somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খ্যাতির লাগিয়া // তিন

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাল্যশিক্ষায় আমাদের পাঠ্যবইয়ে ছিল- ‘গণি মিয়া একজন কৃষক। তাহার কোনো নিজের জমি নাই। সে অন্যের জমি চাষ করে।’
আমার বাবা একজন কৃষক ছিলেন। বাল্যশিক্ষা পড়তে পড়তে বড়ো হতে হতে বুঝতে পারি, আমার বাবারও কোনো নিজের জমি নেই, তিনি অন্যের জমি চাষ করেন।
কিন্তু তাঁর ছেলে-সন্তানেরা, অর্থাৎ আমরা যেন কৃষক না হই, যাতে অন্যের জমি চাষ করতে না হয়, সেজন্য বই হাতে পাঠশালায় পাঠিয়েছিলেন। পড়ালেখা শিখে একদিন অনেক বড়ো হবো, জর্জ, ব্যারিস্টার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হবো- আমার চেয়ে আমার বাবার খ্যাতি হবে বেশি, লোকজন বলবে, জলিল মিয়ার বড়ো ছেলে করিম মিয়া একজন নামকরা ব্যারিস্টার ...। তাঁর চোখেমুখে এবং মনের ভেতরে আরো কত স্বপ্ন আর কত আশা ছিল যার ইয়ত্তা নেই।
চাকরির জন্য পড়ালেখা করতে হবে। অনেক কষ্টে গাঁয়ের স্কুল আর কলেজে লেখাপড়া করে শহরের দিকে পা বাড়ালাম। আমার দূর সর্ম্পর্কীয় এক মামা আমার জন্য একটা লজিংয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। বাসার নামঠিকানা নিয়ে একদিন সন্ধ্যায় সে-বাসায় গিয়ে হাজির হলাম।
বেশ ছিমছাম একতলা বাড়ি। বাড়িওয়ালার এক মেয়ে এক ছেলে। মেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে, ছেলের বয়স মাত্র চার বছর। ছেলেকে পড়ানোর জন্য আমাকে মাথা না ঘামালেও চলবে; পড়াতে হবে মেয়েটিকে।
বাসায় পৌঁছেই দেখি আমার আলাদা ঘর, ঘরে চেয়ার-টেবিল-খাট, আলনা সব আলাদা। যেন আজই আমার আসার কথা জেনে ঘরখানা এভাবে সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখা হয়েছে।
লক্ষ্মীর মতো মেয়েটির নাম পারুল। ঠিক আমার ছোটোবোনটির মতো মায়াময় চেহারা, দেখলেই আদর করতে ইচ্ছে করে।
সন্ধ্যায় চা-নাস্তা খেয়ে পড়াতে বসলাম। পারুল খুব মেধাবী মেয়ে। ক্লাসে সর্বদা তার রোল নম্বর এক হয়। সব সাবজেক্টেই সে ভালো, তবে তুলনামূলকভাবে ইংরেজিতে একটু দুর্বল। তারপরও ইংরেজিতে সচরাচর আশির নিচে কখনো পায় না।
আমার ধারণা হলো, অংক আর ইংরেজি পড়ানো ছাড়া আমার দ্বারা একে পড়ানোর আর কিছু নেই। আমি বরাবরই অংকে ভালো, পড়াতে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি উভয় পরীক্ষায় ইংরেজিতে আমার নম্বর শতকরা ৩৫-এর ঘরে ছিল। অর্থাৎ, আমি ইংরেজিতে দুর্বল। আমার মতো দুর্বলের দ্বারা অন্য একজন দুর্বল ছাত্রকে ইংরেজি পড়ানো সম্ভব, যার কেবল পাশ নম্বরেই চলে। কিন্তু পারুলকে পড়াতে সাংঘাতিক বেগ পেতে হবে, কারণ তার দরকার লেটার মার্কস।
