somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসমাপ্তের সমাপ্তি

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিথর দেহটি বিছানায় পড়ে আছে । সবসময়ের মতো ডান হাতে মোবাইলটি , তবে তা আজ কানে নেই । হাতটি পাশে পড়ে আছে। বাম হাত বুকের উপর সেই স্থানে পড়ে আছে যেখানে মোলায়েম হাতের স্পর্শ পাওয়া মাত্র প্রতিবার দেহটি পুনর্জীবনী লাভ করতো । অন্য হাতের কথা মনে পড়তেই চোখের সামনে ভেসে আসলো সেই নারীর মায়াবী চোখ, সেই গগনভুলানো চেহারার মাধুর্য । সেই চেহারার নেশায় হারিয়ে যেতে যেতে মনে পড়ে গেলো পাশাপাশি বসে কাটিয়ে দেয়া সময়গুলোর কথা ।

মনে পড়ে গেলো প্রথম যেদিন মেয়েটি তার কাছে এসেছিল সেই দিনের কথা । সেদিন সে বুঝতে পেরেছিল সে কতটা স্বার্থপর । সেদিন যদি সে চলে যেতো অজানার পথে সে রমণীকে সঙ্গী করে তাহলে মনে হয় না আজ একলা ঘরে একা হারিয়ে যেতে হতো । সেই প্রথম দিনটার কথা আজ খুব মনে পড়ছে । মুখ দিয়ে কথা ঠিকই বের হচ্ছিল কিন্তু মেয়েটাকে বুঝতে দেয়নি তার হৃদস্পন্দন তার ভিতর কি অনুভূতি সৃষ্টি করেছিল । মেয়েটি বুঝতে পেরেছিল কিনা তাও বুঝতে পারলো না সে। এরপর যতবারই সে মেয়েটির দেখা পেয়েছিলো সে তাকেও সঙ্গী করেছিলো এই অনুভূতির । কেনই বা করবে না !!! আর কোন চাওয়া যে কাজ করে না ঐ মায়াবী চোখের একচ্ছত্র অধিকারী হওয়া ছাড়া । যতবার সে ললনা তার হৃদয়ে আসে ততবারই যে সে হয়ে উঠে হিংসুটে , হয়ে যায় স্বার্থপর । আর সব হারানোর ক্ষীণ ভয় তার মনে এনে দেয় ধ্বংসাত্নক মনোভাব।

কিন্তু আজ বন্দী চার দেয়ালে নিথর এই দেহের লুপ্তপ্রায় মন এক প্রশ্নে বিদ্ধ হচ্ছিল “আমি কি তাকে হারাতে চলেছি?” চোখের কোণা যে কখন অশ্রুজলে সিক্ত হয়েছে তা এতক্ষণ টের না পেলেও এখন সেই বোধ ফিরে এসেছে । হাতে রাখা মুঠোফোনের স্পন্দনে সম্বিত ফিরে পেতেই দেখতে পেল সেই চির আকাংক্ষিত নামটি । কতবার মনে হয়েছে যে এই বুঝি হৃদস্পন্দন বাড়তে বাড়তে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাবে । মেয়েটি কতবার জানতে চেয়েছিল যে কি এমন ঘটনা যা হঠাৎ ছেলেটির কথা কেড়ে নিয়ে তাকে ক্ষণিকের জন্য স্তব্ধ করে দেয় । সে বলতে গিয়েও প্রতিবার ব্যর্থ হয়েছে । মেয়েটিকে চিন্তার সাগরে ডুবাতে চায়নি সে । এই ভয় যদি মেয়েটির ভালবাসা সহানুভূতিতে রুপান্তরিত হয়!! এতদিনে অবশ্য ছেলেটিও অনুভব করতে পেরেছে তাকেও কেউ ভালবাসে ঠিক ততোটাই যতটা সে মেয়েটাকে ভালবাসে । এজন্য অবশ্য কোন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়নি তাকে । সব উপেক্ষা করে রাতজেগে অপেক্ষা করেছে সে সুমধুর কণ্ঠের মায়ায় নিজেকে হারাতে ।
কিন্তু আজ সবকিছু কি অতীত হয়ে থেকে যাবে?? চোখ বুঝলে রাতের অন্ধকারের মতো যে অন্ধকার নেমে আসবে সেখানে আলো ফুটাতে কোন সূর্য কি উঠবে?? মেয়েটির কাছে দেয়া প্রতিটি ওয়াদা সে রাখতে পারলেও আজ চায় না রাখতে । কেননা সে ওয়াদাভঙ্গের একটি সুযোগ যে আজো পাওনা। তাই পারবে না ওয়াদামতো মেয়েটিকে আগে চলে যেতে দিয়ে মেয়েটির ইচ্ছা পূরণ করতে । নিজেকে আজ কোন প্রেমের গল্পের রোমিও মনে হচ্ছে । প্রতিটি প্রেমের গল্পের মতো করে তারও আজ ইচ্ছে করছে নায়িকার কোলে মাথা রেখে শান্তি খুজতে । কিন্তু লেখকের মতো করে তার মাথায় এ প্রশ্ন ঘুরছে না যে সব প্রেমে কেন একই ঘটনা ঘটে??? সে আজ অতীতে ডুবন্ত । তার মরমে, অবলোকনে কেবল প্রেমের নেশা আজ । প্রতিটি বিয়োগাত্নক কাহিনীর মতো করে নায়িকা নেই আজ পাশে , কেবল তার নাম আর চেহারার অবয়ব দেখতে পারছে তার ঢুলুঢুলু আঁখিদ্বয়। বিজয়ীর হাসি তার মুখে যে হাসি মেয়েটিকে হাজারবার কষ্ট থেকে টেনে এনে হাসিয়েছে। দু নয়নের ক্ষুধা মেটাচ্ছে সেই ললনার হাস্যোজ্জল অবয়ব দেখে । অশ্রু গড়াগড়ি খাচ্ছে তামাটে রংয়ের গালে । হয়তবা সামনে বসে দেখা হবে না আর সেই চেহারা , হয়তবা হবে না স্পন্দিত সেই মুঠোফোনটিকে তুলে আবার সেই কণ্ঠের মায়ায় হারিয়ে যাওয়া । হবে না হয়তো অনেক কিছু যা হলেও হতে পারত ।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:১৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণপরিষদের সাথে বিএনপির সখ্যতার কারণ কি ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭


বিএনপির নেতাদের সাথে গণপরিষদের নেতাদের ঘন ঘন সাক্ষাতের বিষয়টি মিডিয়াতে প্রচারিত হচ্ছে।বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে যখন বিএনপি হাই কমান্ড থেকে পটুয়াখালী -৩(দশমিনা-গলাচিপা) আসনের নেতাকর্মীদের কাছে চিঠি দেয়া হয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কি অন্ধকার?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫২



সুকান্তর একটা কবিতা আছে, দুর্মর।
"সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়:, জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়।" মানুষের ভবিষ্যৎ বলা সহজ কিন্তু একটি দেশের ভবিষ্যৎ কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×