একটা আন্তর্জাতিক শিপিং কন্টেনারে গড়ে প্রতিদিন ডিজেল লাগে প্রায় ২২৫ টন। ২০২২ সালে বাংলাদেশের একদিনের ডিজেল চাহিদা প্রায় ১৫ হাজার টন। মানে মাত্র ৭০টা আন্তর্জাতিক শিপিং কন্টেনার পুরো বাংলাদেশের একদিনের ডিজেলের চাহিদার থেকেও বেশি ডিজেল ব্যবহার করছে। সহজভাবেই বলা যায় গ্লোবাল শিপিং ইন্ডাস্ট্রিতে ডিজেল ব্যয় কমলে বা ফিউল অপ্টিমাইজ হলে সেটা ডিজেলের বাজার আমাদের জন্য (+ পরিবেশের জন্য) কি পরিমাণ আশীর্বাদ হয়ে আসতে পারে!
Now #LetsTalkAboutSolutions
১। ডিজেল একটা হেভি এনার্জি ফিউল। এটার রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে যদি কম হেভি এনার্জি ফিউল ব্যবহার করি তাহলে (ক) হয় জাহাজকে বারবার রিফিউলিং করা লাগবে, অথবা (খ) জাহাজের আকারের বড় লেভেলের চেঞ্জ আনতে হবে। দুইটার মাশুলই কম মুনাফা। ব্যাটারি এখনো ডিজেলের মত এনার্জি ডেন্স না; তাই ব্যাটারিনির্ভর শক্তির অবকাঠামো (যেমনঃ সৌর আর বায়ুকে) ইমপ্র্যাক্টিকাল ধরে বাদ দেয়া যায়। অবশ্য পুরো কন্টেনার জাহাজ চালানো না গেলেও ছোট পরিসরে ছাদ এ সোলার প্যানেল লাগিয়ে জাহাদের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।
২। ডিজেল থেকে অন্য শক্তিতে অবকাঠামো পরিবর্তন করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই ইমিডিয়েট সলিউশন হচ্ছে যা ডিজেল ইউজ হচ্ছে সেটার পরিমাণ কমিয়ে আনা। ২০১৮ সালে রাশিয়ার আরেক বেয়াদবির কারনে এক ধাপ ডিজেলের দাম বেড়েছিল। সে সময় সারাবিশ্বে কন্টেনার জাহাদের গতি অর্ধেক করার প্রস্তাব দেয়া হয়। যাতে ডিজেলর ব্যবহার প্রায় ১৩-২৭% পর্যন্ত কমানো সম্ভব। বিশাল ব্যাপার! আর অনেক কোম্পানি দেয়ালে পিঠ ঠেকে করেছিলও।
৩। ২০২১ সালে ফরাসি টায়ার কোম্পানি মাইকেলিন একটা প্রোজেক্ট করেছিল। সেখানে জাহাজের পাল যুক্ত করে বাতাসকে ডিরেক্ট ফোস হিসেবে ব্যবহার করে জ্বালানির নির্ভরশীলতা কমানো উদ্দেশ্য ছিল। যা জাহাদের প্রায় ২০% জ্বালানী কম ব্যবহার করতে পেরেছে। হাজার বছরের পুরাতন এই মেথডকে যুক্ত করে জাহাদের গতি না কমিয়েই জ্বালানী ব্যয় কমানো একটা যুগান্তকারী সমাধান হতে পারে।
৪। হাইড্রোজেল ফিউল। এটা নিয়ে আগের একটা ব্লগে লিখেছিলাম। হাইড্রোজেন ফিউল থেকে এনার্জি ডেন্স আর কিছু আমরা আজ পর্যন্ত ব্যবহার করি নাই। এটা জেট পেট্রোল (যা বিমানে ইউজ হয়) সেটা থেকেও তিনগুন এনার্জি ডেন্স । আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে এটা নবায়নযোগ্য শক্তির আওতায় পরে। কন্টেইনার শিপে হাইড্রোজেন ফিউল ইউজ করলে ফিউল কমপার্টমেন্টের মাত্র প্রায় ২০% জায়গা খাবে। শিপিং ব্যবসায়ীদের জন্য এটার আরেকটা আশীর্বাদ হচ্ছে একই সাইজের জাহাজে আরও অনেক কন্টেইনার রাখা যাবে। তবে এটাকে মেইনট্রিম লেভেলে আনতে কমপক্ষে এক যুগ লাগবে। তাই এটাকে চার নাম্বার পয়েন্টে রাখলাম।
বিশ্ব রাজনীতি বাংলাদেশের মত ছোট দেশ নিয়ে চিন্তা করবে না; (এখনো আমরা সে জায়গায় যাই নাই)। কিন্তু এনার্জিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকলে কমপক্ষে দূরদেশের পলিটিক্স এ আমাদের বেসিক নেসিসিটি হিমশিম খাবে না।
তথ্যসুত্র
[১] https://doi.org/10.4324/9780429346323
[২] Click This Link
[৩] Click This Link
[৪] Click This Link.
[৫] Click This Link.
[৬] Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১২:০৭