পড়ানোর সময় পারুলকে খুলেই বললাম, দেখো, ইংরেজিতে আমি একটু দুর্বল। তাছাড়া আমাদের সময়ে যে-বই ছিল এখন তা অনেক বদলে গেছে, পড়াও হয়েছে আগের তুলনায় অনেক কঠিন। কাজেই, তোমাকে যে সাবজেক্টটা আগামী কাল পড়াতে হবে, ওটা আমাকে আজই জানিয়ে দেবে, যাতে পড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত প্রিপারেশন নিতে পারি।
‘ঠিক আছে’ বলে পারুল আমার দুর্বলতাটুকু মেনে নিল।
রাতে খাবারের পর দশটার দিকে শোবার আয়োজন করছিলাম। দরজায় টোকা দিয়ে পারুলের মা ঘরে ঢোকেন। চেয়ারে বসতে বসতে তিনি বলেন, একটা কথা বলতে চাইছিলাম।
আমি সংকুচিত হয়ে বসে কথা শোনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তিনি বলেন, পারুলকে তো অন্য সাবজেক্ট পড়ানোর দরকার পড়ে না, ইংরেজিতে একটু কাঁচা বলে-
আর বলতে হবে না খালাম্মা, আমি বুঝতে পেরেছি। আমিও পারুলকে পড়াবার জন্য মনের মধ্যে সাহস পাচ্ছিলাম না। ও খুব মেধাবী ছাত্রী। ওকে ইংরেজি পড়াতে পারে এমন একজন লজিং মাস্টার রেখে দেবেন। বলে আমি উঠে আমার ব্যাগ গোছাতে শুরু করি।
খালাম্মা বলেন, এই রাতে কোথায় যাবেন? রাতটা থেকে গেলে হয় না? কাল সকালে নাস্তা করে যাইয়েন।
না খালাম্মা, আমাকে এখনই যেতে হবে। মনে মনে বলি, এ কথাটা খাবারের আগে বললেই ভালো করতেন। একবেলা খেয়ে ঋণ রেখে গেলাম।
বিদায়ের বেলা পারুলের মুখখানি অতিশয় ম্লান ও আহত দেখালো। আমার মনে হলো, সে কিছুটা অপরাধ বোধে ভুগছে; আমার ইংরেজিতে দুর্বলতার কথাটি মাকে বলে দেয়ায় ‘চাকরি’তে যোগদানের তিন-চার ঘন্টার মাথায় আমার অব্যাহতি ঘটলো। আমি জানি, এ জিনিসটা তাকে সামান্য হলেও কষ্ট দেবে। আবার এ-ও জানি, একজন ইংরেজিতে দুর্বল গৃহশিক্ষককে বাসায় পুষবার জন্য তার মন যেমন সায় দেবে না, বা দৈবাৎ সায় দিলেও তার মা-বাবার কাছে সে আমার পক্ষে আর কোনো অজুহাত দাঁড় করাতে পারবে না; কারণ আমি ইংরেজিতে দুর্বল এ কথাটি সে নিজেই প্রকাশ করেছে; প্রকাশ না করলেও তা আপনা আপনিই ফাঁস হয়ে যেত।
পারুলকে বললাম, মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করো।
পারুল মাথা নিচু করে মাটির দিকে তাকালো।

সে রাতে আমি কৌশিকদের বাসায় উঠেছিলাম। কৌশিক আমার স্কুলজীবনের বন্ধু। ওর বাবা নারায়নগঞ্জের এক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। গ্রামের স্কুলে এস.এস.সি পাশ করার পর ওরা পুরো পরিবার বাবার সাথে ফতুল্লায় বসবাস করতে শুরু করে।
পাশাপাশি গ্রামে আমাদের বাড়ি ছিল। কৌশিক ছিল দারুণ মেধাবী ছেলে। আমার অবস্থা তথৈবচ, টেনেটুনে ক্লাস পার হয়ে সর্বোচ্চ ডিগ্রিটা অর্জন করতে পারলেই আমার চলবে।
