পসঙ্গঃ শবে বারাত ও তার আমল
======================
হযরত আলা ইবনুল হারিস রহ. থেকে
বর্ণিত, হযরত আয়েশা রা. বলেন,
একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতে নামাযে
দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সেজদা করেন যে,
আমার ধারণা হল তিনি হয়ত মৃত্যুবরণ
করেছেন। আমি তখন উঠে তার
বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তার
বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সেজদা
থেকে উঠলেন এবং নামায শেষ করলেন
তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে
আয়েশা অথবা বলেছেন, ও হুমাইরা,
তোমার কি এই আশংকা হয়েছে যে,
আল্লাহর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন?
আমি উত্তরে বললাম, না, ইয়া
রাসূলুল্লাহ। আপনার দীর্ঘ সেজদা
থেকে আমার এই আশংকা হয়েছিল,
আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা। নবীজী
জিঞ্চেস করলেন, তুমি কি জান এটা
কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার
রাসূলই ভাল জানেন। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তখন ইরশাদ করলেন,
ﻫﺬﻩ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰﻭ ﺟﻞ ﻳﻄﻠﻊ ﻋﻠﻰ ﻋﺒﺎﺩﻩ ﻓﻰ
ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻓﻴﻐﻔﺮ ﻟﻠﻤﺴﺘﻐﻔﺮﻳﻨﻮﻳﺮﺣﻢ ﺍﻟﻤﺸﺘﺮﺣﻤﻴﻦ
ﻭﻳﺆﺧﺮ ﺍﻫﻞ ﺍﻟﺤﻘﺪ ﻛﻤﺎﻫﻢ
‘এটা হল অর্ধ শাবানের রাত (শাবানের
চৌদ্দ তারিখের দিবাগত রাত)।
আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে
তার বান্দার প্রতি মনযোগ দেন এবং
ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন
এবং অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন
আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন
তাদের অবস্থাতেই।‘
[শুআবুল ঈমান,
বাইহাকী ৩/৩৮২-৩৬৮]
ইমাম বাইহাকী (রহ. এই হাদীসটি
বর্ণনার পর এর সনদের ব্যাপারে
বলেছেন,
ﻫﺬﺍ ﻣﺮﺳﻞ ﺟﻴﺪ
এই হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়, এ রাতে
দীর্ঘ নফল পড়া, যাতে সেজদাও দীর্ঘ
হবে, শরীয়তের দৃষ্টিতে কাম্য। তবে
মনে রাখতে হবে যে, অনেক
অনির্ভরযোগ্য ওয়ীফার বই-পুস্তকে
নামাযের যে নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন
লেখা আছে অর্থাৎ এত রাকআত হতে
হবে, প্রতি রাকআতে এই সূরা এতবার
পড়তে হবে - এগুলো ঠিক নয়। হাদীস
শরীফে এসব নেই। এগুলো মানুষের
মনগড়া পন্থা। সঠিক পদ্ধতি হল, নফল
নামাযের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী দুই
রাকআত করে যত রাকআত সম্ভব হয় পড়তে
থাকা। কুরআন কারীম তেলওয়াত করা।
দরূদ শরীফ পড়া। ইস্তেগফার করা। দুআ
করা এবং কিছুটা ঘুমের প্রয়োজন হলে
ঘুমানো। এমন যেন না হয় যে, সারা
রাতের দীর্ঘ ইবাদতের ক্লান্তিতে
ফজরের নামায জামাআতের সাথে পড়া
সম্ভব হল না।
আল্লাহ রব্বুল আলামীন সকলকে
সঠিকভাবে আমল করার তাওফীক দান
করুন.....আমীন!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১:৩১