প্রিয় হাসান ভাই
ভেবেছিলাম "মন্মথের মেলানকোলিয়া" পড়বো না! কেন এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম জানিনা। হয়ত ফ্ল্যাপের কথাটা তেমন টানেনি অথবা আমার অবচেতন আপনাকে একজন গল্পকার হিসেবেই দেখতে চেয়েছিল আজীবন! কিন্তু জেন রসি ভাইয়ের রিভিউ পড়ে মনে হলো এটা এক্ষুণি পড়া উচিত। না হলে নরক নিশ্চিত!
যেহেতু নরকেই বসবাস তাই দ্বিতীয়বার যাওয়ার ঝুঁকি নেওয়ার কোন মানেই নেই। পড়ে রাখলাম "মন্মথের মেলানকোলিয়া"।
ভালো লাগা:
আপনি এভাবে শুরু করেছেন, কাজলীর মন খারাপ, অথবা কাজলীর মন খারাপ নয়! আবার, কাজলী ভাবছে অথবা ভাবছে না, কাঁদছে অথবা কাঁদছে না! শুরুতেই কেমন একটা ঘোর লেগে গেল। ভাবছিলাম কবিতা পড়ছিনাতো? এই ঘোর লাগাটা প্রচন্ড উপভোগ করেছি। সব চেয়ে ভাল লেগেছে আপনি এটাকে কয়েকটা অধ্যায়ে ভাগ করেছেন যার দরুণ কোন প্রকার এক ঘেয়েমি প্রবেশ করবার সুযোগ পায়নি তেমন।
১) সমান্তরাল আখ্যান:
এই অধ্যায়কে পরিচয় পর্ব হিসিবে আখ্যায়িত করা যায়। চরিত্রের সাথে চরিত্রের মেলানকোলিয়া অথবা সহযাত্রীদের সাথে পাঠকের আলাপচারিতা এবং একে অপরকে নিজেদের ভেতর আবিষ্কার করার সুবর্ণ সুযোগ এক!
কাজলী: একজন খুব একাকী লেখিকা অথবা একজন তরুণী যার একাকিত্ব উপভোগ করবার দৃঢ়তা আছে।
বিট্টু: একজন কুকুর অথবা মানুষ।
মিরু: একজন প্রভু অথবা বাবাত্মা।
২) জলের ভেতর ফুটফুটে অন্ধকার:
আপনার সহযাত্রীরা অন্ধকারে চোখ মেলে আলোর প্রত্যাশায় কিছুক্ষণ ডুবে থাকবে এখন।
৩) রুপান্তরের তেপান্তর:
চরিত্রগুলো এবার একটু একটু করে মিশে যাচ্ছে। মিশে গেলেই? শুরু হবে খেলা!
৪) পাশমানবিক:
আপনার সহযাত্রীরা এখন সবাই সম্পূর্ণ নগ্ন। তারা একে অপরের ভেতর ঢুকে গ্যাছে ইচ্ছায়, অনিচ্ছায়।
৫) এসব তোদের মানায় না:
যাত্রাপথে অপরিচিত লোকেদের দেয়া খাবার স্বাস্থ্যের পক্ষে হানিকর। এটা ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না!
৬) নামবিহীন একটি অধ্যায়:
আপনি কোথাও যাচ্ছিলেন? থেমে যান। দেখুন আপনার সহযাত্রীরা কতটা অসহায়! আপনি কি নিজেকে ঈশ্বর ভাবতে পছন্দ করেন? করবেন না। ইহা কর্কট রোগের কারণ!
৭) সমাপ্তির শুরু:
ধরুন প্রচন্ড ধাক্কায় পৃথিবী থেকে ছিটকে গ্যাছেন আপনি। এবার কেমন বোধ করছেন জনাব?
মন্দ লাগা:
মন্দ লাগেনি। আমার কোন কিছুই মন্দ লাগেনা!
ইতি,
স্নেহের হাতুড়ে!
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:১৫