আজ বিশ্ব মা দিবস। এই দিনে আমরা মাদের স্বরন করি। কিন্তু আমার মনে হয় বছরের প্রতিদিনই মা দিবস। এক দিনে মায়ের জন্য কিছু করে আমরা কি মায়ের ঋন শোধ দিতে পারব না কেও পেরেছে? তবে হয়তো এই দিন আমরা যে আমাদের মাকে অনেক ভালবাসি তা বলার সুযোগ করে দিয়েছে। তাই আজ আমি আমার মাকে কিছু বলতে চাই।
সেই দিন ছিল মে মাসের ২৮ তারিখ, সন্ধা হয়েছে। বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি সাথে দমকা হাওয়া এক রকম ঝড় হচ্ছে বলা যায়। আর এদিকে অন্য রকম এক ঝড় হচ্ছে, হাসপাতালের বেডে মুয়ে ব্যথার যন্ত্রনায় ছটফট করছে একজন মা। রাত ঠিক ৮:০০ সব ঝড় থামিয়ে দিল একটি ছোট্ট শিশুর চিৎকার। হ্যা, আমার জন্ম হল। এই পৃথিবী প্রথম আলো দেখলাম আমি। সেদিন অনেক বৃষ্টি হচ্ছিল। নাকি তা ছিল একজন মায়ের যন্ত্রনার সাথে মিশৃস্ত সুখের কান্নার প্রতিফলন যা প্রকৃতি বৃষ্টির রুপে প্রকাশ করেছে। আমি আমার মার প্রথম সন্তান।
আমার জন্মের পর আমার কিছু সমস্যা দেখা দেয়, আর আমার মাকে তিনটা বছর কষ্ট করতে হয় আমাকে বাঁচাতে। আমি সেই সব কষ্ট দেখিনি, দেখলেও তা মনে নেই। আজ আমি বেচে আছি শুধু আমার মার কষ্টের বিনিময়ে।
আমার ছোট থেকে ছোট চাওয়া, আমার শখ, আমার জিদ সব কিছুই আমার মা সব পূরণ করেছেন হাসি মুখে। আজ আমি অনেক বড় এখন সব কিছু বুঝি, সব কিছু করতে পারি নিজে নিজে। কিন্তু আমি কি পেরেছি আমার মার মুখে একটু হাসি দিতে। মনে হয়না পেরেছি, মনে হয়না পারব। কারন মার জন্য যাই করি সব কিছুই মার কষ্টের কাছে কিছুইনা। নিজের জীবন দিয়েও হয়তো মার ঋন শোধ করা যায়না।
আজ জীবনের অনেকটা পথ হেঁটে এসেছি, অনেক হোচঁট খেয়েছি, অনেক কষ্ট পেয়েছি, আমার মা যখন আমায় জরিয়ে ধরে বলেন সব ঠিক হয়ে যাবে, আদর করে আমার চোখের পানি মুছে দেন তখন মনে হয় এই পাওয়ার কাছে সব কিছু হাড়ালেও কোন কষ্ট থাকবেনা। আমি এই আদরটুকু পাওয়ার জন্য জীবনে সব হাড়াতে রাজি আছি কিন্ত মা তোমাকে হাড়াতে পারবনা।
আমি ভাষায় আমার মাকে হয়তো কোন দিন বুঝাতে পারিনি আমি তাকে কতটা ভালবাসি। আজ বলছি মা আমি তোমায় অনেক ভালবাসি। অনেক ভালবাসি।
মার ঋন আমরা কেউ শোধ করতে পারবনা, কিন্তু একটা কাজ আমরা পারি তা হল বছরের ৩৬৫ দিন কেই মা দিবস করতে পারি, বছরে একদিন কেন প্রতিদিনই বলতে পারি মা তোমায় ভালবাসি। কি পারিনা???