আগের পর্ব মদ পান এবং মদাসক্তি ১ম পর্ব [লক্ষণ ও উপসর্গ]
কী করা উচিত
মদ পান:
যদি আপনার সন্দেহ হয় যে আপনি মদ পানের সমস্যায় ভুগছেন সেক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে (এক সপ্তাহ বা এরকম সময়) কতটুকু মদ পান করছেন সে বিষয়টি টুকে রাখার চেষ্টা করুন। এবং এক্ষেত্রে নিজের প্রতি সৎ থাকবেন, মিথ্যে পরিমাণ টুকবেন না।যদি আপনি পুরুষ হন সেক্ষেত্রে দিনে ২৫০ এম এল এর বেশি মোটেও পান করবেন না, আর নারী হলে ১২৫ এম এল এর বেশি নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে পরিমাণের এই তারতম্যের পেছনে নারী ও পুরুষের মধ্যে মদ হজমের বিভিন্নতাই মূল কারণ। তবে স্বাস্থ সার্বিকভাবে ভালো রাখতে কখনই মদ না খেলে উত্তম, যদি একান্তই সেটা সম্ভব না হয় তবে সপ্তাহে তিন বার মদ পান করবেন এর বেশি নয়।
১। খালি পেটে মদ পান করবেন না।
২। এক ঘন্টার ব্যবধানে একবারের বেশি পান করবেন না (এক বারে ২৫০ এম এল (পুরুষদের ক্ষেত্রে) ১২৫ এম এল (নারীদের ক্ষেত্রে) কেননা লিভার এক ঘন্টা সময়ের মধ্যে এর চেয়ে বেশি মদের পাচন করতে সক্ষম নয়।
৫। আপনি যদি গর্ভবতী হন কিংবা গর্ভবতী হবার চেষ্টায় লিপ্ত থাকেন সেক্ষেত্রে বিয়ার, ওয়াইন কিংবা অন্যান্যা মদ জাতীয় পানিয় থেকে দুরে থাকুন।
৬। মদ পানের প্রতি নিজের আচরণ পর্যবেক্ষণ করুন। যদি পুরো পুরি ইচ্ছা থাকা স্বত্তেও নিজেকে নিবৃত্ত করতে না পেরে বরং মদ পানের কারণে মাতাল হয়ে যান সেক্ষেত্রে এটা যেন কিছুতেই আপনি দ্বিতীয়বার না করেন সে বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
৭। কেউ আপনার এই মদ পানের বিষয়ে কোন কথা বললে আপনার যদি রাগ চড়ে যায় সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ-এর পরামর্শ গ্রহণ করুন।
মদাসক্তি:
১। যদি আপনার প্রিয় কেউ মদাসক্ত হয় সেক্ষেত্রে ডাক্তার বা নেশার
আসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন।
২। যদি মদ পান ছাড়তে আপনি ব্যর্থ হন সেক্ষেত্রে সেটা নিজেকে বোঝাবার চেষ্টা করুন অর্থাৎ এই সত্য থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখবেন না এবং চেষ্টা করুন কোনভাবে এই অভ্যাস বা নেশা থেকে মুক্তি মেলে কি না।
৩। যদি আপনি সফল হতে না পারেন সেক্ষেত্রে কোন বিশেষজ্ঞ-এর শরণাপন্ন হোন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই, যত শীঘ্র চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় ততই সেরে ওঠার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
৪। নিয়মিত শরীর চর্চা করুন।
৫। ব্যায়ামের ফলে শরীর থেকে একটা রাসায়নিক পদার্থ নিসৃত হয় যেটা আপনাকে সুস্থ থাকার আকাঙ্খা যোগাবে।
৬। নিজের পরিবার পরিজন এবং বন্ধু বান্ধবদের কাছ থেকে সাহায্য নেবার চেষ্টা করুন, যেন তারা আপনাকে মদ থেকে দুরে রাখতে সহায়তা করতে পারে।
৭। নতুন মানুষ যারা মদ পান থেকে বিরত থাকে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করুন, এবং যেসব বন্ধুরা মদ পান করে, বা যেসব স্থানে গেলে আপনার মদ পানের সুযোগ হয় সেসব এড়িয়ে চলুন।
তখনই ডাক্তার দেখাবেন
১। যদি আপনার মধ্যে মদ পানের কিংবা মদাসক্তির লক্ষণ দেখা যায়|
২। যদি আপনি নিয়মিত মদ পান করেন।
৩। দীর্ঘস্থায়ী এবং সময়ে সময়ে বিষণ্ণতাগ্রস্ত হয়ে ওঠেন।
৪। যদি মদ পান ছেড়ে দিতে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয়ে থাকেন যেমন-
ক) মাথা ব্যথা
খ) দুশ্চিন্তা হওয়া
গ) নিদ্রাহীনতা এবং
ঘ) দুর্লভ ক্ষেত্রে ডেলিরিয়াম ট্রিমেনজ
(যেমন হ্যালুসিনেশন হওয়া, বিভ্রান্তি এবং কম্পন)।
৫। যদি আপনি গর্ভবতী হন কিংবা আপনার মনে হয় যে গর্ভবতী হবেন, কিন্তু মদ পান ছাড়তে পারছেন না।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন
মদ পান:
১. মদ পান না করার চেষ্টা করুন। মনে রাখার চেষ্টা করুন যে দু:শ্চিন্তা এবং হতাশা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে মদ পান করে আসলে কোন লাভই হয় না। চেষ্টা করুন ইতিবাচক হবার।
২. যদি সামাজিক অনুষ্ঠাণে মদ খাবার সুযোগ হয় সেক্ষেত্রে সেটা এড়িয়ে গিয়ে স্বাস্থকর কোন কিছুর চেষ্টা করুন।
মদাসক্তি:
১. আপনার পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুদের জানান যে আপনি মদ পান ছাড়তে চান, কিন্তু পারছেন না, তারা আপনাকে বুঝবে এবং সাহায্যের জন্যে হাত বাড়িয়ে দেবে।
২. মদের উপর নির্ভরশীলতা অন্য কোন ইতিবাচক কাজ করে কমাবার চেষ্টা করুন।
৩. যদি ছেড়ে দিয়ে পুনরায় একদিন মদ পানের প্রতি আপনার আগ্রহ জন্মায় সেক্ষেত্রে নিজের এই অর্জনকে এতো সহজে নষ্ট করবেন না। নিজের সাথে প্রতারণা করবেন না।
ধুমপান ত্যাগের সময় কী কী ঘটতে পারে
ধুমপান ত্যাগের বিষয়টিকে সহজ করে তোলার জন্যে কিছু কৌশল
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ২:৪৭