কৌশিকের সাথে আমারই বন্ধুত্ব ছিল সবচাইতে বেশি। বন্ধুদের মধ্যে বোধহয় আমারই ওদের বাসায় সবচাইতে বেশি যাওয়া-আসা হতো। কৌশিক লেখালেখি করতো, আমিও চেষ্টা করতাম, তবে ওর মতো হতো না। আমি ছিলাম ওর একনিষ্ঠ পাঠক, ভক্ত ও সমঝদার। ওর লেখাকে অতি জীবনঘনিষ্ঠ মনে হতো। আমার মনে হতো, ও যেসব গল্প লেখে তা আমাকে কল্পনা করেই লেখে। ওর গল্পে আমি আমার নিজ জীবনের ছায়া দেখতে পেতাম। আমার নিজের সম্পর্কে ও কী ভাবে? কখনো অযত্ন-লালিত অবহেলিত অনাথ কিশোর- সে আমি। কখনো মায়াবী মেয়ের অভিমানী প্রেমাস্পদ- সেও আমি। এজন্য ওর গল্প আমাকে খুব টানতো। ওর সাহিত্য নিয়ে এখন আমি প্রকাশ্যে যত রাগই ঝাড়ি না কেন, ওর লেখালেখি বাস্তবিকই আমি পছন্দ করি, এবং ওকে দেখে মাঝে মাঝে আমি খুব অনুপ্রাণিত বোধ করতাম।
কৌশিকের বড়োবোন শিমু আপা আমাকে খুব স্নেহ করতেন। ওর ছোটোবোন নিপাও একেবারে আপন বোনের মতো ব্যবহার করতো।
ওদের বাসায় ঘন ঘন যাতায়াতের কারণ ছিল মূলত সাহিত্য আলোচনা করা। কৌশিকের লেখা আমিই বেশি পড়তাম, সেই সুবাদে আলোচনায় আমার দাপট থাকত বেশি। শিমু আপা এবং নিপা মাঝে মাঝে আমার সাথে একমত পোষণ করতেন, তবে তাঁরা ঢালাও ভাবে কৌশিকের সমালোচনা করতেন। অন্যদিকে, সুযোগ মতো আমার ছোটোখাটো কবিতাগুলোকে যেই বের করতাম, তা তাঁরা লুফে নিতেন।

কৌশিকদের বাসায় ঢুকেই বুঝলাম ওরা আজকাল খুব ভালো নেই। ওর দু-বোন ও মা এবং ও নিজে- এই চার জনের সংসার, বাবা বেঁচে নেই। কৌশিক যখন কলেজে সবে দ্বিতীয় বর্ষে পা দিয়েছে, ওর বড়োবোনটির বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে বলে দুশ্চিন্তায় ওর বাবা-মার ভালো ঘুম হয় না, ঠিক ঐ সময় কোনো এক নিষ্ঠুর দুপুরে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে ওর বাবা গাড়ি চাপা পড়ে মারা যান। বেসরকারি স্কুলটিতে কোনো পেনশন সুবিধাদি নেই। তবে কর্তৃপক্ষ একটা মহৎ কাজ করেছিলেন, কৌশিকের মাকে জুনিয়র ক্লাসে পড়ানোর জন্য একটা শিক্ষয়িত্রীর পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন। চারজনের সংসার তখন ওর মায়ের কাঁধে। কৌশিক খুব মেধাবী ছাত্র ছিল। সামান্য নম্বরের জন্য সে এস.এস.সি-তে মেধা তালিকায় স্থান হারিয়েছিল, এইচ.এস.সি-তে যেন অবশ্যই প্রথম বিশ জনের মধ্যে থাকতে পারে এ লক্ষ্যেই সে এগোচ্ছিল। কিন্তু তাকে হোঁচট খেতে হলো। মায়ের বোঝা হালকা করার জন্য প্রথমে একটা-দুটো করে ছাত্র পড়ানো শুরু করে, তারপর ধীরে ধীরে পুরোদমে সে টিউশনি করতে শুরু করে দেয়। আশানুরূপ ফল হয় নি, তবে যা হয়েছে তা আমাদের চেয়ে অনেক ভালো, এবং ও মেধাবী বলেই এরূপ ফল সম্ভব হয়েছিল। আজকের কোচিং সেন্টারের গোড়াপত্তন হয়েছিল সেই সময় থেকেই।
আমি কী করবো, কোথায় খাব? বোঝার ওপর শাকের আঁটিও ভার। শহরের বাসায় একটা ছেলেকে বেশিদিন বিনে পয়সায় খাওয়ানো যায় না।
কৌশিককে বললাম, একটা টিউশনি যোগাড় করে দিতে পারবি?

