব কাঁন্না পাচ্ছে, সে ও কাঁদছে। সে কিছুতেই বুঝতে পারছে না, তার মা কেন মাটিতে শুয়ে আছে ! কথা বলছে না কেন, আদর করে কাছে ডাকছে না কেন, কপালে চুমু খাচ্ছে না কেন, বলছে না কেন আমার সোনার ময়না পাখি, আমার প্রাণের পাখি, আমার রাজকন্যা !!
বাড়ী ভর্তি মানুষ। সবাই কাঁদছেে । একটি শীতল পাটিতে দুধ সাদা রঙের কাপর দিয়ে ঢাকা রয়েছে নিথর একটি দেহ। এই দেহটি আর কারো নয়, তিতলী বানুর মায়ের। সেই সকাল বেলাতেও যিনি তিতলী বানুকে কোলে নিয়ে শিউলী ফুল কুরোতেন,পরম আদরে তাকে জড়িয়ে ধরতেন, বাগানে বাগানে ঘুড়ে বেড়াতেন আর সুন্দর সুন্দর প্রজাপতি ধারায় ব্যস্ত থাকতেন, তখন তার কপালে জুড়ে থাকতো বিন্দু বিন্দু ঘাম আর মুখভর্তি থাকতো উ্জ্জ্বল হাসি। এই হাসি কি তিনি আর কোনদিনও হাসবেন না, তা কি করে হয় ! তিতলীর যে আপন বলতে এই একজনই ছিল পৃথিবীতে। কেন সে আর থাকবেন না। তিতলী তাহলে কি নিয়ে বাঁচবে ?
তিতলী সাদা পর্দা জড়িয়ে ধরে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার মা’র ব্যবহৃত খাটটির দিকে। সব কিছুই আগের মত আছে, শুধু তার “ মা ”-ই আর নেই। তিতলীর চোখ দিয়ে গড়িয়ে পরছে অশ্রু।
তিতলী এখন আর বাগানে যায় না । মাটিতে পড়ে থাকা শিউলী ফুলও কুরোয় না, প্রজাপতির পিছনেও ছুটে বেড়ায় না..........মা ই যখন নেই আর কিই বা আছে এই পৃথিবীতে ভাল লাগার।