জিম থেকে ফেরার সময় নিজেকে বেশ পালোয়ান-পালোয়ান লাগে। তাই বোধ হয়, বাসায় ফেরার সময় কি যে মাথা আসলো জানি না। পয়েন্ট স্যামসন-রোবর্ন রাস্তাটার স্পিড লিমিট ১১০ কিমি। কেন যেন মনে হলো ওখান থেকে ঘুরে বাসায় যাবো। এই পথে কখনও যাই না মানে যাওয়া হয় না। অনেকটা নতুন রাস্তা। হেডলাইট ছাড়া কোন রাস্তার লাইটও নাই। তারপরও কোন রকম ভয় লাগা ছাড়া হাইওয়ে তে উঠলাম।
আপনাদের অনুধাবনের জন্য জায়গার ম্যাপ দিলাম।
পয়েন্ট স্যামসন হাইওয়ে থেকে বামে উইকহ্যাম ড্রাইভে ঢুকবো... এমন সময় দেখি একজন আদিবাসি ভদ্রমহিলা রাস্তার ঐ পাড়ে দাড়ায়ে। বয়েস্কা একজন। ৫০+ হবে। মনে হলো কাদতেছেন। গাড়ি থামায়ে জানালার কাঁচ নামায়ে জানতে চাইলাম উনি ঠিক আছেন কিনা........ দেখলাম আস্তে আস্তে রাস্তা পার হয়ে গাড়ির কাছে চলে আসলেন। শব্দ করে কাদতে কাদতে....
এমনি তেই এখানকার আদিবাসিরা একটু কদাকার (আল্লা মাফ করুন !) আর কান্নাভেজা মুখ আরো বেশী বিভৎস লাগছিল। হটাৎ দেখি উনার চোখটা যেন মরা মানুষের চোখ। ততক্ষনে উনি একদম জানালার কাছে চলে আসছেন। এসে হাত বাড়ায়ে দিলেন.... মনে হলো আমার গলা চেপে ধরবেন.....
দ্যাস ইট ! হটাৎ চরম ভয় আমাকে ঘিরে ধরলো। আতংকের মুহুর্তে ক্লাচ ছেড়ে এক্সিলেটার চাপ দিলাম। টান দিয়ে উইকহ্যাম ড্রাইভে ৫০মিটার ঢুকলাম।
কয়েক সেকেন্ডে মাথা ঠান্ডা হতে লজ্জা লাগলো। তিন বছর ধরে এখানে থাকি। মোটামুটি এখানকার সবাই আমাকে চেনে।
যাই হোক, ইউটার্ন করে ঘুরায়ে ফিরে গেলাম। ভাবলাম দুর থেকে দেখি। তারপর পুলিশ কে কল দেবো। উনার হয়তো সাহায্য লাগবে। হয়তো আসলেই বিপদে পড়ছেন...
গাড়ি ঘুরায়ে গেলাম। গিয়ে দেখি উনি নাই। একদম উধাও। যেন বাতাসে মিলায়ে গেছেন। আসে-পাশে একদম খালি জায়গা। লুকানোর কোন স্পট নাই! ভালো করে আবার দেখলাম। বার বার দেখলাম .... নাই ....
কলিগদের সাথে আলোচনা করে জানলাম আদিবাসিরা চরমভাবে স্পিরিট/ আত্মায় বিশ্বাস করে। ঐ জায়গা আর ঘোস্ট গুম স্ট্রিট (ম্যাপে দেখতে পারেন) এ অনেকেই নাকি দেখছে।
এর পর অনেক বার ঐ জায়গাগুলাতে রাতে গাড়ি চালাইছি। কিন্তু আর কখনও কাউকে দেখি নাই।
এখনো বিশ্বাস করতে পারি না। মাঝে মাঝে মনে হয় হয়তো আমার তখন হ্যালোসিনেশন হইছিল, ভুল দেখছি। জানি না....
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:০১