একদিকে নগরায়ন এবং তথাকথিত আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষের আমিষ ভিত্তিক খ্যাদ্যাভ্যাস অতি দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে, অন্যদিকে এই চাহিদা পূরণে অত্যন্ত ক্ষতিকর হারে উদ্ভিজ্জ (অনিয়ন্ত্রিত রাসায়নিক চাষ) এবং প্রাণীজ উৎস (বিষাক্ত খাবারে মুরগী, মেডিসিনাল হরমোনে গরু এবং বিষ মিশ্রিত পানিতে মাছ) থেকে আমিষ এর সংস্থান করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে শিশু এবং কিশোর খাদ্যতালিকায় ভয়ঙ্কর ভাবে সবজি এবং উদ্ভিজ্জ আমিষ এর অনুপুস্থিত দেখা যাচ্চে। শহুরে পরিবারে প্রাণীজ আমিষ ছাড়া এক বেলাও চলছে না, গ্রামীণ মানের মধ্য-উচ্চ মধ্য-উচ্চ এবং অভিজাত পরিবারেও একই প্রবণতার প্রকটতা রয়েছে। এর বাইরে রয়েছে সাধারণ আপ্যায়ন, মেহমানদারি, সামাজিক অনুষ্ঠান কিংবা আধুনিক অনুষ্ঠানের খাদ্যাভ্যাসে প্রাণীজ আমিষের অতি মাত্রার এবং বাড়াবাড়ি রকমের উপস্থিতি। রান্নার প্রোগ্রাম গুলোর রন্ধন কোর্স গুলোও এই প্রতিচ্ছবিই নির্দেশ করে।
এদিকে দেশী জাতের মুরগীর বাজার হটিয়ে শহরের বাইরে বর্তমানে গ্রামেও ফার্মের বিষাক্ত মুরগী পাওয়া যাচ্ছে, গ্রামের বাণিজ্যিক মৎস্য চাষের পানিতে অবাধে বিষ মিশ্রিত ফিস ফিড দেয়া হচ্ছে, মেডিসিনাল হরমোনে গরু মোটাতাজাকরে তার গোস্ত সর্বত্র বাজারজাত করা হচ্ছে। বিষাক্ত খাবারের বাইরে রয়েছে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগের স্বেচ্ছাচারিতা যার ফলে এক ভয়ংকর এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স ধেয়ে আসছে। এর বাইরে রয়েছে মৌসুমের বাইরে জনপ্রিয় সবজির ফলন উৎপাদনের যে প্রতিযোগিতা তাকে স্রেফ রাসায়নিক সার, হরমোন, পেস্টিসাইড এবং ফাঙ্গিসাইড এর অতি প্রয়োগের প্রতিযোগিতা বলা যায়।
দেশের হাজার হাজার নিজস্ব প্রজাতির বীজ হারিয়ে গেলেও সামান্য কিছু নির্দিস্ট অতি মাত্রার রাসায়নিক ফলনে দেশ সয়লাভ, এতে জমি পানি এবং এই দুইয়ের অণুজীব ব্যবস্থাপনা কিভাবে নষ্ট হচ্ছে তা নিয়ে কোন গবেষণা হচ্ছে না। এই ভাবে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে চলমান প্রাকৃতিক জলাশয় ভরাট, নদি এবং খালের প্রবাহ নষ্ট, প্রাণঘাতী রাসায়নিক দূষণে নদীর জল জীব বৈচিত্র নষ্ট করা হলেও বাংলাদেশে বিদেশি জাতের সাধু পানির মৎস্য চাষ থাকবে, কিন্তু রাসায়নিক বিষ মিশ্রিত দূষিত পানিতে বাঁচার উপযোগী এইসব জেনেটিক্যালি মডিফাইড মাছ দেশের বর্ধিত আমিষ চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে কি কি সমূহ বিপদ (স্বাস্থ্যগত, প্রাণঘাতী) ডেকে আনছে তা নিয়ে বিস্তর গবেষণার প্রয়াস রয়েছে।
এই গবেষণার ব্যাপারে দেশের সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষক গবেষক এবং মান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান গুলো ঠিক কি ভূমিকা পালন করবে তা স্কোপে এনে সঠিক নীতিমালা/নির্দেশনা তৈরি এবং তার একশন প্ল্যান বাস্তবায়ন দরকার।
মাননীয় স্পিকার! বিষয়টি জরুরী জনগুরুত্বপূর্ন! দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের নজরে আনুন, দয়া করে!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১৬ ভোর ৪:১০