কৌশিক আমাকে একটা টিউশনি যোগাড় করে দিয়েছিল। তা থেকে যা পাব তার পুরো অংশটা কৌশিকদের খরচের সাথে যোগ করে দেব, অর্থাৎ আমি একজন পেয়িং গেষ্ট হিসাবে থাকবো বলেই মনে মনে স্থির করলাম।
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। ছেলেটির শখ হলো ছবি আঁকা। পড়তে বসে পড়ে না, কেবল ছবি আঁকে। বকা দিলে কলম দিয়ে চোখে খোঁচা দিতে আসে। আমি ওকে পড়ানো শুরু করলাম। সপ্তাহে ছয়দিন পড়াতে হবে, মাসিক বেতন আপাতত একশো। ছাত্রের উন্নতি হলে আরো গোটা পঞ্চাশেক বাড়ানো হবে।
প্রথম দিনই বুঝলাম আমি তার খুব বন্ধুতুল্য গৃহশিক্ষক হতে পারবো। কারণ, সে যেসব ছবি আঁকে বাল্যকালে আমিও তা প্রচুর আঁকতাম। সে খাতায় রং পেন্সিল দিয়ে আঁকে, আমি মাটির পেন্সিলে স্লেটের ওপর আঁকতাম। কখনো পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে মাটির ওপর দাগ কেটেও আঁকতাম।
ওর নাম বিল্লাল মিয়া, তবে সবাই বীলু বলে ডাকে।
বীলু আমাকে প্রথম দিনই হাতির ছবি এঁকে দেখালো। ছবিটা সুন্দরই হয়েছে, তবে চোখ দুটো আকারে সামান্য বড়ো হয়ে গেছে, শূঁড়টাও হয়ে গেছে একটু বেশি মোটা। আমার মনে পড়ে ওর মতো বয়সে আমি আরো সুন্দর করে হাতি আঁকতে পারতাম।
ওর খাতায় আমার হাতি আঁকা দেখে বীলু অভিভূত হয়ে গেল। বললো, স্যার, আমি এটার ওপর পাঁচবার হাত ঘুরাবো, তারপর এরকম একটা হাতি বানাবো (আসলে সে আঁকবে)।
বীলুর হাত শিল্পীর হাত- ওর হাতি আমার হাতিকে ছাড়িয়ে গেল। পাঠ্যবইয়ের পড়া বাদ দিয়ে ছবি নিয়েই সারাটা সময় দিন কেটে গেল। যাবার সময় বাংলা বইয়ের একটা ছড়া হোমটাস্ক দিয়ে খুশি মনে বের হয়ে গেলাম।
ছবি আঁকাঝুকা আর হোমটাস্ক দিয়ে আমার টিউশনির কাজ বেশ ভালোভাবেই চলে যাচ্ছিল। বীলুর মা-বাবা খুব খুশি- ওর দুষ্টুমি আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে, পড়ায় কতখানি মনোযোগী হয়েছে, বা কতখানি উন্নতি সাধিত হয়েছে তা গৌণ। তাঁদের ভাবখানা এই, আমি এখন বীলুর ‘পীর বাবা’, তাকে যা বলবো সে মন্ত্রমুগ্ধের মতো তা শুনবে। আসলেও তাই।
একদিন বাসায় ঢুকতেই বীলুর মা এক ভয়ংকর অভিযোগ উত্থাপন করেন বীলুর বিরুদ্ধে- সে নাকি বাইরে থেকে এক জঘন্য অশ্লীল ভাষা শিখে এসেছে যা অনর্গল আওড়ে যাচ্ছে, কারো কথাই শুনছে না। শেষমেষ তার মা তাকে বকা দিয়েছিলেন। বকা খেয়ে অভিমান করে বীলু বাথরুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে বসে আছে। সে গত পাঁচ ঘন্টা যাবত কিচ্ছু খাচ্ছে না। তার মা তাকে ডেকে ডেকে দরজায় মাথা ঠুকে রক্ত বের করার উপক্রম করছেন, কিন্তু বীলুর অভিমান পড়ে না।
আমি বাথরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে ডাকলাম, বীলু।
জি।
বেরিয়ে এসো।
সুবোধ বালকের মতো দরজা খুলে বাইরে এসে অপরাধীর মতো বীলু সামনে দাঁড়ায়। ভয়ে ভয়ে আমার দিকে চোখ বড়ো করে একদৃষ্টিতে সে তাকায়।
বললাম, তুমি নাকি খারাপ কথা বলছো?
জি না স্যার, আমি বলেছি ... বীলু অকপটে সেই অশ্রাব্য অশ্লীল কথাটা বলতে না বলতেই আমি দুহাতে ওর দুগাল কষে দুই ঘা চড় মারলাম- সঙ্গে সঙ্গে আ আ শব্দে বিকট আর্তনাদে কয়েক পাক ঘুরে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো বীলু- সে যন্ত্রণায় ছটফট করছে-
আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ়- বীলুর মা তাড়াতাড়ি ছেলেকে উঠিয়ে খাটে শুইয়ে কাঁদতে শুরু করে দিলেন- বাবা বীলু- বাবা রে- কথা বল- অমন করছিস কেন?
