একটু শুরু থেকে শুরু করি। একদিন রাতে ওয়েব ব্রাউজিং করছিলাম। হটাত চোখে পরল নতুন একটা বাংলাদেশি মুভির টিজার। নাম, মুসাফির। সত্যি কথা বলতে কি টিজার দেখেই মনে মনে বলছিলাম বাংলাদেশের বাণিজ্যিক মুভির দিন বদলে যাচ্ছে এবং মুক্তির পর তা সিনেমা হলে গিয়ে দেখার জন্যেও অভিপ্রায় করলাম। তো যেমন কথা তেমন কাজ। আজ বলাকায় গিয়ে দেখে আসলাম আশিকুর রহমান পরিচালিত ‘মুসাফির’।
কাহিনীর প্লট বাংলাদেশ সিক্রেট সার্ভিসের এক মেয়ে সদস্যকে নিয়ে। যাকে ঘিরে হিরো থেকে ভিলেন সকলের যুদ্ধ। এর থেকে বেশি কাহিনী নিয়ে আর কিছু বলব না। তবে যাকে ঘিরে পুরো সিনেমার প্লট অর্থাৎ নায়িকা, তার অভিনয়, ডায়লগ থ্রো ইত্যাদি সবকিছুই আমাকে হতাশ করেছে। হতাশ হয়েছি আরও কিছু জায়গাতেই। যেমন, টাইগার রবির অতিরিক্ত চিল্লচিল্লি খুব বিরক্তিকর মনে হয়েছে। বেকগ্রাউন্ড মিউজিক আর ভিএফএক্স এর কাজ আরও ভালো হতে পারত। অনেক দৃশ্যই অযুক্তিক মনে হয়েছে এবং ক্লাইম্যাক্সটাও কেমন জানি তাড়াহুড়া করে শেষ করে দিয়েছে।
কি ভাবছেন? দেখার আগেই আপনাদের চোখে, মুখে, অন্তরে পানি ঢেলে দিলাম। আরে নাহ! মুভির এইসব হতাশাকে ঢেকে দেয়ার জন্যে রয়েছে অনেক আশার প্রদীপও। যেমন, ক্যামেরার কাজের কথা বলি। বাংলাদেশের অন্যান্য বাণিজ্যিক মুভির তুলনায় এর কাজ ছিল চমৎকার। নায়ক আরিফিন শুভর অভিনয় আগের থেকে আরও পরিপুক্ত বলে মনে হয়েছে। আর মিশা সওদাগরের অভিনয় এবং বান্টির (চরিত্রের নাম) কমেডি ছিল দুর্দান্ত। এছাড়াও একশন দৃশ্যগুলোও প্রশংসার দাবীদার।
সবমিলিয়ে সিনেমাটি একেবারে ফেলে দেবার মত নয়। পুরো টিম সাধ্যের মধ্য থেকে তাদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টাই করেছে। গতানুগতিক বাংলা সিনেমার থেকে যথেষ্ট ভালো। এখন আমার-আপনার মত মুভিপ্রেমীদের উচিৎ সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখে তাদের কাজে উৎসাহ দেয়া। এতটুকু বলতে পারব একেবারে হতাশ হবেন না। বাংলা সিনেমার উন্নয়নে সিনেমাটি একেবারে মাইলফলক না হলেও উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলেই আমি মনে করি।