১। একজন পুলিশ
ম্যাচের বাক্সে ঘুমুচ্ছে একজন পুলিশ। পুলিশটাকে কেউ চেনে না। কিন্তু পুলিশটা ঘুমানোর আগে একটা ফতোয়া রেখে গেছেন আমাদের উদ্দেশ্যে।
-ঘুম থেকে ওঠে যদি শুনি আমাকে কেউ চেনেনা, তাহলে সব কটাকে কুত্তা দিয়ে খাওয়াবো।
*
মাঝ রাতের মধ্যে আমরা শহরের সমস্ত কুকুর কুড়িয়ে রেঁধে খেয়ে ফেললাম, যাতে করে কুকুরগুলো আমাদের খেতে না পারে।
*
সকালবেলা পুলিশটার ঘুম ভাঙ্গলে আমাদের প্রশ্ন করলেন,
-আমাকে কে কে চেনে না?
আমাদের মধ্য থেকে একজন উত্তর দিল,
-স্যার আমরা কেউ আপনাকে চিনি না।
-তাহলে এবার তোদের কুত্তা দিয়ে খাওয়াবো।
-স্যার শহরে আর একটা কুকুরও অবশিষ্ট নেই!
আমরা সমস্বরে চেঁচিয়ে জানালাম।
পুলিশটা আমাদের দিকে কিছুক্ষণ হা করে তাকিয়ে রইলেন। তারপর নিজেই একটা কুকুর হয়ে গেলেন।
২। আধজোড়া জুতা ও আসন্নতম দুর্যোগ
সমস্ত কবিদের উপর একবার ভালো করে চোখ বুলিয়ে নিলাম। তারপর শুরু করলাম,
-আপনাদের বেশিক্ষণ বসিয়ে রাখবো না। আমি এখনি ঘোষণা করবো, কে বা কারা হলেন আজকের প্রতিযোগিতায় সৌভাগ্যবান বিজয়ী। আপনারা নিশ্চয় অবগত রয়েছেন, প্রথম পুরষ্কার-একটি গলাকাটা শূকর। দ্বিতীয় ও তৃতীয় যথাক্রমে একটি দুধেল গরু এবং একটি নেংটি ইঁদুর। আপনারা প্রস্তুত?
দেখলাম কবিদের চোখ মুখ হঠাৎ বিষন্ন হয়ে উঠলো। যেন তারা কখনো শূকর খায়না, গরু স্তনে হাত রাখেনা কখনো কিংবা কখনো ইঁদুরের নেংটি খোলেনা। কেউ একজন চিৎকার বলে উঠলেন,
-বাঞ্চোত! ডেকে এনে এরকম ফাইযলামির কি মানে?
একে একে সবাই বিষন্নতা কাটিয়ে পায়ের জুতা হাতে তুলে নিলেন। আমি বলতে চাইলাম,
-ভাইসব। আপনারা জুতা নিজ হাতে তুলে নেবেন না। পরিচারিকাদের জন্য অপেক্ষা করুন।
কিন্তু আমার কন্ঠ রোধ হয়ে এলো জুতার স্তুপের নিচে। আমি গলা উচিয়ে দেখলাম, কবিদের ক্রোধ তখনো কমেনি। তারা বিল্ডিংটাকে ধরে ফেলে দেবার চেষ্টা করছেন কয়েকজন মিলে। আমি আবারো বলতে চাইলাম,
-এটা বিপদজনক। নিজেরাও মরবেন।
এইবার কাজ হলো। তারা চলে যেতে লাগলেন। যাবার আগে গালি দিতে ভুললেন না, শালা নিখাদ শুয়োরের বাচ্চা একটা!
একজন কবি তখনো বসে ছিলেন। যার পায়ে অবশিষ্ট ছিল একমাত্র ছিদ্রযুক্ত আধজোড়া জুতা। আমাকে দেখে জুতাটা খুলে হাতে নিয়ে তার ছিদ্রপথে চোখ রেখে বললেন,
-একবার ছুঁড়বো ভেবেছিলাম কিন্তু মায়া হলো। তাছাড়া এই একটাই জুতা আমার যার ছিদ্রপথে তাকালে পৃথিবীর আসন্নতম দুর্যোগ দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।
-কই দেখি, দেখি!
আমি বিড়ালের মত লেজ নাড়িয়ে জুতাটার ছিদ্রপথে ঠেলে দিলাম দুটি চোখ।
দেখলাম, একজন কবি একটি জুতার একমাত্র ছিদ্রপথে চোখ রেখে আমাকে দেখছেন। যেন আমিই পৃথিবীর সেই আসন্নতম দূর্যোগ।
ছবি: ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:১১