একটা সময় দাস প্রথা বৈধ ছিলো, আইন করে সেটার বৈধতা দেওয়া হয়েছিলো। বৈধ ছিলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি বাহিনী কর্তৃক ইহুদিদের গণহত্যা। দীর্ঘ ২০০ বছরের প্রচেষ্টার বিনিময়ে ভারতীয় উপমহাদেশ কলোনিয়ালিজম থেকে মুক্তি পায়।
শুধু ভারতীয় উপমহাদেশ নয়, তৃতীয় বিশ্ব খ্যাত সকল দেশই একটা সময় কলোনিয়ালিজমের ছত্রছায়ায় নিগৃহীত হয়েছিলো। তখন এসব অনাচারগুলো বৈধ ছিলো।
বরং এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী ব্যক্তিটি সমাজের চোখে, রাষ্ট্রের চোখে এবং অবশ্যই অবশ্যই আইনের চোখে দোষী ছিলো।
আজ আমরা সভ্য হয়েছি, অসভ্য বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে সেটার বিরোধিতা করছি। আইন করে দাস প্রথাকে অবৈধ ঘোষণা করার সক্ষমতা অর্জন করছি।
আজ আমরা যেটাকে বৈধ বলে ভাবছি নিজেদের সর্বজ্ঞান প্রয়োগ করে, কয়েক প্রজন্ম পর মানুষ সেটাকে যে বর্বর, অসভ্য সংস্কৃতি হিসেবে চিহ্নিত করবে না তার নিশ্চয়তা কি? নিশ্চয় আমাদের থেকে তারা অধিক জ্ঞানী হবে, বেশি মানবিকতা বোধ সম্পন্ন হবে ঠিক যেভাবে আমরা আমাদের পূর্ব প্রজন্ম থেকে একটু বেশি আধুনিক হচ্ছি।
তারমানে আমাদের যুগে আমরা যত ভালো কাজই (আমাদের দৃষ্টিতে) করি না কেন অদূর ভবিষ্যতে সেটাকে বর্বরতা হিসেবে আখ্যা দেওয়াই স্বাভাবিক। আমাদের পক্ষে তো আর ভবিষ্যতে যেয়ে নিজের বর্তমানে কৃত কর্মকাণ্ডকে জাস্টিফাই করার সুযোগ থাকছে না যে, আমাদের দ্বারা সংঘটিত কোন কাজটি ভবিষ্যতেও ঐতিহ্য/বীরত্বপূর্ণ হিসেবে স্বীকৃত পাবে সেটা জেনে শুধুমাত্র সেটাকেই গ্রহণ করবো। এজন্যই ধর্মীয় নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য যাতে টাইম ডাইমেনশনের পূর্ব পরে সকল অবস্থাতেই নিজের কৃত কর্মকাণ্ডে কোনো রুপ অবিচার অনাচারের অবকাশ টুকু না থাকে।
কারণ স্রষ্টা সময়ের উর্ধ্বে, অনন্তকালের ভালো মন্দ বুঝার ক্ষমতা একমাত্র তারই আছে। সুতরাং তার দেওয়া দিকনির্দেশনা অনুসরণ করলে পথচ্যুত হওয়ার কোনই সম্ভাবনা নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৩৬