অপারেশনের পরে ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ মত ডিমের সাদা অংশ খেতে হবে প্রতিদিন সকালে।সাদা অংশ তো ডিম থেকে আলাদা করা যাবেনা তাই পুরো ডিম ই আমাদের কিনতে হয়।আবার পুরো ডিমকেই পানিতে গরম করে সিদ্ধ করতে হয়!
তো যা বলতেছিলাম,গতকাল সকালে আমাকে দুইটা ডিম দেওয়া হল।আমি শুধু সাদা অংশটা খাবো। বাকিটা বাচ্চা খেয়ে ফেলে প্রায় সময় ই।নয়ত বউ!
দুইটা ডিমের মধ্যে একটাকে দেখলাম একটু লম্বাটে।বউকে জিজ্ঞেস করে কোন সদুত্তর পেলাম না।শালা এর আগের রাতেই দোকান থেকে কিনে এনেছে।সেও এই ব্যাপারে তেমন অভিজ্ঞ না।
তাই খেয়েই ফেললাম।
রাতের বেলা মেয়েকে ভাত খাওয়াবার সময় মেয়ের মা খেয়াল করল ডিমে কোন গন্ধ নেই।এবং ডিমের কোন স্বাদ ও নেই।অর্ধেকের মত খাওয়ানোর পরে সেটা ফেলে দিল।পরে বাকি ডিমগুলো ও চেক করে দেখল।ডিমের যে আঁশটে গন্ধ সেটা একদম ই নেই।উলটো ঘামের গন্ধ বের হয় ডিম থেকে।
তারপরে এই বিষয়ে জানার জন্য ফেসবুকে জিজ্ঞাসা করলাম।ভাই বেরাদরেরা যা জানালো তাতে অবাক না হয়ে পারলাম না।
বিজ্ঞানের একি অপব্যাবহার শুরু করলাম আমরা?
আমরা মানুষের পর্যায়ে আছি কি না সেটা নিয়েই সন্দেহ হতে লাগল।
টাকা পয়সার জন্য হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রানকে কুরবানি করে দিচ্ছি আমরা এভাবে?
সরকার থেকে কঠিন কোন পদক্ষেপ কি এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে?কারা আনতেছে এই ডিম বাংলাদেশে?
কৃত্রিম উপায়ে তৈরী এই ডিম খেলে ক্যান্সার থেকে শুরু করে কিডনিও নষ্ট হয়ে যেতে পারে আপনের।
আমরা শাক সব্জিতে বিষ মেশাচ্ছি।নকল ডিম খাওয়াচ্ছি মানুষকে।
এর ফলাফল কি হবে সেই ধারনা আছে আমাদের?
আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের কতটুকু ক্ষতি আমরা করে যাচ্ছি এইসব নিরবে সয়ে সেই খবর কি রাখি আমরা?
এই ফরমালিন মেশানো খাদ্যদ্রব্য খেয়ে আগামি কয়েকবছরে যেসব মহামারী রোগের প্রকোপ হবে সেই রোগের কোন প্রতিষেধক কি আছে?
ফরমালিনের এফেক্ট হিসেবে কয়েকবছর পরেই গণহারে কিডনি রোগী ধরা পরবে।
আর কিডনি রোগ একবার হইলে এটা সারানোর কোন উপায় এখনো বিজ্ঞান বের করতে পারেনাই।সারাজীবন আপনাকে রোগী হিসেবেই কাটাতে হবে।
ডায়ালাইসিস করাইলে ডায়ালাইসিসের পেশেন্ট।আর ট্রান্সপ্ল্যান্ট করাইলে ট্রান্সপ্ল্যান্টের পেশেন্ট।
আইডিয়া আছে একজন কিডনি রোগীর জীবন কিভাবে যায়?কতশত কিডনি রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে এই বাংলাদেশে?
প্রতিদিন কতজন নতুন রোগি যোগ হচ্ছে এই মরণব্যাধিতে সেইখবর আছে আমাদের?
এদের চিকিৎসার কোন ব্যাবস্থা কি আমাদের আছে?
পর্যাপ্ত ডায়ালাইসিস সার্ভিস দেওয়ার মত ব্যাবস্থা ই নাই আমাদের দেশে।
যেই দেশের প্রত্যেকটি হসপিটালে কমপক্ষে৮ থেকে ১০টির মত ডায়ালাইসিস মেশিনের দরকার সেইদেশে সরকারি হসপিটালে ডায়ালাইসিসের মেশিন ই নাই।
এই রোগ হলে চিকিৎসার জন্য আপনাকে বিভাগিয় শহরে যেতে হবে।এছাড়া বিকল্প কোন রাস্তা নাই শ্বাস্কষ্টে মৃত্যু ব্যাতিত।
শ্বাষকষ্ট শুরু হলে এই রোগীকে ঢাকায় আনতে আনতেই তার জান বের হয়ে যাবে।হাসপাতাল কতৃপক্ষ আপনাকে সেই রোগীর লাশ সহ ফেরত পাঠাবে।
তারপরেও একটু লোভ আর লাভের জন্য আমরা মানুষকে এই মরণব্যাধির দিকে ঠেলে দিব?
যেসব এলাকা কৃষিপ্রধান সেইসব এলাকার আমপাবলিক কি মানুষ মনে করেনা নিজেদের?
আছেন নাকি কোন ভাই বেরাদর যারা এই ব্যাপারে অগ্রসর হবেন?
