বাস সিগনালে দাঁড়িয়ে আছে। গরমে ঘামছি। মাঘ মাসে গরম লাগার কথা না। এই সময় প্রচন্ড শীতে বাঘ পালানোর কথা। অস্থির লাগছে। ইয়ারফোনে গান শুনছি। সাউথ ইন্ডিয়ান গান। নিজেকে গোফওয়ালা নায়ক মনে হচ্ছে। ভিলেন 'শরাফত' আমার নায়িকা 'তুলি'কে কোথায় লুকিয়ে রেখেছে?! কেমন আছে তুলি?!! আমি ব্যাগ থেকে চাকু বের করলাম। 'শরাফত!! তোকে আমি ছাড়বো না!! তুই আমার কলিজার ভিতর হাত দিয়েছিস!!'
ব্যাগে চাকু রাখছি হাসপাতালের পিয়ন ইদ্রিসের কল্যাণে। সেদিন কামরাংগা কিনে ইদ্রিসকে বললাম, "ইদ্রিস, একটা চাকু আনো, কামরাংগা কেটে খাবো"। সে অনেকক্ষণ পরে এক রোগীর কাছ থেকে দা নিয়ে এসে দাঁত কেলাতে থাকলো, "স্যার, এইটা দিয়ে কাটেন, চাকু পাই নাই!" আমি মনে মনে দা দিয়ে তার মাথা দু ফাঁক করে ফেললাম।
ব্যাগে চাকু রাখা ঠিক হয়েছে কিনা বুঝতে পারছি না। হঠাৎ চেকিং হতে পারে, আমার কাছে চাকু পেলে সমস্যা, সোজা থানায় চালান করে দিবে। পুলিশকে বোঝানো যাবে না এটা কামরাংগা কাটার চাকু। তারা ডিম থেরাপির পরিবর্তে কামরাংগা থেরাপি দিয়ে দিবে।
ইয়ারফোন গান বেজে যাচ্ছে। গানের একটা লাইন ধরা যাচ্ছে- "ইন্দিরা মান্দা জিন্দি কিউ"! উত্তেজনাকর গান। আমার হাতের মুঠো আরো শক্ত হলো! "শরাফত!!!"
বাসের কন্ডাকটর ভাড়া চাইছে। ভাড়া দিবো, নাকি চাকু দেখায় দিব?!
কন্ডাকটর বিরক্ত হয়ে বললো "ভাড়া দেন!"
আমি বললাম "ইন্দিরা মান্দা জিন্দি কিউ!"
দুজন দুজনের দিকে কঠিন চোখে তাকিয়ে আছি।
সে জানে না আমার কাছে চাকু আছে, সেই চাকু দিয়ে কামরাংগা কাটা যায়।
বেচারা!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০২