আমি আশা করেছিলাম হয়ত এমন দুই একটা নিউজ দেখতে পারি যে,"ব্যালট বাক্সের ভিতর পাওয়া গেল মদের বোতল"। কারণ ভাই আগের দিন রাতে যেমনে নৌকায় ভোট সিল-গালা করছে মদ খেয়ে (রেজাল্ট দেখলেই বুঝা যায়, মদ খাইয়া হুঁশ ছিল না সিল মারার সময়)।ভাগ্য-ভালো যে মদের বোতল ব্যালট বাক্সের ভিতর ঢুকাই দেয় নাই।

ভোটের ফলাফল মানুষ আগে থেকেই জানতো কি হবে।কিন্তু ধারণা করেনি বিরোধীদলের এতটা ভরাডুবি হতে পারে আর এই পরিমাণে ভোট ডাকাতি হতে পারে।শুধুমাত্র ফলাফলের দিকে তাকালেই বুঝা সম্ভব নির্বাচনে আসলে কি হয়েছিল।

দুই-একটি আসন ছাড়া বাকি সকল আসনেই আ. লীগ জোট এর প্রার্থীদের তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে জয়ের ব্যবধান বিশাল।একটি সুষ্ঠু, অবাধ ,নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে কখনোই ভোট ব্যবধান এত বেশি হত না। সব আসনের কথা বাদ দেন।কিছু আসনের দিকে তাকালেই এটা এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যাবে যে আ. লীগ জোট ভোট ডাকাতি করেছে।নিচে উল্লেখ করা আসনে ভোটের ব্যবধান একটু বেশিই।চুরির একটা সিস্টেম আছে।আ. লীগ জোট একেবারে সব কিছুর লি-মিট ক্রস করে গেছে।

গোপালগঞ্জ-১ঃ আ. লীগ পেয়েছে-৩,০৩,১৬১ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৫৭ ভোট

গোপালগঞ্জ-৩ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৩২,৪১৬ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-১২৯ ভোট

গোপালগঞ্জ-২ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৮১,৯০৯ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-২৮৬ ভোট

জামালপুর-৪ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,১৭,১৯৮ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাপা পেয়েছে-১,৫৯৩ ভোট

বরিশাল-১ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,০৫,৫০২ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পেয়েছে-১,৭৭৯ ভোট

চট্টগ্রাম-৬ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৩০্‌৪৩১ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-২,২৪৪ ভোট

বাগেরহাট-৪: আ. লীগ পেয়েছে-২,৪৭,৯৪১ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পেয়েছে-২,৪৭১ ভোট

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৮২,০৬২ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পেয়েছে-২,৯৪৯ ভোট

চট্টগ্রাম-৩ঃ আ. লীগ পেয়েছে-১,৬২,৩৫৬ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৩,১২২ ভোট

চট্টগ্রাম-১৩ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৪৩,৪১৫ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী ফ্রন্ট পেয়েছে-৩,৭৯৪ ভোট

চট্টগ্রাম-১ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৬৬,৬৬৬ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৩,৯৯১ ভোট

ভোলা-৩ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৫০,৪১১ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-৪,০৫৫ ভোট

জামালপুর-৩ঃ আ. লীগ পেয়েছে-৩,৮৬,৮২৮ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৪,৫৬৬ ভোট

নোয়াখালী-৬ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,১০,০১৫ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৪,৭১৫ ভোট

বাগেরহাট-২ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,২১,২১২ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৪,৫৯৭ ভোট

কিশোরগঞ্জ-৪ আ. লীগ পেয়েছে -২,৫৯,৩৮১ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৪,৮০০ ভোট

যশোর-১ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,১১,৪৪৩ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৪,৯৮১ ভোট

পাবনা-২ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৪২,৩৩৮ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৫,৩৬৯ ভোট

যশোর-৬ঃ আ. লীগ পেয়েছে-১,৫৬,৫০৩ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৫,৬৭৩ ভোট

গাইবান্ধা-৪ঃ আ. লীগ পেয়েছে-৩,০০,৮৬০ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাপা পেয়েছে-৫,৭১৭ ভোট

ফেনী-২ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৯০,৬৬৮ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৫,৭৮৪ ভোট

চট্টগ্রাম-৭ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,১৭,১৫৫ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৬,০৬৫ ভোট

কুষ্টিয়া-১ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৭৬,৫৮৫ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৬,০৮৮ ভোট

ভোলা-৪ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৯৯,১৫০ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পেয়েছে-৬,২২২ ভোট

ঝিনাইদহ-১ঃআ. লীগ পেয়েছে-২,২২,০৩৫ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৬,৬৬৮ ভোট

নেত্রকোনা-৩ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৬০,০৫৭ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৬,৭১৫ ভোট

নাটর-৪ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৮৬,২৬২ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতিয় পার্টি পেয়েছে-৬,৯৭৯ ভোট