এলাকার কৃষক ভাইদের দ্বারে দ্বারে যাইবেন?
রাজনীতিবিদ আর ব্যাবসায়িরা এই দেশটাকে কোথায় নিয়ে যাবে সেটা তো বুঝতেই পারছেন।
নিজের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে রাস্তায় নামতে হবে আমাদের ই।
নিশ্চয় প্রত্যেক কৃষক ই কারো বাবা দাদা নানা চাচা?
আমরা সেই অধিকার নিয়েই তাদের কাছে যাই চলেন।
আমাদের পরবর্তি প্রজন্মকে একটা সুন্দর সুস্থ্য জীবনের জন্য আমরা কি পারিনা এইটুকু করতে?
আমি এই লেখা ছাড়া আর কিছুই করতে পারবোনা।কারন আমি নিজেই এই মরণব্যাধিতে আক্রান্ত।
আপনাদের শুধু সতর্ক ই করতে পারব আমি।
কিন্তু আপনারা চাইলে অনেক কিছুই সম্ভব।
অনেক কিছু মানে অনেক কিছু।একটা প্রজন্মকে আপনেরা বাঁচাতে পারেন এই মরণব্যাধি থেকে।
একটু সদিচ্ছার প্রয়োজন।
আজকে থেকেই চলেন না শুরু করি।
নকল ডিম ভেজাল খাদ্য এসবে যারা জড়িত তাদেরকে তাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা মনে করিয়ে দেই।
সবশেষে এক ফেসবুক ভাইয়ের ছোত একটা নোট যোগ করে দিচ্ছি।
***********************************
কীভাবে চিনবেন নকল ডিম?
May 1, 2015 at 6:26pm
বাজারে এখন নকল ডিমের ছড়াছড়ি। এ বিষয়টিকে কিছুতেই উড়িয়ে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিপুল পরিমাণ নকল ডিম ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশে-ভারত-মায়ানমার সহ আশেপাশের বিভিন্ন দেশে। বাণিজ্যিকভাবে নকল ডিমের ব্যবসা বেশ লাভজনক হওয়ায় নানা মহল এখন মাঠে নেমেছে। মায়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট মর্নিং নিউজ এজেন্সি-সহ বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে এ বিষয়টি। বাংলাদেশের রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় ভালো ডিমের সাথেই দেদারছে বিক্রি হচ্ছে এ ডিম। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী ‘দ্য ইন্টারনেট জার্নাল অফ টক্সোকোলজি’তে কৃত্রিম ডিম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া আছে। তাতে অবশ্য একথাও বলা আছে যে, কৃত্রিম ডিমে কোনও খাদ্যগুন নেই। নেই কোনও প্রোটিন নেই। বরং তা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে আসে এ বিষাক্ত ডিম তৈরিতে ক্যালসিয়াম কার্বনেট, স্টার্চ, রেসিন, জিলেটিন ব্যবহার করা হয়। যা মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। স্নায়ুতন্ত্র ও কিডনিতে সমস্যা হতে এবং ফুসফুসের ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগের সৃষ্টি করে নকল ডিম।
কীভাবে চিনবেন নকল ডিম? নকল ডিমের আকৃতি অন্য ডিমের তুলনায় তুলনামূলক লম্বাটে ধরণের হয়ে থাকে।
নকল ডিমের কুসুমের চারপাশে রাসায়নিকের পর্দা থাকে বিধায় অক্ষত কুসুম পাওয়া গেলে সেই কুসুম কাঁচা কিংবা রান্না অবস্থাতে সহজেভাঙতে চায় না।
কৃত্রিম ডিম অনেক বেশি ভঙ্গুর। এর খোসা অল্প চাপেই ভেঙে যায়।
এই ডিম সিদ্ধ করলে কুসুম বর্ণহীন হয়ে যায়। ভাঙার পর আসল ডিমের মতো কুসুম এক জায়গায় না থেকে খানিকটা চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় পুরো কুসুমটাই নষ্ট ডিমের মত ছড়ানো থাকে।
কৃত্রিম ডিম আকারে আসল ডিমের তুলনায় সামান্য বড় এর খোলস খুব মসৃণ হয়। খোসায়
প্রায়ই বিন্দু বিন্দু ফুটকি দাগ দেখা যায়।
রান্না করার পর এই ডিমে অনেক সম্যেই বাজে গন্ধ হয়। কিংবা গন্ধ
ছাড়া থাকে। আসল কুসুমের গন্ধ পাওয়া যায় না। নকল ডিমকে যদি আপনি সাবান বা অন্য কোন তীব্র গন্ধ যুক্ত বস্তুর সাথে রাখেন, ডিমের মাঝে সেই গন্ধ ঢুকে যায়। রান্নার পরেও ডিম থেকে সাবানের গন্ধই পেতে থাকবেন।
নকল ডিমের আরেকটি উল্লেখ্য যোগ্য লক্ষণ হলো ডিম দিয়ে তৈরি খাবারে এটা ডিমের কাজ করে না। যেমন পুডিং বা কাবাবে ডিম দিলেন বাইনডার হিসাবে। কিন্তু রান্নার পর দেখবেন কাবাব ফেটে যাবে, পুডিং জমবে না।
সানাউল্লাহ তুষার ভাইয়ের টাইমলাইন থেকে।
**************************************************
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪২