somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"এরা এমন কেন? "

২২ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মিত্রপক্ষেরা তল্লাশি চালানো শুরু করে নাৎসিদের দখল করা জায়গাগুলো। Extermination camp ছিল এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। এখানে ইহুদিদের ধরে নিয়ে এসে গ্যাস চেম্বারের ভিতর ঢুকিয়ে বিষাক্ত হাইড্রোজেন সায়ানাইড গ্যাস পুরে মেরে ফেলা হত। মেরে ফেলার আগে তাদের উলঙ্গ করানো হত আর জামাকাঁপড়-জুতো একজায়গায় রাখা হত। যুদ্ধের পর মিত্রপক্ষরা সেইসব জায়গায় গিয়ে দেখল স্তূপের পর স্তূপ। তার মধ্যে অনেক ১৫-২০ ফিট উঁচু স্তূপে ছিল শুধু ছোটো ছোটো বাচ্চাদের জুতো- কাপড় । নিচে একটা ছবি দিলাম, ভাল করে দেখুন। ইতিহাস এটাকে জানে Holocaust বলে। মাত্র ৬ বছরের ব্যবধানে ১.১ কোটি মানুষের প্রাণ।


এইবার চলে আসি আরও আগে। যুদ্ধ শুরুর আগে। বর্তমান অস্ট্রিয়া, ১৯৩৮ সাল। ভিয়েনার অনেক বাড়ির গেটে গেটে রঙ করা। লোকজন ভীর করে দেখতো আর হাসিঠাট্টা করতো। বাড়িগুলোতে রঙ করে একটা কথাই লেখা হত Jüdin (মানে ইহুদি)। Holocaust এ যা হয়েছিল তৎকালীন তা জার্মানির নাগরিকদের একটা বড় অংশ সমর্থন করতো। আজও সমর্থকের অভাব নেই, তবে সেটা জার্মানে না; আমাদের বঙ্গদেশে

২০০১ এর যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ার হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রে ও ইউরোপে একটা রোগ বিদ্যুৎ বেগে ছড়িয়ে যেতে শুরু করে। Islamophobia । মাত্র এক বছরের মধ্যে ধর্মীয় রেশ ধরে বৈষম্য, নিপীড়ন বেড়ে যায় প্রায় ৪ গুন। মিডিয়াগুলোও ছিল তিলকে তৈল বানাতে পটু। সরকার যা চেয়েছিল তার জন্য জনগণের সমর্থন পেতেও সমস্যা হয়নি। ফলশ্রুতিতে আসে যুদ্ধ। বাগদাদের বাতাসে তখন থেকেই বারুদের গন্ধ, আজও আকাশ ধূসর রঙ আর কংক্রিডের দেয়ালে রক্তের ছাপ।


হিটলার, বুশ, আওরঙ্গজেব, রাজা ফার্ডিন্যাল এরা কখনই একা ছিল না। তাদের সাথে ছিল উষ্ণ রক্তের বিশাল সমর্থক। যদি তাদের একটা বিতর্ক রুমে রাখা হয়, তারা দুইকান বন্ধ করে একই কথা বারবার বলবে। "অমুক জায়গায় আমাদের জাত ভাইয়ের প্রতি যা হয়েছে, তার থেকে আমরা হাজারগুন ভাল"। যুক্তি পাল্টাযুক্তির শেষ লাইন এটাই। কেউ স্পেন নিয়ে আসবে, কেউবা জার্মানি, কেউ জেরুজালেম দিয়ে আসবে, কেউবা দিল্লি। দামাস্কাস, রাখাইন রাজ্য, কেরেলা, প্যারিস,গ্রানাডা, বাবরি মসজিদ আরও অনেক নাম।


সমস্যার গোঁরা আসলে ভিন্ন। পৃথিবীর সব সমাজই ভিন্নমতের মানুষের সমন্বয়ে তৈরি। সমস্যা হচ্ছে আমাদের কৌতূহলি মন। আমরা ছোটোবেলা থেকে ভিন্নমতের মানুষের দেখি, আর ভাবি "এরা এমন কেন? " তাদের অস্তিত্বই যেন আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু। ঘর থেকেও আমরা একই উত্তর পাই। দ্বিতীয় প্রশ্নটি করার স্পর্ধাও কখনো আসে না, আসতেও দেয়া হয় না। নিজেকে অন্যের জায়গায় রেখে সহানুভূতি দিয়ে চিন্তা করার মত বিলাসিতা ও সময় আমাদের সারাজীবনেও আসে না।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৯
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×