আমি আমার মতোই একজনকে খুঁজছি,
ঠিক আমার মতই দেখতে হবে,
চোখ, মুখ, নাক, উচ্চতা, চেহারা
একেবারে সব কিছু,
শুধু বুকের ভিতরটা ছাড়া।
আমি রাতের আঁধারে আমার সব অপরাধ,ক্ষোভ, ঘৃনা, লোভ ,
ভালোবাসা, বাসনা আর নষ্ট কামনা তাকে দিয়ে দিবো।
আমি যে কবিতা লিখতে গিয়ে ভয়েই কলম হারিয়ে ফেলেছি,
তাকে দিয়ে লিখিয়ে ফেলবো সেই কবিতাটি বুক টানটান করে।
মাইকের সামনে হাসি মুখে যারা অনায়াসে মিথ্যা বলে,
আমিও হাসি মুখ করে বসে থাকি তাদের সামনে,
যদি তাকে পাই, তবে ঠিকই বলিয়ে নিবো,
‘চুপ হারামীরা, একেবারে চুপ, আর একটাও মিথ্যা নয়।”
আমাকে যে নারীরা পরকীয়ার জন্য গোপনে প্রায়ই ডাকে,
আমি ভয়ে যাইনি কখনো তাদের কাছে,
একটা গোপনে ইচ্ছে পালছি ঠিকই এই বুকে,
ভয় যদি কেউ দেখে ফেলে,
আমি তাকে পাঠিয়ে দিবো সেই নারীদের কাছে,
কেমন মজা হলো,
আফসোস ভরা মন নিয়ে সেই গল্পটাও শুনবো।
তাকে, মদ খাইয়ে পাড় মাতাল বানাবো একদিন,
তারপর, যে নারী’কে ভালোবাসার কথা বলতে গিয়ে বারবার ফিরে এসেছি,
শুধু প্রত্যাক্ষানের ভয়ে,
সেই নারীর বাসার সামনে লোক জড়ো করবো একদিন,
চিৎকার করে তাকে দিয়েই বলাবো,
“এই লোকটিকে ভালোবাসলে কার কি ক্ষতি হয়, বলুন?
দেশের রাজনীতিবিদ , সুশীলসমাজ অথবা অর্থনীতি, কারোই ক্ষতি হবে না লোকটিকে ভালোবাসলে,
এমনকি বন্ধু রাষ্ট্রের সাথেও সম্পর্কের কোনো হেরফের হবে না।”
বাবা মারা যাবার সময় কাঁদতে পারিনি অনেক চেষ্টাতেও,
এখন সেই কান্নাটা প্রায়ই বুক ফেটে বের হতে চায়,
একদিন তাকে দিয়ে সেই কান্নাটা কেঁদে নেওয়াবো,
একদিন সারাদিন মা’য়ের কোলে মাথা রেখে তাকে শুইয়ে রাখবো।
একবার তাকে নিয়ে ঘুরাবো সারারাত, পূর্ণিমার চাঁদ’টাকে লুকিয়ে রাখবো মানিব্যগে,
গভীর রাতে কোন হোটেলে ঢুকে পেট ভরে খাবো দু’জন,
বিল মিটানোর সময় কিছু চাঁদে’র আলো দিয়ে দিবো ক্যাশ কাউন্টারে।
সমস্ত অট্রালিকার ছাদে শষ্য ফলাবো তাকে দিয়ে,
সেখানে একটি করে ‘কবিতা ঘর’ বানাবো
শষ্য’দের কবিতা শুনাতে।
একদিন মহামান্য রাষ্ট্রপতির বাস ভবনে তাকে পাঠিয়ে দিবো,
চা খেতে খেতে একটা কবিতা শুনিয়ে আসবে,
সেই কবিতায় শুধু একটি বন্দী পাখির হাহাকার থাকবে,
যদি পাখির কষ্টে রাষ্ট্রপতির দু’চোখে জল চলে আসে,
সে পকেট থেকে রুমাল দিয়ে জল মুছে দিবে,
আর আমেরিকা আর রাশিয়াকে ধমক দিয়ে
কি ভাবে শান্তির পথে নিয়ে আসা যায়
তা নিয়েও আলোচনা হবে।
একদিন তাকে দিয়ে আমাকেই হত্যা করাবো,
তারপর সে,
আমি হয়ে বাঁচবে পরিচয় গোপন করে।
——————————
রশিদ হারুন
১৭/১২/১৮