মেয়েটার চাহনি দেখেই প্রেমে পড়েছিলাম!
ক্লাস নাইনে পড়া সেই বৃষ্টিমেয়ে! মেয়েটার মধ্যে আর বৃষ্টির মধ্যে কেমন অদ্ভুত একটা মিল ছিল। মেয়েটা যতবার আমার দিকে তাকিয়ে চোখ বাঁকা করত ঠিক ততবারই আকাশ বাঁকা হয়ে ঝুম বৃষ্টি নামত। আর আমি বৃষ্টির মধ্যে পাগল হয়ে ছুটতাম মেয়েটার পিছনে।
ঝুম বৃষ্টির মধ্যে মেয়েটা খোলা চুলে যখন ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে হেঁটে যেত তখন আমার ভিতরে ঘূর্ণিঝড় শুরু হয়ে যেত। ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়! যা আমাকে বারবার মেয়েটার প্রেমের সাগরে হাবুডুবু খেতে বাধ্য করত।
একসময় সেই বৃষ্টিমেয়েও আমাকে ভালবাসতে শুরু করেছিল!
খুশিতে আমি নিজের যত্ন নিতে ভুলে গেলাম। পড়াশোনা বাদ দিয়ে সারাক্ষন বৃষ্টিমেয়েকে নিয়ে মেতে থাকতাম। এমনও হয়েছে যে ক্লাসের পড়া লিখতে গিয়ে আমি ভুল করে মেয়েটার নাম লিখে ফেলেছি! ভয়ংকর হলেও ভালবাসা ছিল অসামান্য।
এত এত ভালবাসা নিয়ে প্রতিদিন আমার আকাশে খুব সুন্দর একটা সূর্য উঠতে শুরু করল। বৃষ্টিমেয়ে দুহাত ভরে ভালবাসা নিয়ে প্রতিদিন সকালে স্কুলের সামনে একটা বটগাছের নিচে আমার জন্য দাড়িয়ে থাকত। আর আমি পথে আসার সময় ঘাসফুল
কুড়িয়ে এনে বৃষ্টিমেয়েকে দিতাম। প্রচণ্ড খুশি হয়ে মেয়েটা আমার হাতের একটা আঙ্গুল শক্ত করে ধরে স্কুলের পথে পা বাড়াত।
হা! হা! হা!
হাসির মাধ্যমে একটু পৈশাচিক আনন্দ নেবার চেষ্টা আরকি! বুঝতেই পারছেন হন্টক হিমুর ভীষণ কষ্ট হচ্ছে এখন।
রিলেশনশিপের কয়েকমাস পরে হঠাৎ একদিন মেয়েটা বলল, "দয়া করে আরআমাকে বিরক্ত করবেন না।"
আমার মনে আছে, আমি সেদিন বৃষ্টিমেয়েকে কিছুই বলতে পারিনি। তবে আমার চোখ থেকে বেশ বৃষ্টি ঝরাতে পেরেছিলাম।
এসব নিয়ে আর কিছু লিখতে পারছিনা। হাতখানা অবশ হয়ে আসছে।
গত সোমবার মেয়েটাকে দেখেছিলাম। প্রায় ৪ বছর পর! আমি মেয়েটার চোখের দিকে তাকাইনি। যদি আবার প্রেমে পড়ে যাই! কিন্তু মেয়েটা তাকিয়ে ছিল। হয়ত অনেকখানি ঘৃণা নিয়েই তাকিয়ে ছিল। না হলে অনেকখানি বিস্ময়!
বিস্ময় হতেই পারে। কেন হবেনা? আজকের আমি আর সেদিনের আমির মধ্যেযে অনেক তফাৎ!
[হিমুরা প্রেমে পড়েনা। কিন্তু আমি পড়েছিলাম। কিছুই করার নেই!]