somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুদ্ধদেব গুহের "সবিনয় নিবেদন" : আমার ভাললাগা আর খারাপ লাগা

২৩ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্টুডেন্টের বাসায় পড়াতে গিয়ে আমার দৃষ্টিগোচর হয় "সবিনয় নিবেদন" পত্র উপন্যাসটি। বই এর নামটায় আমাকে কাছে টেনেছে। কয়েকবার পড়েছি। কেন পড়েছি তা আমি শিওর না। রাজর্ষি আর ঋতি রায়ের আচমকা দেখা হওয়া; কারো মুখোমুখি না হওয়ার উষ্ণতা খুব কাছে টানবে টিনএজদের। পড়তে পড়তে তারসাথে কিছু ব্যাপারে আমার একাত্বতা আর অন্য কিছু ব্যাপারে বৈপরিত্ব তৈয়ার হয়েছে।

"আরেকজাতের দু পেয়ে ধেড়ে ইঁদুর। যাদের বাস শহরে।"
বুদ্ধদেব গুহ এখানে ঈর্ষাকাতর মানুষদের তুলনা করেছেন ইঁদুরের সাথে। মানুষের সাথে ঈর্ষা করাটাই যাদের মন-মগজে গেঁতে বসে তাদের। ইঁদুর যেমন কিছু একটা তার দাতে কাটা চায়। নতুবা তার সেই বিরহে মরতে হয়। হিংসুটে মানুষগুলোও তেমনই।
উনার এই উপমাটা আমার দারুণ লেগেছে। কারণ আমরা এখন যে পরিস্থতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি তার জন্যে। এই যে দেখুন; আমাদের সমাজ এমন কিছু ধেড়ে ইঁদুরের হাতে যারা আমাদের কুটে খাওয়া ছাড়া থাকতেই পারছেনা। পরিস্থিতি এমন দাড়িয়েছে যে, আমাদের মদের মতো গিলতে না পারলে বুঝি তেনাদের প্রাণ যায় যায় করে।

..." বাঘিনী খোঁজে বাঘ এখন। ওদের মিলনকাল এই সময়টি। শুধু বাঘের বেলাতেই বা কেন, মানুষের এই প্রখর গ্রীষ্ম আদর্শ মিলনকাল।..."

বুদ্ধদেব গুহের এই কম্পিয়ারটা আমার ভাল লাগেনা। অযৌক্তিক আর গাজা খোরি কথা মনে হয়েছে। কারণ মানুষের বেলাতে আদর্শ মিলনকাল শীতকাল নতুবা বৃষ্টির কাল। গরমের দিনে ঘুমানোর সময় মানুষ তার শরীরে সাথে বেডসিট লাগলেও ধুর করে উঠে সেখানে মিলনের কাছে কেমনে ঘেসে? কড়া রোদের দিনে মানুষ খোলা বারান্দায় ঘুমায়। আর মানুষ অনেকটা হাইড-সেক্সই পছন্দ করে।

তবে এসব কিছু বাদ দিয়ে আমার সবচে বিরক্ত লেগেছে তার রবিন্দ্রনাথ আর আর্নেস্ট হ্যামিংওয়ের তসবিহ পাঠ। কোন বর্ণনা দিতে যাচ্ছে তো ওখানে মনে হচ্ছে রবিন্দ্রনাথের কবিতাংশ না আওড়ালে মহা অন্যায় হয়ে যাবে। আর যতসব যুক্তিকে আর্নেস্টের কষ্টিপাথরে ঘষা-মাঝা করিয়ে উপস্থাপন না করলে সে যুক্তি অগ্রাহ্য হবে। এই ব্যাপারটা "সবিনয় নিবেদন" গ্রন্থের অনেকটা ক্ষতি করেছে। পাঠকের কাছে বিরক্তির কারণ হিশেবে ধরা দিয়েছে। আমার মনে হয়েছিলো ওনি বইটি লেখার সময় রবিন্দ্রনাথ আর আর্নস্টের সাহিত্যে মজে ছিলেন। হয়তো তা্য় তিনি উনাদের প্রভাব মুক্ত হয়ে লিখতে পারেননি। এটা একজন লেখকের অনেক কিছুই কেড়ে নেয়। গত লেখকের সাহিত্য পাঠ আমাদের যতটুকু জরুরত প্রভাবিত হওয়া তার চেয়েও বেশী দোষের। কারণ এই প্রভাবিত হওয়াটা একটা জাতির সাহিত্যকে আটকে রাখে। উন্মুক্ত হতে দেয়না।

".... যে নারী প্রকৃতই স্বাধীন, মুক্তি যার কাছে কথার কথা নয়, ধ্রুব সত্য; সেই সবচেয়ে বেশী পুরুষের কাছে ছোট হতে চায়, সমান হতে নয়।..."
খুব লাগলো তার এ কথাটা। এটাই প্রকৃত নারীবাদী বলে মনে হয়।

সব মিলিয়ে ভালই লেগেছে। ধন্যবাদ বুদ্ধদেব গুহ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×