নানান ছুতায় ছুটির দিনে ব্যাংকগুলো খোলা রাখা এখন একটা কালচার হয়ে গেছে। সর্বশেষ আজ শবে কদরের বন্ধের দিন গার্মেন্টস এলাকায় ব্যাংকের শাখাগুলোকে খোলা রাখতে বলা হয়েছে। তাও আবার পূর্ণ দিবস। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, ব্যাংক খোলা রাখার নির্দেশ যে জারি করলো, সেই সেন্ট্রাল ব্যাংক নিজেই বন্ধ। আসুন দেখি তাতে মূল উদ্দেশ্য কতটুকু পূরণ হতে পারে।
***
আজ ব্যাংক খোলা রাখার মূল উদ্দেশ্য হলো গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন-ভাতা প্রদান। খুবই ভালো। গার্মেন্টস মালিকরা সব সময় ঈদের আগের দিনই কেন কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেবে, সে প্রশ্ন কেউ তোলে না। প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠান বা ইন্ডাস্ট্রির বেতন দেয়ার একটা দিন থাকে। সেটা ৩০-৩১ তারিখ, ১ তারিখ, ৫ তারিখ, ১০ তারিখ, ১৫ তারিখ—একটা নির্দিষ্ট দিন তো হবে। না, গার্মেন্টস মালিকরা যা বলবে তাই। তারা ঈদের আগের দিন ছাড়া বেতন-বোনাস দিতে পারে না।
ঠিক আছে, ভালো কথা। তো এখন আমি একটা গার্মেন্টসের মালিক। আমি ব্যাংক থেকে ক্যাশ তুলে শ্রমিকদের বেতন দেবো, তাই তো? কিংবা আমার অ্যাকাউন্ট ডেবিট হয়ে শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে বেতনের টাকা জমা হবে, এই তো? এখন আমি বিভিন্ন পার্টির কাছে টাকা পাই। একেক পার্টি একেক ব্যাংকের চেক দিয়েছে। আমার অ্যাকাউন্ট ডাচ-বাংলায়। পার্টিরা চেক দিয়েছে পূবালী, ইসলামী, ওয়ান, ইস্টার্ন—সব ব্যাংকের। এই চেকগুলোকে ক্যাশ করতে হলে বা আমার অ্যাকাউন্টে জমা করতে হলে ক্লিয়ারিং করতে হবে। কিন্তু ক্লিয়ারিং হাউজ তো বন্ধ। তাহলে ব্যাংকগুলো খোলা রেখে লাভ হলো কী? কিংবা ধরুন আমার অ্যাকাউন্ট ডেবিট হয়ে ইএফটি বা এনপিএসবির মাধ্যমে শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে টাকা যাবে। এগুলোর জন্যও একই কথা প্রযোজ্য। আজকে আমি বেতন দিলেও শ্রমিকরা আজ আর পাবে না।
***
আবার আমি যে ব্যাংক থেকে ক্যাশ আনবো সে ব্যাংকে এই মুহূর্তে তারল্য সংকট আছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তার ক্যাশ আনা দরকার। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক বন্ধ। তাহলে ব্যাংক কীভাবে আমাকে ক্যাশ প্রদান করবে?
***
বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে এ প্রশ্নগুলোর সুস্পষ্ট জবাব আসা দরকার।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:২৫