somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসম্ভব সুন্দর ক্রীড়া প্রদর্শনী, দেখে স্বর্গসুখ অনুভব করছি

১৯ শে মার্চ, ২০১১ বিকাল ৪:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অধিনায়কের ব্যাট থেকে যখন একটি সিঙ্গেলের সুবাদে ৫৯ রান হলো, তখন গ্যালারিতে উদ্বাহু নৃত্য, ধারভাষ্যকার ভদ্রলোক তারচেয়েও বেশি উল্লসিত কন্ঠে অধিনায়কের উদ্দেশ্যে ঘোষনা দিলেন, ইঁটস দ্য বিগ রোল টু মেক ইট ফিফটি নাইন! ম্যাগনিফিসেন্ট ওয়র্কিং ইনডিড! যে কোনো কানা অন্ধের কাছে এর মানে হলো, ম্যাগনিফিসেন্ট মুহুর্ত থেকে নিজেকে বঞ্চিত মনে করে দীর্ঘশ্বাস ফেলা। দীর্ঘশ্বাস চক্ষুষ্মানদেরও! তার খানিকটা অনেকক্ষন ধরে আটকে থাকা ৫৮’র নিচে পড়ে যাওয়ার শংকা ঠেলে বেরিয়ে আসার, আর বাকিটা ফিরতি ব্যাটসম্যানদেও লাইন দীর্ঘথেকে দীর্ঘতর হবার দিকে তাকিয়ে। অধিনায়ক বোধয় একটু খুশিই মনে মনে, কারন ৫৮ রানের লজ্জার দিনে কথায় কথায় বলেছিলেন, এর চেয়েও খারাপ দিন আসতে পারে। এ যাত্রা সেটি যে হতে দিলেননা এইটাই জাতির গর্ব। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার থাকতেও যদি ৫৮ নিচের লজ্জায় ডুবতে হয়, তাহলে তো শ্লার খেলাই দেখুমনা অবস্থা দর্শকদের। আতœতৃপ্ত দর্শক হিসেবে নিজেও আবেগ ধরে রাখা মুশকিল উপলব্ধি করি। মনে পড়ে যায় একটি মজার কৌতুক, এক ভদ্রলোকের মাথায় চুল কমতে কমতে পুরো টাক, যাকে বলে জাপানের সাপ্পোরো ডোম’ সকার ষ্টেডিয়াম! তো প্রতিদিনই চুল যেতে যেতে আর দুয়েকটা অবশিষ্ট আছে; মনের দু:খে ব্যাটা একদিন বলে, যাহ শ্লা, কাল থেকে আর সিথিই করবো না! আজ ৫৯ রান না হলে হয়তো মুখ ফসকে এরকম কিছুও বলে ফেলতে পারে কোনো বেয়াদপ দর্শক! দর্শকগুলো যা বেয়াদপ, হেরে গেলে আবার প্রতিপক্ষের গাড়িতে ঢিল ছুড়ে!! এই না হলে আমাদের জাতীয় ক্যানভাসের দিনদিন এতো উন্নতি, গানে, সিনেমায়, রাজনীতিতে, ..সবশেষ খেলার মাঠেও আমাদের নান্দনিক প্রদর্শনী জাতীয় ইমেজটারই শ্রীবৃদ্ধি বৈতো কিছু নয়। সেই শ্রী টা আবার ওবামার কাছ থেকে ধার নেওয়া, ইদানীং প্রায়ই বলতে শুনি, ‘আমরা পারি’, ‘উই ক্যান’। বিশ্বকাপের সবচে নিচের সারির দলগুলোর একজন খেলোয়াড়েরও অর্জনের খাতায় দুইটা সেঞ্চুরি, আমদের পুরো দলে যা নেই! তাতে কি, সেই দলকে তো নাকানি চুবানি দিছি..মনে নাই? কোথায় ছিলো তখন “ডয়েসক্য্যাট আর কোথায় ও-ব্রায়ান”? বেয়াদপ দর্শক সব ভুলে যায়, তারা খালি জিততেই জানে, হারতে জানেনা! আরে হার তো হারই, আবার সম্মানজনক আর অসম্মানজনকের কি আছে? ঐ যে যেবার ব্রাজিল ফ্রান্সের কাছে ফাইনালে হেরে গেলো ৩, গোলে সেবার স্কলারি তো বলেই দিছে, রানার আপ হওয়া মানে পরাজিতদের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করা। তো অতোবড় বোদ্ধার কথাকে খাটো করে না দেখলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়,..হার হারই, এর আবার বড় আর ছোট কি? কোয়ার্টার ফাইনাল না নক আউট রাউন্ডে দল উঠবে, এমন কোনো নাকে খত তো দিয়ে আসিনি, আমরা বলেছি আমাদের সেরাটা যদি দিতে পারি, তাহলে সবই সম্ভব! সেই সেরাটা কোন মুল্লুকে রাখা আছে, সোনার কাঠি-রূপার কাঠির যাদু ছাড়া যেটাকে সামনে আনা অসম্ভব! সামনে আনার অর্থাৎ বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাজাবে কে? বোলিং-নির্ভর দলে (এ যাবৎ সবগুলো জয়েই বোলিংয়ের অবদান বেশি) মুড়ি মুড়কির মতো স্পিনার দেখে এই পড়ন্ত বিকালে নিজেরও ইচ্ছা করছে হাতযশটা ঝালাই করে নিতে! আমরা পাড়ার