যুগে যুগে ইসলামী আন্দোলনকে উৎখাত করার চেষ্টা সবসময়ই হয়েছে, সামনেও হবে। চিরুনী অভিযান আজকে নতুন না, আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও হবে। এই তো সেদিন, মাত্র কয়েক হাজার বছর আগে, ফেরাউনের বুদ্ধিজীবি ও মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা তাকে বলেছিল, মহামান্য সম্রাট, আপনি মুসা ও তার সঙ্গী সাথীদের এভাবে চলতে দেবেন, অথচ তারা সমাজে 'বিশৃঙ্খলা' সৃষ্টি করছে, অধিকন্তু আপনি যাদেরকে প্রভু মানেন ওরা অবলিলায় তাদেরকে অস্বীকার করছে? ওদেরকে কি এখনই খতম করে দেয়া উচিত নয়? 'মহামান্য' সাম্রাটের আত্মমর্যাদায় লাগলো। তিনি ঘোষণা দিলেন, নিশ্চয়ই আমি ওদেরকে শায়েস্তা করবো। ওদের পুরুষদেরকে আমি হত্যা করবো, আর নারীদেরকে বাঁচিয়ে রাখবো। আমি ওদের উপর প্রবল পরাক্রমশালী। ফেরাউনের এমন মন্তব্য শুনে ঘাবড়ে গেলেন মুসা আ. এর অনুসারীরা। মুসা আ. তাদেরকে বললেন, সাহায্য চাওয়ার জন্য, আসো আমরা আকাশ ও পৃথিবীর একচ্ছত্র অধিপতির কাছে হাত তুলি, আর ধৈর্যের উপর টিকে থাকি। যারা আল্লাহকে ভয় করার নীতিতে জীবন যাপন করবে, চুড়ান্ত সফলতা তাদের জন্যই বরাদ্দ। নিশ্চয়ই এই পৃথিবীর মালিক আল্লাহ, আর পৃথিবীতে কারা শাসন করবে, রাজত্ব করবে, টিকে থাকবে, তার ফয়সালা করেন আল্লাহ, যে যতই প্লান পরিকল্পনা করুক, সিদ্ধান্ত জমিনে হয়না, উপর থেকে ফয়সালা আসে।
আজকে যাদের উপর নিপিড়ন, আর যাদের পক্ষ থেকে নিপিড়ন, তাদের সবার চরিত্রই এ আয়াত তিনটিতে চমৎকার ভাবে খোদাই করা আছে। নিপিড়িতরা যদি বাঁচতে চায়, তবে তাদের করণীয় পরিষ্কার ভাবে বর্ণনা করা আছে। একদিকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে, যে কোন মুল্যে তাকওয়ার উপর টিকে থাকতে হবে, অন্যদিকে একশতভাগ বিশ্বাস রাখতে হবে, যে যতই আস্ফালন করুক, বাড়াবাড়ি যারা করে, তাদের কণ্ঠস্বর বেশিদিন শোনা যায়না, তাদের রাজত্বও বেশি দিন চলেনা, আল্লাহর চূড়ান্ত পাকড়াও সহসাই তাদের উপর আপতিত হয়। মুসা আ.এর কাহিনী যাদের নিকট প্রাচীন মনে হয়, তারা এদেশের এই কয়েক দশক আগের ইতিহাস আরেকবার পাঠ করলেও এ বাণীর সত্যতা পুনরায় ঝালাই করে আস্বস্ত হতে পারেন।
অন্যদিকে, নির্যাতন কারীরা তাদের কাজের মাঝখানে একটু ব্রেক দিয়ে বর্ণনাটি একবার পড়ে নিলে ভাল করবেন।
নাসরুম মিনাল্ল-হী ওয়া ফাতহুন করী-ব।
দৃষ্টি আকর্ষণীঃ মুসা আ. ও ফেরাউনের এ বর্ণনাটি সূরা নং ৭, সূরা আল আরাফের ১২৭-১২৯ নং আয়াতের অনুবাদ, একটু বর্ধিত করে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ৮:৪০