বিপিএলের ৬ষ্ঠ আসরে সাংঘাতিক দর্শক ভরাডুবি হয়েছে।যদিও সিলেটে দর্শকের সংখ্যা কিছু বেড়েছে কিন্তু আশানুরূপ হয় নি।তাছাড়া ঢাকায় দর্শক ছিল একেবারে কম।ঢাকায় আবার ফেরত এলে সেই একই দৃশ্যের দেখা মিলতে পারে।তাই বিপিএলে দর্শক ফেরানোর সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ৮টি অব্যর্থ উপায়!
১. বিপিএল নিয়ে গান তৈরি করা যেতে পারে।প্যারোডি গান অথবা নিজস্ব গান!
কিছুদিন আগের নির্বাচনে একটি গান ব্যাপক সারা পায় সারাদেশে।গানটি হচ্ছে
"জয় বাংলা
জিতবে আবার নৌকা........."
শুধু মাত্র এই গানের ব্যাপক সারার কারণে বর্তমান সরকারের এমন প্রচার এবং প্রসার হয় যে কোন প্রকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই বিপুল ব্যবধানে নির্বাচন জিতে নেয়।
বিপিএল কমিটিও এমন কিছু কাজ করতে পারেন।এমন একটি চটকদার গান যদি বানানো যায় বিপিএল নিয়ে আর তা যদি হিট হয়ে যায় তাহলেই একেবারে কেল্লাফতে!
যেমন আমার মাথায়ই একটি প্যারোডি গান ঘুরছে বিপিএল নিয়ে।
'আইলো আইলো আইলো রে
রঙ্গে ভরা বিপিল আবার আইলো রে'
দর্শক আর ঠেকায় কে? স্ট্যাডিয়াম কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে।টিকেট বেচতে বেচতে অস্থির হয়ে যাবেন কাউন্টারে থাকা ব্যাক্তিবর্গ।
২. 10 years challenge এর মত বিপিএল চ্যালেঞ্জ নামের ট্রেন্ড চালু করা যেতে পারে!
ফেসবুকে ভাইরালের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন বাংলাদেশে সবচে দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জনের একটি অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।এখানে যদি কোন ভাবে বিপিএল ট্রেন্ড চালু করা যায় তাহলেই কাজ শেষ।আর কোন টেনশনই করতে হবে না।দর্শক একেবারে হুমড়ি খেয়ে পড়বে স্ট্যাডিয়ামে।ফেসবুক ট্রেন্ডে গা ভাসানো বর্তমানে একটি প্যাশনে গিয়ে ঠেকেছে।খেলার টানে না হোক অন্তত ট্রেন্ডে অংশ গ্রহণ করার জন্যে হলেও সকলে ছুটে আসবে স্ট্যাডিয়ামে।ট্রেন্ডটি হতে পারে এমন,
দর্শক ভর্তি গ্যালারিতে নিজের একটি সেল্ফি তুলে ক্যাপশনে লিখবে #BPL2019ChallengeDone.
৩. চিয়ার্স গার্লস এর ব্যবস্থা করতে হবে!
লাস্যময়ী চিয়ার্স গার্লদের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।যা অনেক যুবককেই আকর্ষণ করবে।খেলার পাশাপাশি তাদের নৃত্যও উপভোগ্য জিনিস।এটাও এক প্রকার বিনোদন।যদিও খেলা নিজেই একটি বিনোদনের অংশ।তারপরেও বিভিন্ন কারণে একটু বোরিং লাগতে পারে।তাই মাঝে মাঝে এই নৃত্য দর্শকদের মাঝে স্বতঃস্ফূর্ত ভাব বজায় রাখতে সাহায্য করবে।এটাকে বিনোদনের জন্যে বিনোদন বলা যায়।
৪. ক্রিকেটারদের দিয়ে বিপিএলের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ভিডিও বানাতে হবে!
বাংলাদেশী অনেক ক্রিকেটারই টিভিতে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের জন্যে কাজ করে থাকেন।তাছাড়া পাশের দেশ ভারতে যখন আইপিএল চলে তখন তারা তাদের দেশীয় এবং বিদেশী প্লেয়ার দের দিয়ে নানা ধরণের বিজ্ঞাপন করিয়ে থাকেন।তারা সাধারণত করে থাকেন তাদের নিজ দলের পক্ষ থেকে।বিপিএল কমিটি না হয় পুরো লীগের জন্যেই বিভিন্ন দলের প্লেয়ার দের দিয়ে বিপিএলের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে একটি ভিডিও তৈরি করবেন।
তাছাড়া কিছুদিন পূর্বের নির্বাচনেও আমরা দেখেছি কিভাবে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের পাব্লিক ফিগার বিভিন্ন দলের পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালান।তাদের কাছ থেকেই অনুপ্রেরণা নিয়ে বিপিএলের এমন একটি কাজ করা উচিৎ!
৫. দুর্ধর্ষ বোলিং পিচ দিতে হবে!