ফ্রেন্ডরা যখন ক্রিকেট খেলতাম তখন এদের চেয়ে ভালো বোলিং করতাম। লক্ষ্য রাখতাম উইকেটে, চেষ্টা করতাম বেল ফেলার, বলে ইনসুইং, আউট সুইং, স্পিনে ঘূর্নিও চেষ্টা করতাম। কিন্তু বোলিংয়ের নামে যে দেহপ্রদর্শনী দেখা গেলো টাইগার দলের, তাতে মনে হলো বলটা কোনরকমে পিচের আরেক প্রান্তে ফেলতে পারলেই হলো, সে জাতীয় দলের বোলার। তো বোলিং নির্ভরতা পরিণত হলো স্পিন নির্ভরতায়। আমাদের এতো স্পিনার, ভবিষ্যতে আরো স্পিনার তৈরিতে নিশ্চয়ই অনুপ্রানীত করবে এদের অনন্য দেহপ্রদর্শনী। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বল কেন যে ব্যাট করছিলো ক্যালিস বোকচোাদা! ৃকতোগুলো ওয়াইড বল পেতে পারতো, সেটাও এক হিসাবের ব্যাপার। আর শফিউল, রুবেল এরা যে কেনো এতো জোরে –কুদে বল করতে গিয়ে খালি খালি কষ্ট করলো, নেটে যদি এর অর্ধেক কষ্টও করতো তাহলে মনে হয় মাঠে কিচু কষ্ট কমে যেতো। দলের অর্জন নেই বলাও তো সমীচিন নয়, আসরের সর্বোচ্চ রানের চাপায় পড়া, সর্ব নিম্ন রানের রেকর্ড..এইসব কি রেকর্ডেও বিষয় নয়? সেরাটা তাহলে আবার কি? বিরতির সময় সেটাই ভাবছিলাম, আজ বোধয় তাহলে সেরাটা দেখা যাবে! গেলও তাই, টাইগারীয় সেরা যেমন হতে পারে আর কি! কোথায় কবে শুনেছিলাম, বিড়ালদের কুস্তিতে একবার বাংলাদেশের এক বিড়ালকে কোনো দেশের বিড়ালই হাড়াতে পারছিলো না; শেষ মেষ ডিএনএ টেষ্ট কওে দেখা গেলো সেটা আদপে বাঘ ছিলো, খেতে না পেওে এই অবস্থা! যাই হোক, আমাদের মাঠের টাইগারদেও আশপাশে সুখাদ্যের কোনো অভাব নেই। খাদ্যের পাশপাশি টাইগাররা আরো কতো সুবিধা পায়! মোটা বেতন তো কিছুই না, যে পুরষ্কার-আর খেপের সুযোগ, তাতে অন্তত: ওই বিড়ালের দলে বাঘ সাজার কোনো যো নেই। মাঝে মাঝে বাঘদেও দেকা যায়, দল বেধে মাছ শিকাওে নেমেছে, গলফ কোর্টে গলফ খেলছে, কিংবা বায়জীদ বোস্তামীর মাজারে কচ্ছপের সাথে খেলা করছেন! তো নেটপ্র্যাকটিসে গতর খাটিয়ে লাভ কি? পড়াশুনায় বইয়ের পোকা ছাত্র হয়ে লাভ কি? একজন ব্যাটসম্যান প্রতিদিন নিদেন ১০-১৫ ওভার ব্যাটিং করলে কি এমন লাভ? বোলাররা উদ্দেশ্যব্রষ্টের মতো না করে ষ্টাম্প লক্ষ্য করে বল প্র্যাকটিস কওে কি ফায়দা, এসব করলে কি সেরাটা পাওয়া যাবে? তার চেয়ে বরং অফুরন্ত অবকাশ গলফ মাঠে কাটিয়ে এলে মনটা ফুরফুরে থাকে। সেটা অনেক বেশি দরকার; বিগম্যাচে নির্ভার হয়ে খেলতে না পারলে সেরাটা যে বেরুবে না। মনে মনে ভাবি, কোন ক্ষেত্রের সেরাটা দেখানোর কথা বলে এরা কে জানে..তামিম হয়তো নিজেরে শচীনের চেয়ে উচু কিছু ভাবে, আর রাজ্জাকরা হয়তো নিজেরে শেন ওয়ার্নের কিংবা মুরালির চেয়েও বেশি কিছু ভাবে! সেরাটা নাইলে আবার কি? এও ভাবি, যদি পুটবলের মতো বেশি সংখ্যক দেশ ক্রিকেট খেলতো, তাহলে বোঝা যেতো বাংলাদেশের ক্রিকেটের শ্রীবৃদ্ধির নমুনা, সেটি যে ফুটবলের চেয়েও উন্নতি করেছে বলে সব বরাদ্দ, থোক, বাজেট ক্রিকেটে ঢেলে দেয়া হয়েছে, একটা সিরিজ জিতলে নানাবিধ গাড়ি-ঘোড়া উপঢৌকন হয়ে আসে, তা তো ক্রিকেটকে যোগ্যতর জায়গাতেই নিয়ে যাচ্ছে নি:সন্দেহে। কায়কোবাদ স্যার একদা আক্ষেপ করে বলেছিলেন, এদেশে একজন গবেষক পান তার কয়েকগুন পান ক্রিকেটাররা!!!:D তাই তাদের আসুন আরো পুরষ্কার ও সম্মানে ভূষিত করি।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১১ বিকাল ৪:৩৫
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির পিতাকে অস্বীকার করে, স্বাধীনতার সংগ্রাম কে অস্বীকার করে রাজাকার রা আমাদের আওয়ামী লীগ সমর্থন করাতে বাধ্য করে বারং বার।

