somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"মুড ব্লক" ((হৃদয়ের অর্থহীন কথোপকথন ০৩)

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আপনাদেরও কি এমন হয়? হয়েছে নিশ্চয়ই কখনো না কখনো? আমার অনেকদিন পরপর এমন হয়, হুট করে মনটা কেমন নিথর, নিশ্চল হয়ে যায়। লেখকদের যেমন ‘রাইটার্স ব্লক’ হয়, তেমনই আমার হয় ‘মুড ব্লক’। হুট করে একদিন যে কোন সময় থেকে কোন কিছুই আর ভালো লাগে না, না লাগে মন্দ। কেমন স্তব্ধ হয়ে যায় যেন সব অনুভূতি। কোন কারণ থাকে না এর পেছনে, কারণহীন ‘মুড ব্লক’; অনেক ভেবেও পাই না কেন এমন হল। একবার তো বন্ধুদের সাথে বেড়াতে গিয়ে ঘুরতে ঘুরতে হুট করে ‘মুড ব্লক’; ‘ভাল লাগছে না’ বলে সোজা বাসায় চলে আসি। বন্ধুরা সবাই অবাক, তার চেয়ে বেশী আমি। কেননা, সেবারই প্রথম আমার মাঝে আমি এই প্রব্লেমের অস্তিত্ব বুঝতে পারি। এরপর বছর-দু’বছরে হুট করে একবার এমন হয়ে, তখন কিছুতেই কোন ভাল-মন্দ অনুভূত হয় না। কয়েকদিন এই অবস্থায় কাটে, তারপর হুট করেই আবার যেন আগের মুডে ট্রান্সফার হয়ে যাই, ভাল লাগা, মন্দ লাগা’র অনুভূতি নিয়ে ব্যস্ত এক জীবনে; আর এই ‘মুড ব্লক’ এর রহস্যময় জীবন কোথায় যেন ঘাপটি মেরে লুকিয়ে পড়ে। আবার হুট করে অনাহুতের মত একদিন হাজির হয়। একবার পারিবারিক এক বনভোজনের সব আয়োজন সম্পন্ন করলাম, যেদিন সকালবেলা রওনা হব, সেদিন ভোরবেলা ঘুম ভাঙ্গতেই ভদ্রলোকের আগমন। ফলাফল? সবার শত অনুরোধ উপেক্ষা করে আমি বাসায় বসে রইলাম, আর সবাই গভীর সমুদ্রে পড়ল, 'ঘটনা কি?' এটা ভেবে কোন কূল কিনারা পেল না। প্রোগ্রাম শেষে ফিরে সবাই শুরু করল জেরা, সবার প্রশ্নের উত্তরে কি আর বলা যায়? সবাইকে তো এই বিষয়টা বুঝিয়ে বলা যায় না, তাই না? আমি কি অজুহাত দিয়েছিলাম জানেন? আমার পেট খারাপ হয়েছিল, ‘ডায়রিয়া’!!! :P

তো গত কয়েকদিন ধরে ভদ্রলোক, ভূতের মত ঘাড়ে চেপে বসেছে, সারাদিন কেমন ঝিম মেরে বসে থাকি। কোন কিছু করতে ভাল লাগে না, মন্দও লাগে না। এর মাঝে শরীর অসুস্থ হল, ডাক্তারের কাছে পর্যন্ত যেতে মন চাইল না। শেষে একসময় শরীর বেচারা নিজেই বিরক্ত হয়ে নিজের ব্যবস্থা করে নিল। এই কয়দিনে কোন কিছু লিখতে মন চায় না, ব্লগে ঢুঁকে কোন লেখা পড়তে মন চায় না, এমন কি নিজের পোস্টে থাকা মন্তব্যগুলোর প্রতিত্তর করতেও মন চায় না। হাতের কাছে কিছু বই ছিল পড়তে মন টানে না। ব্যক্তিগত অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজ বকেয়া পড়েছে, সেগুলোর কথা ভাবলে মনে হয়ে, ‘দূর যা হতচ্ছাড়ার দল’। ‘ভ্রমণ সাহিত্যে চোখ বুলাই’ সিরিজের পরের পোস্ট দেয়ার ইচ্ছে আছে অন্নদাশংকর রায় এর ভ্রমন কাহিনী নিয়ে, কিন্তু হাতের পাশে তিনচার দিন ধরে সেই বই নিয়ে বসে আছি, লিখতে বা আরেকবার পড়ে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে না। বারবার টেলিভিশন ছেড়ে চ্যানেল ঘুরাই, কতশত চ্যানেলে কত কিছু দেখায়, কিন্তু কিছুতেই যেন ‘রুচি পাই না’। কি মহা যন্ত্রণায় আছি বলেন তো দেখি। কত কাজ বাকী, কতগুলো নতুন ভ্রমণের প্ল্যান প্রোগ্রাম করা বাকী, এদিকে শীত গেল বলে...

