ফুটবল বিশ্বকাপের "মাসকট"নামা
বিশ্বকাপ ফুটবল এ মাসকট এর ব্যাবহার প্রথম শুরু হয় ১৯৬৬ সালে, ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ দিয়ে। মাসকট মূলত আয়োজক দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির মিশেলে এমন একটা প্রতিকৃতি যা ঐ বিশকাপকে রিপ্রেজেন্ট করে। বিভিন্ন বিশ্বকাপে বিভিন্ন কনসেপ্ট এবং থিম কাজে লাগিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মাসকট সামনে এসেছে। এবারের লেখার বিষয়বস্তু হল একনজরে দেখে নেয়া এযাবৎকালে বিশ্বকাপের মাসকটগুলোকে। আসুন দেখে নেই, সাথে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা।
১৯৬৬
ইউনিয়ন জ্যাক জার্সি পরিহিত সিংহের যে মাসকটটি ১৯৬৬ সালের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের অফিসিয়াল মাসকট ছিলা তা অদ্যাবধি তৈরিকৃত মাসকটগুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা বলে গণ্য হয়। সিংহ হল ইংল্যান্ড এর প্রতীক এবং সেই মাসকটের পরিহিত জার্সিতে world cup শব্দটি লেখা ছিল। World Cup Willie নামক এই মাসকটটির ডিজাইনার ছিলেন প্রখ্যাত ফ্রিল্যান্স শিশুতোষ বইয়ের চিত্রশিল্পী Reg Hoye।
১৯৭০
১৯৭০ এর মেক্সিকো বিশ্বকাপের অফিসিয়াল লোগোটির নাম ছিল ‘Juanito’। এটি একটি মেক্সিকান ঐতিহ্যবাহী সবুজ জামা পরিহিত বালক যে মাথায় পড়েছিল মেক্সিকান ‘sombrero’ নামক টুপি যেখানে লেখা ছিল ‘MEXICO 70’। এটা ছিল বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম রঙিন মাসকট।
১৯৭৪
১৯৭৪ এর পশ্চিম জার্মান বিশ্বকাপের মাসকটে ছিল নতুনত্ব। একের বদলে এখানে ছিল দুইটি বালক। উভয় বালক পরিহিত ছিল পশ্চিম জার্মানের জার্সি যার একটাতে লেখা ছিল ‘WM (Weltmeisterschaft শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ যার অর্থ World Cup)’ এবং অন্যটিতে লেখা ছিল বিশ্বকাপের সাল ‘74’। এই মাসকটটির নাম ছিল ‘Tip and Tap’।
১৯৭৮
১৯৭৮ এর আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের মাসকট এর নাম ছিল ‘Gauchito’। পরপর তিনবারের মত মনুষ্য বালক মাসকট হিসেবে ব্যাবহার করা হয়। আর্জেন্টিনা দলের জার্সি পরিহিত একটি বালক যার জার্সিতে লেখা ছিল ‘ARGENTINA 78’। এই বালকের গলায় বাঁধা ছিল একটা রুমাল আর হাতে ছিল একটা ‘whip’; আর্জেন্টিনার ঐতিহ্যবাহী একধরণের চাবুক। একটি ফুটবলের উপর পা দিয়ে দাঁড়ানো বালকের এই মাসকটটি মানুষের মনে স্থান করে নেয়।
১৯৮২
স্পেনের প্রচলিত ফল কমলা, এই কমলার গায়ে স্পেন জাতীয় দলের জার্সি পরিহিত মাসকটটি ছিল ১৯৮২ এর বিশ্বকাপ মাসকট। এর নাম ছিল ‘Naranjito’। এই নামটি এসেছে ‘naranja’ থেকে যার ইংরেজি অর্থ কমলা।
১৯৮৬
পরবর্তী ১৯৮৬’র মেক্সিকো বিশ্বকাপের মাসকটটির নাম ছিল ‘Pique’ যা এসেছিল একটি দৈত্যাকৃতির মরিচকে কেন্দ্র করে যা মেক্সিকোতে খুবই জনপ্রিয়। এর নামটি নেয়া হয়েছিল স্প্যানিশ শব্দ ‘picante’ হতে ‘Pique’ নামটির উৎপত্তি যার অর্থ খুব ঝাল এক ধরনের মরিচ।
১৯৯০
ইতালিতে অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপের মাসকটটি তৈরি হয় কতগুল লাঠিখণ্ডকে মানুষের অবয়ব দিয়ে। প্রতিটি লাঠিখণ্ড ইতালির পতাকার রঙয়ে রঞ্জিত ছিল। মানব আকৃতির এই ফুটবল খেলোয়াড়ের মাথা হিসেবে ব্যাবহার করা হয় একটি ফুটবল। এই মাসকটটির নাম ছিল ‘Ciao’ যা ইতালীয় ভাষায় এক ধরনের বিশেষ সম্ভাষণ।
