somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিল বিল - আর এন যিরো উয়ান

২৯ শে মে, ২০১৬ সকাল ১০:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এর নাম ব্ল্যাক মাম্বা।
নিক নেইম কিল বিল।
পৃথিবীর ভয়ংকরতম সৃষ্টির মধ্যে একটি।
বিষাক্ত। ফ্যাসিনেইটিং।
হ্যান্ডেল করার ক্ষমতা প্রায় কারুর-ই নেই।
এর সামনে পড়লে মানুষ আর নড়াচড়া করতে পারে না। চলৎশক্তি হারিয়ে ফেলে।
না। মাম্বা তাঁকে বেঁধে ফেলে না। কিংবা গল্পও জুড়ে দেয় না।

এর চলাচলের মধ্যে ভয়ংকর এক গা চমচমে ভাব আছে। পিচ্ছিল... দ্রুত। এই আছে তো এই নেই। মুহূর্তেই সামনে থেকে উধাও তো পরক্ষনেই আবার হাজির। কোথা দিয়ে যায় আর কোথা দিয়ে আসে, আল্লাহ্ মালুম। সারা শরীরটাকে ঘাসের মধ্যে ঢুবিয়ে দিয়ে হাত দুয়েক মাথা উপরে রেখে ডানে বায়ে প্যাঁচ খেয়েই তুলে ঢেউ ... সর্পিল ঢেউ। প্রায় বিদ্যুৎগতি। চোখে ধাঁধিয়ে দেয়। লিকলিকে হালকা, লম্বা। আফ্রিকার সবচে’ লম্বা আর গোটা বিশ্বের বিষধরদের মধ্যে দ্বিতীয়। গড় দৈর্ঘ ২.৫ মিটার এবং সর্বোচ্চ দৈর্ঘ ৪.৩ মিটার।

ব্ল্যাক মাম্বার কুখ্যাত এই চেহারা দেখে স্থির হয়ে যায় মানুষ।
বুঝতেও পারে না কখন তাকে দংশন করে, সেকেন্ডের ভগ্নাংশের মধ্যে হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে।
যখন বুঝতে পারে তখন সে মৃত।

একে হ্যান্ডেল করার চেস্টা করেছেন অনেকেই। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে। তবে মাম্বা, মাম্বা-ই। দ্যা গ্রেইট। তাকে বশে আনা সহজ না। লেজের উপরে ভর করে যখন কোন মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে যায় তখন মানুষের চোখ আর তার চোখ চলে আসে সমান্তরাল। কুঁচকুঁচে কালো চোখ মেলে নির্মিমেষ থাকিয়ে থাকে; পলক পড়ে না। পলক নেই-ই। পড়বে কোত্থেকে। এই দৃশ্য দেখলে আত্মারাম এম্নিতেই খাঁচা ছাড়া। মানুষ দৌড় দিতেও ভুলে যায়। আর দৌড়িয়েও লাভ নেই। এ মানুষের চেয়ে বেশি স্পিডে ছোটে। গোটা পৃথিবীর তামাম সাপেদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগামী। ঘন্টায় ১৯.৫ কিলোমিটার গতিবেগ।

আপনি আফ্রিকা গেলে এর সাথে দেখা হতে পারে যে কোন রাস্তা ঘাটে, ফসলের মাঠে কিংবা আপনার হোটেলে। অনেক সময় মানুষের হোটেলেও চলে আসে ব্ল্যাক মাম্বা। বাথরুমে কিংবা বেডরুমের কোনো এক র‍্যাকে উঠে বসে থাকে চুপচাপ। ইথিওপিয়া, কেনিয়া, বতসোয়ানা, উগান্ডা, জাম্বিয়া, জিম্বাবুয়ে, অ্যাঙ্গোলা,নামিবিয়া, মালাউই, মোজাম্বিক, সোয়াজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, এবং কঙ্গোতে এর বিচরণ বেশি। সাভানা অঞ্চল, কাষ্ঠল বণাঞ্চল, এবং শিলাময় অঞ্চল এদের প্রিয় আবাস।


সাউথ আফ্রিকান ক্রিকেটার ডেইল ষ্টাইন গাড়ী নিয়ে এর সাথে ধাক্কা খান। তিনি ভেবেছিলেন সাধারণ সাপ। তাই আহতকে রক্ষা করতে গাড়ি থেকে নেমে যান এবং যেইমাত্র উপল্বধি করেন ইনি আসলে তিনি! মুহূর্তে তা সারা বিশ্বের সংবাদ হয়ে উঠে। শিরোনামঃ Dale Steyn survives Black Mamba scare.