ভাই মনে করেন খেলা শুরু হওয়ার ২০ মিনিটের ভিতরেই ব্যাটিং দল ৩০ রানে অল আউট হয়ে গেল।
কি অসাধারণ হবে ব্যাপারটা।ভাবতেই গা শিউরে উঠে।এমন অসাধারণ সব ম্যাচ কেউ ঘরে বসে টিভিতে দেখতে চাইবে না।সবাই স্ট্যাডিয়ামে বসে এসব ম্যাচ উপভোগ করতে চাইবে।
যেখানে বিশ্বে অন্যসকল প্রিমিয়ার লীগে হাই স্কোরিং ম্যাচ হয়ে থাকে,যেই দল জিতে তাদের কে করতে হয় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই সেখানে বাংলাদেশে ঘটবে তার উলটো জিনিস।এই ধরণের ব্যতিক্রমী লীগ সব জায়গায় প্রচুর সারা ফেলবে।আর এজন্যই হয়ত বর্তমানে যত প্রিমিয়ার লীগ চালু রয়েছে সব গুলোকে পেছনে ফেলে BPL ই সারা বিশ্বে সবচে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।কারণ এই ধরণের দুর্ধর্ষ বোলিং পিচে এমন রোমাঞ্চকর খেলা আর কোন প্রিমিয়ার লীগে হয়ে থাকে কে জানে!
৬. ঘুরে ফিরে একই স্ট্যাডিয়ামে খেলতে হবে!
মোটামুটি তিন স্ট্যাডিয়ামে খেলা হয় বিপিএল।সিলেট, চট্টগ্রাম এবং হোম ক্রিকেট গ্রাউন্ড মিরপুরে। এত গুলো স্ট্যাডিয়ামের তো কোন প্রয়োজনই নেই।একই স্ট্যাডিয়ামে যদি টানা খেলা হয় তাহলে পিচ স্বয়ংক্রিয় ভাবেই বোলিং পিচ হয়ে যাবে।কর্তৃপক্ষের আলাদা করে কষ্ট করতে হচ্ছে না।তাছাড়া মিরপুর থেকে যদি খেলাকে সিলেটে নিয়ে যাওয়া হয় এতে করে ঢাকার দর্শক রা স্ট্যাডিয়ামে বসে খেলা দেখতে না পারলে খেলার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।বরঞ্চ মিরপুরে যেদিন সিলেটের খেলা হবে সেদিন সিলেট থেকে মানুষ ঢাকায় আসবে খেলা দেখতে।এভাবে বাকি ৬ টা দলের খেলা যেদিন থাকবে তারা নিজ দায়িত্বে এসে মিরপুরে বসে খেলা দেখবেন।এতে করে খেলার প্রতি টান ও শ্রদ্ধা উভয়ই বৃদ্ধি পাবে।আর পুরো ৭ টা জেলাতে গিয়ে গিয়ে তো আর বিপিএল পরিচালনা সম্ভব না।এজন্যে শুধু একটি স্ট্যাডিয়ামেই সম্পূর্ণ বিপিএল শেষ করতে হবে।
৭. ডিয়ারেসের কথা বলে ডিয়ারএস দেয়া যাবে না!
দেশীয় যেই প্রিমিয়ার লীগ গুলোর একটি বড় উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের ঘরোয়া লীগের প্লেয়ারদের আরো ভাল ভাবে গড়ে তোলা।তাদের একটি সুযোগ প্রদান করা।তাছাড়া দেশীয় আম্পায়ারগণও এখানে সুযোগ পেয়ে থাকেন।বাংলাদেশে বিশ্বমানের কোন আম্পায়ার নেই।এই বিপিএলের মাধ্যমেই সম্ভব বিশ্বমানের আম্পায়ার গড়ে তোলার।এজন্যে ডিয়ারেস পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে না।আম্পায়ার নিজের সক্ষমতা দিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।এটা তাদের জন্যে এক প্রকার অনুশীলন।আর এর ফলে ম্যাচে একটি অন্যরকম ফলাফল দাঁড়াবে যা ম্যাচকে একেবারে শ্বাসরুদ্ধ কর পরিস্থিতিতে নিয়ে যেতে বাধ্য।আর এমন শ্বাসরুদ্ধ ম্যাচই মানুষ উপভোগ করবে বেশি।
৮. বিদেশী তারকা প্লেয়ার গণ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে চলে যাবে এবং বিপিল কমিটির তা বসে বসে দেখতে হবে!
স্টিভেন স্মিথ বিপিএল ছেড়ে চলে গেছেন।ওয়ার্নারও চলে যাবেন সামনের সপ্তাহে।এভাবে সকল বিদেশী প্লেয়ারদের চলে যেতে হবে।তারা না গেলেও তাদের কে ভাগিয়ে দিতে হবে।আপাত দৃষ্টিতে এটি খারাপ দেখালেও আসলে এটি অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত একটি কাজ হয়েছে এবং হবে।কারণ এর ফলে সব জায়গায় আলোচনার সৃষ্টি হবে।মানুষ বিপিএল নিয়ে আফসোস করতে শুরু করবেন।তারা বিপিএল নিয়ে আফসোস করা মানেই হচ্ছে তারা বিপিএল নিয়ে চিন্তিত অর্থাৎ তারা বিষয় টা Care করেন।আর এভাবে তাদের মাঝে বিপিএল নিয়ে চিন্তার খোরাক যোগাতে পারলেই সম্ভব বিপিএলের জমজমাট পরিস্থিতি সৃষ্টি।
সর্বশেষে ওনাদের জন্যে এড-ভাইস দেওয়ার আছে।
এড-ভাইস হচ্ছে যতই অভিযোগ উঠুক না কেন ভাই এগুলা নিয়ে মাথা ব্যথার কিছু নেই।অভিযোগ উঠবেই।এগুলোকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে খেলা চালিয়ে যেতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৫৯