আজ চলছে পৌষ সংক্রান্তি, পুরাতন ঢাকায় সাকরাইন উৎসব, দুই বছর আগেও কত ভাল কাটিয়েছি এই সময়টা। সাকরাইন নিয়ে দু'টো পোস্টও ছিলঃ সাকরাইন - জীবনের উৎসব, প্রাণের উৎসব, ঐতিহ্যের উৎসব , আচ্ছা কেন পৃথিবীটা এতো ছোট হয়? (ছোটগল্প)। আর আজ চুপচাপ বসে আছি নিজের ঘরের চার দেয়ালের মাঝে, হায়রে...

আমি জানি না, এটা কোন মানসিক ক্লান্তি থেকে হয় কি না? কেননা এমনটা অনেক অনেকদিন পর হয়, বছর-দু’বছর এমন কি তারচেয়ে বেশী সময় পরেও হয়। দুই বছর আগে এক ঈদের দিন এমনটা হয়েছিল, এই সিরিজের প্রথম পোস্টও তখনই দিয়েছিলামঃ হৃদয়ের অর্থহীন কথোপকথন। যাই হোক, আশা করি দ্রুত এই হতচ্ছাড়া ‘মুড ব্লক’ দূর হবে। কাশ্মীর সিরিজ শেষ করতে হবে, সিমলা-মানালি সিরিজ শুরু করতে হবে। জমিদার বাড়ী সিরিজের দুটি পোস্ট জমে আছে। গল্প পোস্ট হয় না অনেকদিন, রন্তু সিরিজের পরের পর্ব শুরু করার প্ল্যান। কত কিছু যে করতে চায় এই মন, হায়রে পাগল মন! মন তোরে পারলাম না বুঝাইতে রে, তুই সে আমার পাগল মন।

আসলে কথাটা ভুল, মন'কে আমি নিজেই বুঝতে পারলাম না আজও। :(

এই সিরিজের আগের দুটো লেখাঃ
হৃদয়ের অর্থহীন কথোপকথন
মন খারাপের গল্প (হৃদয়ের অর্থহীন কথোপকথন ০২)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৫
২৫টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মি. চুপ্পুর পক্ষ নিয়েছে বিএনপি-জামাত; কারণ কী?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬


বিএনপি গত ১৬ বছর আম্লিগের এগুচ্ছ কেশও ছিড়তে পারেনি অথচ যখন ছাত্ররা গণহত্যাকারীদের হটিয়েছে তখন কেন বিএনপি চু্প্পুর পক্ষ নিচ্ছে? অনেকেই বলছে সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হবে তার সংগে বিএনপিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এতো কাঁদাও কেনো=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৬




আয়না হতে চেয়েছিলে আমার। মেনে নিয়ে কথা, তোমায় আয়না ভেবে বসি, দেখতে চাই তোমাতে আমি আর আমার সুখ দু:খ আনন্দ বেদনা। রোদ্দুরের আলোয় কিংবা রাতের আঁধারে আলোয় আলোকিত মনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। পৃথিবীকে ঠান্ডা করতে ছিটানো হবে ৫০ লাখ টন হীরার গুঁড়ো

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:০২




জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে বেড়েছে তাপমাত্রা। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। তাই উত্তপ্ত এই পৃথিবীকে শীতল করার জন্য বায়ুমণ্ডলে ছড়ানো হতে পারে ৫০ লাখ টন হীরার ধূলিকণা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×