বিশ্ববিখ্যাত দু’একজন চার্মার অবশ্য সাকসেসফুলি হ্যান্ডেল করেছেন একে। তারা হলেন শিল্পি। শৈল্পিক তালে তালে খেলেছেন এর সাথে। সে এক অদ্ভুদ খেলা। জীবনকে হাতে রেখে মৃত্যুর সাথে খেলা। তাঁদের মধ্যে অস্টিন স্টিভেন, স্টিভ আইরুইন উল্লেখযোগ্য। নীচের ছবিতে একজন মানুষকে দেখা যাচ্ছে সাক্ষাত এই মৃত্যুদুতের মুখোমুখি বসে পোজ দিচ্ছেন। ইনি অস্টিন স্টিভেন। এবং তাঁর সামনে ফনাতুলে দাঁড়ানো ব্ল্যাক মাম্বাটি একটি পুরপুরি বন্য সাপ। দেখে মনে হচ্ছে তারা বুঝি কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলাপ আলোচনায় রত আছেন। আসলে তা না। একটু বেগতিক দেখলেই আত্মরক্ষার্থে বিনা দ্বিধায় ছোবল হানবে সাক্ষাৎ যমদুত। মৃত্যু তখন থাকবে আর মাত্র ২০ মিনিট দূরে!


তবে মনে রাখা ভালো, দুনিয়ার কোনো সাপ-ই খামোখা মানুষকে কামড়াতে আসে না। নিজেরা কেবল হুমকির সম্মুখীন হলেই প্রকৃতির নিয়ম মেনে এরা আক্রমণাত্মক হয়। বনের কঠিন আইন হলো, শুধু শুধু কাউকে আক্রমণ করা যাবে না। তোমার বিষ আছে বলেই তোমি নির্বিষ সবাইকে দংশন করে গোটা বনে ত্রাস সৃষ্টি করবে, তা হবে না। নো এন্ড নেভার; অ্যান্ড ইটস ফ' এভার!
বনে বাস করতে হলে বনের নিয়ম মানতেই হবে এবং মানেও সবাই। প্রয়োজন ছাড়া মাম্বা তার মৃত্যুবান ছোড়ে না। অকারনে কাউকে আক্রমণ করে না। করতে পারবে না। এটাই প্রকৃতির নিয়ম।

তবে মানুষ বুদ্ধিমান প্রাণী। অন্যান্য সৃষ্টির উপর নিজের শ্রেষ্টত্ব কায়েম করাই যার স্বভাব। “ কাইট্টা ছিল্ল্যা লবন লাগাইয়া দিমু” টাইপ মানুষেরা মাম্বার চামড়ার তৈরি জুতা পরে মচমচ করে হাঁটেন আফ্রিকার মাটিতে, জঙ্গলের পাশ দিয়ে। আবার অনেকে তাঁর প্রিয় মোবাইলের কাভার লাগান এর চামড়া দিয়ে। ভাবখানা এমন , আই অ্যাম আ হিউম্যান বিইং এন্ড অভকৌর্স সুপিরিয়র দ্যানিউ।

সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০১৬ সকাল ১০:২০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা নিয়োগ কারা দেয় ?

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

বৈষম্যবিরোধি আন্দোলনের সফল পরিসমাপ্তির পর আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেরা ডক্টর ইউনুসকে দেশের ক্ষমতা গ্রহন করার আহবান সেই শহীদ মিনার থেকেই জানিয়েছিল। ডক্টর ইউনুস প্রথমে অরাজি হলেও পরে ছাত্রদের হাজারো অনুরোধের মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমুখী একটি চাওয়া

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২০


মানুষের মুখে হাসি ফুটুক,
আঁধার মুছে আলোর ছোঁয়া,
ক্লান্তিহীন পথ চলুক,
নতুন স্বপ্ন আনবে জোড়া।

দিনবদলের শপথ নিয়ে,
কাঁধে কাঁধ মিলে কাজ করে যাই,
নদীর স্রোতে ভেসে ভেসে
একটি স্রোতে মিলিয়ে যাই।

সবার তরে সমান বিচার,
ধনীর দুঃখীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলার একমাত্র অভিশপ্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ

লিখেছেন জ্যাকেল , ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৫০

২৩শে জুন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব জনাব সিরাজ উদ দৌলা ব্রিটিশদের কাছ হেরে যান কেবলমাত্র মীরজাফর, জগৎশেট, রাজভল্লভ, ঘষেটিদের কারণে। বাংলার ইতিহাসে এই দিনটি একটি অভিশপ্ত দিন। এর পর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের গ্রামের বিয়ের বর দেখা

লিখেছেন প্রামানিক, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৩


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

একদিন পরেই শুক্রবার। সকালেই বাবাকে ঐ বাড়ির ঘরবর (অর্থাৎ বর দেখা অনুষ্ঠানকে আঞ্চলিক ভাষায় ঘরবর বলে) উপলক্ষে ডাকা হয়েছে। বাবা সকালে গিয়ে বর দেখা উপলক্ষ্যে কি কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওবায়েদুল কাদের কি মির্জা ফখরুলের বাসায় আছেন?

লিখেছেন রাজীব, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮

"পালাবো না, পালিয়ে কোথায় যাবো? দরকার হলে মির্জা ফখরুলের বাসায় আশ্রয় নেবো। কি ফখরুল সাহেব, আশ্রয় দেবেন না?" ওবায়েদুল কাদের একটি জনসভায় এই কথাগুলো বলেছিলেন। ৫ই আগষ্টের পরে উনি মির্জা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×