চশমাটা নিদারুন অবহেলায় পরে আছে পড়ার টেবিলে,
গতকালও খুবই যত্ন ছিলো তার,
সব সময় আদর করে চশমা’র কাঁচ দুটো পরিস্কার করে রাখতেন তার মালিক,
অথচ, আজ ফ্রেমটা ভেংগে যাওয়ায়
পরে আছে দু’টুকরো হয়ে।
কাঁচ দুটো পরস্পর লেগে আছে গায়ের সাথে,
যেনো চুম্বন করছে,
কাঁচ দুটো খুবই ভয় পাচ্ছে ,
যদি তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সারাজীবনের জন্য,
অথচ, তারাই এতোদিন নিজেদের আয়নায় দেখে,
ভালোবেসে ফেলেছিল দু’জন দু’জনকে,
শুধুই বলতো “তুমি দেখতে কতো সুন্দর, মায়াবী,
আমি তোমাকেই শুধু ভালোবাসি”
শুধুই ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করতো আরেকটা কাচেঁর শরীর,
তারা ভাবতো শরীর না ছুঁয়ে কি ভালোবাসা হয়।
আজ তারা ভাবছে,
মালিক যদি আর তার চশমা ঠিক না করে,
কখনো ফেলে দেয় আবর্জনার বাক্সে,
সারাজীবনের জন্যই আলাদা হয়ে যাবে তার,
দরকার ছিলোনা এই শরীর ছোঁয়ার,
আর দু’জন দু’জনকে বলছে “তোমাকে না দেখলে আমি আর বাঁচবো না”।
কিছুদিন পর ভাংগারী দোকান হয়ে, কাঁচ দুটো চলে গেলো আবার ফুটপাতের কোনো এক চশমার দোকানে।
নতুন করে ঘষে মেজে আবার দু’জনই নতুন দুই চশমায় বসে গেলো।
নতুন দুই সংগীর দিকে আয়নায় তাকিয়ে তারা আবারো বললো,
“তুমি দেখতে কতো সুন্দর, মায়াবী,
আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি”।
আসলে ভালোবেসে কেউই মরেনা
যারা একবার ভালোবাসতে শিখে ফেলে,
তারাই জেনে যায়,
কি ভাবে বাঁচতে হয়।
————————
রশিদ হারুন
১৮/১১/১৮