পুরুষরা কান্না করার অধিকারটুকু নিয়ে জন্মায় না, জন্মাতে পারে না। জন্ম প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপে যখন শুক্রাণু-ডিম্বাণু একটি মানুষে রূপ নেয়, আর সে মানুষ টি যখন পুরুষ হয় তখন ঈশ্বর নিজ হাতেই তার চোখের পানি গুলো সরিয়ে নেয়। সে কান্না করার অধিকার থেকেও বঞ্চিত। তাকে কান্না করতে দেওয়া হবে না। কান্না করা তার সাথে যায় না। প্রচণ্ড রকমের দুঃখেও তাকে কাঁদতে দেখা যায় না।
শুধুমাত্র জন্মের সময় সে কান্না করার পূর্ণ অধিকারটুকু পায় আর জীবনের বাকিটা সময় তাকে হাঁসতে হয়, হাঁসির অভিনয় করতে হয়। হাঁসার অভিনয় করতে গিয়ে কেঁদে ফেললেও তাকে দ্রুত চোখের পানি মুছে সবাইকে বলতে হয়, "আমি বড্ড ভালো আছি, বড্ড ভালো আছি।" আর সে যদি ঘরের বড় ছেলে হয় তাহলে তো কথাই নাই।
-সংসারে কোন সমস্যা হলে তাকে সামলাতে হয়। খানিকটা এদিক সেদিক হলে তাকে রাজ্যের সব কথা শুনতে হয়। এখানেও সে কাঁদে না, কাঁদতে পারে না।
-পরিবারের কেউ মারা গেলে সে কান্না করার বেশি সময় পায় না। দাফন-কাফন সম্পন্ন হলেই তাকে আবার কুলখানির কাজে নামতে হয়। সেখানে কোন অবহেলা হলে তাকে আবার গালি শুনতে হবে। এখানেও সে কাঁদে না, কাঁদতে পারে না।
-তার গার্লফ্রেন্ড চলে গেলে সে কাউকে মুখ ফুটে বলতে পারে না। এতে তার লজ্জা। বুকের ভেতর টা ফেটে যায় কিন্তু কাউকে মুখ ফুটে বলতে পারে না। এখানেও সে কাঁদে না, কাঁদতে পারে না।
আচ্ছা, পুরুষ হয়ে জন্মানো টা কি মস্ত বড় অপরাধ???
যদি তা না হয়েই থাকে তাহলে তাকে এতো কষ্ট বুকের গহীনে রেখেও সে কিভাবে হাঁসিমুখে বলে, "আমি ভালো আছি, বড্ড ভালো আছি।"
কিভাবে বলে, কিভাবে বলে? তার কি একটুও কষ্ট হয় না? তার কষ্ট কি কেউ দেখে না? সে তো সবার কষ্ট দেখে, তাহলে কেন কেউ তার কষ্ট দেখবে না, কেন???
---গোলাম রাব্বানী
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:০৪