লিখেছেন আহসানের ব্লগ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৩


আমরা যারা কোন দলের পদ পদবি তে নাই। এমনকি আমার কলেজের রাজনীতি জড়িত বন্ধুর সাথেও মেশা বন্ধ করেছিলাম আমরা চার জনের সার্কেল। দলীয় রাজনীতি বড়ই খারাপ জিনিস। মাইর খাওয়া মাইর... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভিন্‌গ্রহে মিলল প্রাণের অস্তিত্ব! ১২৪ আলোকবর্ষ দূরের গ্রহে কি প্রাণের স্পন্দন?

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪২



জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে, তাঁরা পৃথিবীর বাইরে কে২-১৮ বি গ্রহে জীবনের সবচেয়ে জোরালো প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন। ১২৪ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত একটি গ্রহের বায়ুমণ্ডলে দু’টি রাসায়নিকের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও আমার অপারগতা

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:৪১

সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত খবর অনুযায়ী আজ নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের সুপারিশ জমা দেয়ার কথা। তাদের প্রস্তাবিত কিছু বিষয় পড়ার পর আমার মনে বিষয়গুলো নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ : দেশের উন্নয়নের জন্য আসন বাড়ানোর বিকল্প নেই

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:০৮


নারী অধিকার নিয়ে কথা উঠলেই কিছু ভদ্রলোকের ঘুম ভেঙে যায়। রাষ্ট্র নড়েচড়ে বসে—একটু যেন ‘স্মার্ট’ ভাব ধরে। সেই ভাবেই নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন সুপারিশ করলো, সংসদের আসন সংখ্যা ৬০০ করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের পোশাক শিল্প : মহম্মদ ইউনুস কি ভারতের বা মোদির হাতের পুতুল ?

লিখেছেন গেছো দাদা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:২৩

মোদীর ওপর গোসা করে মাটিতে খায় ভাত। হ্যাঁ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এইটাই হয়েছে। ভারত বাংলাদেশের পোশাক পণ্যের জন্য মালবাহী বিমানযোগে ট্র্যানশিপমেন্ট ফ্যাসিলিটি বন্ধ করে দেওয়াতে এমনিতেই পোশাক শিল্পের ওপর বড়সড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×