১৯৯৪
১৯৯৪ এর আমেরিকা বিশ্বকাপ এর লোগো ছিল একটি পোষা প্রাণী, কুকুর। লাল, সাদা এবং নীল রঙের জার্সি পরিহিত এই মাসকটের জামায় লেখা ছিল ‘USA 94’। এর নাম ছিল ‘Striker, the World Cup Pup’।
১৯৯৮
১৯৯৮ এর ফুটবল বিশ্বকাপের মাসকট ছিল ‘Footix’। ফ্রান্সের প্রচলিত Gallic rooster. এর আদলে তৈরি এই মাসকটটি ছিল এযাবৎ কালের সবচাইতে কালারফুল মাসকট। নীল রঙের শরীর বিশিষ্ট এই মাসকট এর লাল রঙের মাথায় হলুদ ঠোঁট একে বিশেষত্ব দান করে। এর বুকে গাঢ় নীল রঙের একটি ব্যানারে সাদা রঙে লেখা ছিল ‘FRANCE 98’।
২০০২
কমলা, বেগুনী এবং নীল রঙের তিনটি কম্পিউটার গ্রাফিক্স এর দ্বারা তৈরি ভিন্ন ভিন প্রাণী সদৃশ আকৃতি নিয়ে তৈরি হয় এই বিশ্বকাপের মাসকট। যা এযাবৎ কালের সবচেয়ে নিম্নমানের মাসকট হিসেবে বিবেচিত হয়। Ant, Kaz and Nik নামের এই মাসকটটির নাম নির্বাচিত হয় জাপান এবং কোরিয়ায় অবস্থিত ম্যাগডোনাল্ডস এর আউটলেটে আগত ক্রেতাদের ভোটে।
২০০৬
‘Goleo VI & Pille’ নামক জার্মান বিশ্বকাপের এই মাসকট গত পাঁচটি বিশ্বকাপের মধ্যে সেরা নির্বাচিত হয়েছে ফিফা’র অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে প্রদত্ত ভোটে। ২০০২ এর বাজে মাসকট এর পর বিশ্বকাপ আবার ফিরে পায় সেই ট্র্যাডিশনাল মাসকট। সিংহের গায়ে জার্মান দলের জার্সি পরিহিত এই মাসকট ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এর নাম ছিল Goleo VI আর ফুটবলের মধ্যে চোখ বসিয়ে এর সাথে ছিল Pille। এই Pille ছিল মজার চরিত্র, সে Goleo এর সাথে কথা বলত।
২০১০
দক্ষিণ আফ্রিকার এই বিশ্বকাপের মাসকট ছিল ‘Zakumi’। এই নামে Za রিপ্রেজেণ্ট করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আর kumi দ্বারা আফ্রিকার অনেক আঞ্চলিক ভাষায় দশ (১০) বুঝায়। এর সবুজ এবং সোনালি রঙ দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় ফুটবল দলের জার্সির রঙকে রিপ্রেজেন্ট করে।
২০১৪
‘armadillo’ নামক এক প্রকার ট্র্যাডিশনাল প্রাণীকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে এবারের বিশ্বকাপের মাসকট যার নাম ‘Fuleco the Armadillo’। আঞ্চলিক শব্দ Futebol যার অর্থ football এবং Ecologia যার অর্থ Ecology হতে এই নামের উৎপত্তি। Futebol হতে নেয়া হয়েছে Ful আর Ecologiaহতে নেয়া হয়েছে eco। এই মাসকট এর দ্বারা ব্রাজিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এবারের বিশ্বকাপ হবে পরিবেশ বান্ধব এমনটাই ব্রাজিলবাসীদের বিশ্বাস। নীল রঙের আঁচড় দিয়ে স্বচ্ছ আকাশ এবং পরিস্কার জল বুঝানো হয়েছে। পরিবেশ বাঁচানোর আন্দোলনকে মাথায় রেখে এই মাসকটটি ডিজাইন করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এই মাসকটটি ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে অন্যতম একটি মাসকট হিসেবে জায়গা করে নেবে।
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মপোলব্ধি......
আত্মপোলব্ধি......
একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !
হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।
আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।
আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন