বাংলাদেশ ব্যাংকের তখ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারী নাগাদ আমাদের বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ ১৯.১ বিলিয়ন ডলার। এবং এটি আমাদের দেশের ইতিহাসে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে।
অন্যদিকে টেক বিশ্বে কিছুদিন আগে ফেসবুক কতৃপক্ষ ১৯ বিলিয়ন ডলারে কিনে নিয়েছে মোবাইল ফোন এ্যাপস হোয়া্টসএ্যাপ।
এ দুটি বিষয়কে মাথায় রেখে আজ স্বাধীনতা দিবসে আমি সহ সকল প্রযুক্তি প্রেমীর প্রত্যাশা সব ধরনের স্মার্টডিভাইস এবং কম্পিউটার সম্পর্কিত পণ্য থেকে সরকার সকলপ্রকার ভ্যাট-ট্যাক্স উইথড্র করুক। যাতে এসব পণ্য সবার হাতের নাগালে আসতে পারে। দেশের সরকারী/বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনেক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা বাড়াবাড়ি রকমের দামের কারনে স্মার্টফোন বা ল্যাপটপের ধারেকাছেও যেতে পারে না(যদিও বর্তমান সরকার বিটিসিএলের মাধ্যমে স্বল্পদামে কিছু ল্যাপটপ বাজারে এনেছিল)।
কিছুদিন আগে বাংলাদেশে থ্রিজি চালু হলেও দেশের সর্বত্র এখনও এ সুবিধা দিতে পারেনি আমাদের অপারেটরগুলো। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি অপারেটরই তাদের 3G সেবা উন্মুক্ত করেছে কেবল বড় শহরগুলোতে। তবে দেশীয় অপারেটর টেলিটক এখন প্রতিটি বেসরকারী অপারেটরকে পিছনে ফেলে সবচেয়ে বেশিরভাগ এলাকায় তাদের 3G সুবিধা উন্মুক্ত করেছে। যদিও টেলিটকের নেটওয়ার্ক খুবই দুর্বল তাই কিছু এলাকায় 3G আসলেও এখনও অনেকজনই তাদের মনের মত স্পীড উপভোগ করতে পারছেন না। আশা করা যাচ্ছে এবছর নাগাদ প্রতিটি অপারেটরই 3G সুবিধা পৌছে দেবে সব এলাকায়। তবে আমরা কতটুকু প্রস্তুত এ প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারে সেটাই এখন দেখতে হবে। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১৪ মিলিয়ন।
কিন্তু থ্রিজি সুবিধাসম্বলিত ডিভাইসের সংখ্যা সে তুলনায় খুবই কম। এ সংখ্যায় সবচেয়ে বেশী ফোন বেসিক এরপরই ফিচারড ফোন। কিন্তু স্মার্টফোনের মাত্রাতিরিক্ত দামের কারনে বেশীরভাগ গ্রাহকই থ্রিজি সুবিধা ভোগ করতে পারছে না। এখানে আরেকটি বড় সমস্যা হলো মোবাইল অপারেটরদের আকাশছোয়া দামের সব প্যাকেজ। আমরা অনেকেই মোটামোটি মানের একটি স্মার্টফোন ব্যাবহার করলেও এসব অপারেটরদের গলাকাটা দামের কারনে থ্রিজি প্যাকেজের ধারে কাছে যেতে পারি না। ১ জিবি'র নূন্যতম দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকার(ধরে নিলাম ভ্যাট) মধ্যে হলেও সেটা ভাবা যেত। কিন্তু এদের কারোরই মাসিক প্যাকেজ ৪০৪ টাকার কমে নয়(কেবল টেলিটক বাদে)। অপারেটর ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে রয়েছে ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ বিভিন্ন ধরনের স্মার্টফোনের উপর। যা এসব ফোনগুলোর দাম বেশী থেকে আরো বেশীতর করে নিয়ে যায় আমাদের হাতের নাগালের আরো বাইরে। তবে দেশের বাজারে symphony mobile, walton mobile(দেশীয় ব্র্যান্ড), micromax সহ আরো কয়েকটি নিম্ন মানের চাইনিজ স্মার্টফোন(বেশীরভাগই Android) পাওয়া যায়। এদেরকে মানের দিক থেকে না হলেও দামের দিক থেকে অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হবে। তবে এরা যদি আরেকটু প্রফিট মার্জিন কমিয়ে দিতো বা ছাত্রছাত্রীদের(বিশেষত: কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগে পড়ুয়া) জন্য বিশেষ কোন ব্যবস্থা রাখতে পারে সেটি সবার জন্যই সুফল বয়ে আনবে। এক্ষেত্রে সরকারও বিশেষ উদ্যোগ নিতে পারে। আমি বিশেষভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বলছি এ কারনে যে, ফেসবুক থেকে শুরু করে ন্যাপষ্টার, টুইটারের প্রতিষ্ঠাতা সবার কম বয়সেই দারুন এবং বিশ্বজয়ী আইডিয়া গুলো মাথায় এসেছিল। সুতরাং, ভবিষ্যতের কান্ডারী এবং তরুন এসব মস্তিস্কই নিয়ে আসতে পারে বিজয়ের ঝান্ডা।
এখন একটি ল্যাপটপ বা একটি স্মার্টডিভাইস বাজারে কত দামে কিনতে হতে পারে যা তাদের সাধ্যের নাগালে। আমি গুগল এবং ফেসবুক ঘেটে ল্যাপটপের সবচেয়ে কমদামী পণ্যটি(ব্র্যান্ড নিউয়ের ক্ষেত্রে) পেলাম ফুজিৎসু'র লাইফবুক ২৯ হাজার টাকা এবং এন্ড্রোয়েড ডিভাইসের ক্ষেত্রে Alcatel onetouch যার দাম ৪,৯৯৯ টাকা।
এ পণ্যদুটিই যদি আরো কিছুটা কমে পাওয়া যেতেই পারতো। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রয়োজন সরকারের সদিচ্ছা এবং এ বিষয়ে একটু নজর দেয়া। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে মাত্র ৩৭০০ মূদ্রাতে পাওয়া যাচ্ছে ৭ ইনিচ মাপের ট্যাব। ডাটাউইন্ডের বিশেষায়ীত পন্য "আকাশ" নামে এ ব্র্যান্ডটি ট্যাব এবং মোবাইল ফোনকে নিয়ে গেছে সবার সাধ্যের মধ্যে।
কৃতজ্ঞতা:
যেহেতু লিখাটা আমার ইনডেপথ রিসার্চ করে লেখা না তাই সবধরনের তথ্যের জন্য ইন্টারনেটের সহযোগীতা নিয়েছি।
বাংলাদেশ ব্যাংক
কম্পিউটার সোর্স
DataWind
http://www.smartbuybd.com
টেককথন
mobilemaya.com