মতো দরিদ্র দেশের জন্য এটি একটি ইতিবাচক ব্যাপার। কিন' সেভাবে কি আমাদের দেশে দাবা চর্চা হয়? কখনই না। দাবার প্রতি অনেকেরই একটু-আধটু আগ্রহ থাকে। দুঃখের বিষয় হলো সেই আগ্রহটা খুব বেশিদূর গড়ায় না। এর সবচেয়ে বড়ো কারণ হলো প্রচারণা। ক্রিকেট-ফুটবল টুর্নামেন্টের আগে যেভাবে প্রচার চালানো হয় সেটি কিন' দাবায় বেলার একেবারে অনুপস্থিত।
বাংলাদেশের দাবাকে সমৃদ্ধ করতে ছড়িয়ে দিতে হবে দেশব্যাপী। জেলায় জেলায় আয়োজন করতে হবে বয়সভিত্তিক দাবা টুর্নামেন্ট। উঠতি দাবাড়-দেরকে দিতে হবে নিয়মিত প্রশিক্ষণ। এই সব কার্যক্রমের মাধ্যমেই বের হয়ে আসবে প্রতিভা। আর প্রয়োজনে এইসব প্রতিভা বিকাশে পাঠাতে হবে বিদেশে।
দাবা খেলায় মেয়েরা সে যথেষ্ট পারদশর্ী তার জলজ্যানত্দ প্রমাণ হলেন রানী হামিদ। বলা চলে আমাদের দেশের মেয়ে দাবাড়-দের প্রথপ্রদর্শক তিনি। যেহেতু দাবা একটি ইনডোর খেলা সেহেতু এখানে মেয়েদের অনেক বেশি সম্পৃক্ততা থাকা উচিত ছিল। কিন' বাসত্দবতা ভিন্ন। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ব্যতীত তেমন কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন হয় না মেয়েদের। ফলে আমাদের দেশে যে দুজন গ্র্যান্ড মাস্টার তারা দুজনই পুর"ষ। রানী হামিদের উত্থানের পর উত্থান হয়েছিল নীপার। আর এখন বিশেষ করে উল্লেখ করতে হয় লিজার কথা। মেয়েটি অল্প বয়সে যথেষ্ট নজরকাড়া নৈপুন্য প্রদর্শন করছে। তবে বর্তমানে আমাদের দেশীয় দাবায় মেয়েদের অংশগ্রহণ একেবারে সীমিত। এমনটা হলে কিন' দাবার যে ব্যাপক উন্নয়ন করার কথা বলা হচ্ছে সেটা সম্ভব নয়। দাবা খেলায় মেয়েদের ব্যাপক পদচারণা সবার কাম্য।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের দাবা কক্ষে গেলে দেখা যায় অনেক ছোট ছোট ছেলেমেয়েকে। এরা নিয়মিত এসে থাকে এখানে। দাবার প্রতি ভালোবাসা আছে বলেই এমনটা হয়। তবে দুঃখের বিষয় হলো এই বাচ্চাদের দাবার প্রতি আগ্রহটা খুব বেশিদিন টিকে থাকে না। যেন টিকে থাকে সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে ফেডারেশনকে। দাবা কক্ষে অবশ্য কিছু ছেলেমেয়েকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তবে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে আসা অভিভাবকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায় যে, তারা চান প্রশিক্ষণ পরিধি যেন আরো বিসত্দৃত হয়। যাতে কমবেশি সবাই উপকৃত হবে। সেই সঙ্গে দাবার প্রতি ভালোবাসাও হবে তীব্র।
সারা বাংলাদেশের দাবার প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের দাবা কক্ষ। কক্ষটি একেবারে ছোট নয়। তবে যদি এ রকম সুযোগ-সুবিধাসহ আরো কয়েকটি কক্ষ থাকতো তবে দাবার উন্নয়নে আরো সহায়ক হতো বলে অনেকের ধারণা। শোনা যাচ্ছে দাবার জন্য নাকি নতুন ভবন তৈরি হবে। যদিও এখন পর্যনত্দ কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তারপরও যদি এটি বাসত্দবায়িত হয় তাহলে বাংলাদেশের দাবা পদার্পণ করবে ভিন্ন এক যুগে। অনেকে অভিযোগ তোলেন যে, দাবার প্রতি মিডিয়ার তেমন আগ্রহ নেই। তাদের অবগতির জন্য বলা উচিত যে, মিডিয়া কখনই এমন মনোভাব পোষণ করে না। মিডিয়ার কাজই যে কোনো জিনিসকে জনগণের কাছে উপস্থাপন করা। কিন' উপস্থাপনের মতো বিষয়বস' যদি না থাকে তবে মিডিয়ার করণীয় কি আছে কিছু?
বাংলাদেশে দাবার সম্ভাবনা প্রচুর। এর মাধ্যমে বিদেশ থেকে তুলে আনা যায় অনেক সাফল্য। এসবের জন্য শুধু প্রয়োজন দাবার প্রতি একটু বিশেষ যত্ন। দাবার প্রতি মানুষের আগ্রহকে জাগিয়ে তোলা। নিতে হবে নিত্যনতুন সব উদ্যোগ। ফেডারেশন যদি সেভাবে দাবার কথা চিনত্দা করে তবে দাবার উন্নতি হবেই। এতে বিন্দুমাত্র কোনো সন্দেহ নেই।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০