জামালপুর-১ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৭১,৭৩৪ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পেয়েছে-৭,১৭০ ভোট

শেরপুর-২ঃ আ. লীগ পেয়েছে -৩,০০,৪৪২ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৭,৬৫২ ভোট

মেহেরপুর-২ঃ আ. লীগ পেয়েছে-১,৬৯,৩০১ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৭,৭৯২ ভোট

ভোলা-১ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৪১,২১৭ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৭,২২৪ ভোট

শেরপুর-২ঃ আ. লীগ পেয়েছে-৩,০০,৪৪২ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৭,৬৫২ ভোট

নড়াইল-২ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৭১,২১০ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্য-ফ্রন্টের পেয়েছে-৭,৮৮৩ ভোট

নাটোর-৩ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৩০,৮৮১ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৮,৭৫০ ভোট

নড়াইল-১ঃ আ. লীগ পেয়েছে-১,৮২,২৬৮ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৮,৯১৯ ভোট

ঝিনাইদহ-২ঃ আ. লীগ পেয়েছে-৩,২৫,৮৮৬ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন পেয়েছে-৯,২৯৩ ভোট

ঝিনাইদহ-৪ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,২৬,৫৭০ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৯,৪৪২ ভোট

বরগুনা-২ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,০০,৩২৫ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-৯,৫৩৮ ভোট

কুষ্টিয়া-৪ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৭৯,০১১ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-১২,৪১২ ভোট

শেরপুর-৩ঃ আ. লীগ পেয়েছে-২,৫১,৯৩৬ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-১২,৪৯১ ভোট

বরগুনা-১ঃ আ. লীগ পেয়েছে-৩,১৭,৬২২ ভোট
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি পেয়েছে-১৫,৮৫০ ভোট

আরও অনেক রয়েছে এমন।আসলে যা বলেছিলাম বেশির ভাগ আসনেই আ. লীগ জোটের বিরুদ্ধের প্রার্থীরা হেরেছে বিপুল ব্যবধানে।ফলাফলের দিকে তাকালে দেখা যাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন নির্বাচনের ফলাফল এমন দাঁড়ায় নি।এই ফলাফলই প্রমাণ করে এটি কোন সুষ্ঠু, অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন নয়।

এই নির্বাচনের অনেক রেকর্ড হয়েছে।তাই একে রেকর্ডিয় নির্বাচন বলা যায়।রেকর্ডিয় নির্বাচনের কিছু অদভোদ কাজকারবার দেখি।

১. খুলনা-১ আসনে ঘটে এক অন্য রকম ঘটনা।এইখানে ছোট খাটো একটা ঝামেলা হয়ে গেছে।এখানে নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থী মিলে মোট ভোটারের চেয়ে ২২,৪১৯টি ভোট বেশি পড়েছে।মানে এই হচ্ছে নির্বাচনের অবস্থা আর্কি।

২. সুনামগঞ্জের দুটি কেন্দ্রের সকল ভোট পড়ছে নৌকায়।ধানের শীষে কোন ভোট পড়ে নাই। তো যখন ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা গোপেন্দ্র চন্দ্র দাস কে জিজ্ঞেস করা হইল কাহিনী কি উনি বললেন,‘আমি কি করব বলেন, ধানের শীষের কোনও ব্যালট তো পাইনি। গুণে দেখি সব ভোটই পড়েছে নৌকা মার্কায়।’

৩. কিছু কিছু আসনে ভোট শেষ হওয়ার অল্প কিছু সময়ের মাঝে দেখা গেল ফলাফল বের হয়ে গেছে।অদভোদ ব্যাপার স্যাপার।ঢাকা-১ এমন একটি আসন।

৪. তাছাড়া বাংলাদেশের বেশির ভাগ কেন্দ্রেই ধানের শীষের এজেন্ট রা ,'' ধানের শীষের প্রতিনিধিও ছিলেন। কোথাও গেছেন হয়তো।'' অথবা "এতক্ষণ ছিলেন।এখন বাইরে গেছেন" অথবা "নাস্তা করতে বাইরে গেছেন।এখনই চলে আসবেন" এমন অবস্থায় ছিলেন।অর্থাৎ সাংবাদিকদের সাথে ধানের শীষের এজেন্ট দের দেখা হয়নি+ওদেরকে কেন্দ্রের ভিতর থেকে বাইরে থাকার কথা বেশি শুনা গিয়েছে।

৫. হিরো আলোম শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট চুরির মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণে তাকে মারধরের স্বীকার হতে হয়।হিরো আলোমের মত এমন অবস্থা আর অনেকেরই হয়েছে। কিছু কিছু প্রার্থী ভোট কেন্দ্রেই যাননি অথবা যেতে পারেননি ভোট দেওয়া জন্যে।



তথ্য সূত্র: ইন্টারনেট