আমি দ্রুত পানি এনে বীলুর চোখেমুখে ছিটিয়ে দিই। প্রায় আধ ঘন্টার মতো শ্রুশ্রূষার পর বীলু স্বাভাবিক হয়- মাঝে মাঝে একেকটা বুকফাটা দীর্ঘশ্বাস বেরোয়।
বীলুর মা কাঁদ কাঁদ হয়ে আছেন, তিনি বিব্রত। আমি বীলুকে কী বলে আদর করবো সেই ভাষা খুঁজে পাই না।
বীলুর বাবা যখন বাসায় ফিরলেন- বাবা বলে কাঁদতে কাঁদতে সে তাঁর কোলে ঝাঁপিয়ে পড়লো- তিনি কিছু বুঝতে পারছেন না।
কী হয়েছে বাবা, কী হয়েছে? তিনি জিজ্ঞাসা করেন। কিন্তু বীলু কিছু বলে না। তিনি আমাদের জিজ্ঞাসা করেন, ওর মা কিছু বলেন না। আমি বলি, চাচা মিয়া, আজ আমার মনটা ভালো ছিল না। তাই ওকে মেরেছি।
বীলু তখন ওর বাবার বুকে লেপ্টে ছিল। বাবা তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। তাঁর চোখে অশ্রু জমে উঠেছে, আমি চোখের দিকে না তাকিয়েও বুঝতে পারি।
কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর বীলুর বাবা বলেন, দুঃখ নিয়েন না। ও তো আপনার ছোটো ভাইয়ের মতোই। ছোটো ভাইকে মারলে কিছু হয় না।
আমার চোখের পানি আর থামিয়ে রাখতে পারি না। আমি বলি, চাচা মিয়া, আমার পরীক্ষা শুরু হচ্ছে, পড়াশোনার অনেক চাপ। কুলোতে পারবো না।
আমি সপ্তাহ দুয়েক পড়িয়েছিলাম। কিন্তু বীলুর বাবা আমাকে এক মাসের বেতন দিলেন, তাও একশো নয়, একশো পঞ্চাশ টাকা। বললেন, আইসেন, মনে লইলেই চইল্যা আইসেন। তারপর ভেতরের ঘরে গেলেন বীলুকে কোলে করে।
আমার ধারণা, বীলুর মা কিংবা বাবা জীবনে কোনোদিন বীলুর গায়ে একটা আঙ্গুলের টোকাও দেন নি। সেই সোনার টুকরোর গায়ে আমি পাঁচ-পাঁচ দশ আঙ্গুলের চাবুক মেরেছি।

কৌশিকদের দিন চলে না এমনিতেই, তার ওপর আমি জুড়ে বসেছি। চক্ষুলজ্জার জন্য কেউ মুখ ফুটে কিছু বলতে পারে না। আবার এটাও আমি উপলব্ধি করতে পারি, এ বাসা ছেড়ে চলে গেলে ওদের মনেও প্রচুর কষ্ট হবে।
বাড়ি থেকে বাবা আমার জন্য কোনো টাকা পাঠাতে পারবেন না সেটা আমি জানি। কিছু দিতে গেলে দেনা করে দেয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। আমার বাবা একজন কৃষক, গণি মিয়ার মতো তিনি অন্যের জমি চাষ করে অতিকষ্টে দিন গুজরান করেন- দেনা করলে তা পরিশোধের উপায় নেই।
শিমু আপার মলিন চেহারা আমার মনকে খুব বিষণ্ন করে দেয়। সেই আগের মতো সাহিত্যের আড্ডা বসে না। খালাম্মা স্কুলের পড়াশোনায় ব্যস্ত, নিপা ব্যস্ত তার নিজের পড়াশোনা নিয়ে। শিমু আপার পড়াশোনা বন্ধ হয়েছে তাঁর বাবার মৃত্যুর আগেই। তখন থেকেই তিনি বিয়ের জন্য প্রতীক্ষায় আছেন- পাত্র এসে পাত্রী দেখে, হাঁটাচলা, হাতপায়ের নখ, গোড়ালি ছেড়ে শাড়ির পাড় উঁচু করতে করতে হাঁটু অব্দি উঠাতে চায়, মনের ভেতরে তেমন বাসনা একাগ্র হলেও ও-পর্যন্ত উঠানো হয় না- কী যে ত্রুটি আছে মেয়েটির পায়ে, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখার চেষ্টা করেও তা খুঁজে বের করা যায় না- শেষ পর্যন্ত পাত্রপক্ষ অর্ধ-হাসি-মুখে বাড়ি ত্যাগ করে- ‘আমরা পরে জানাবো’ বলে বিদায় নিলেও পরে আর কিছু জানানো হয় না- কারণ বিয়ের ঘটকালিতে পরে জানানোর অর্থ একটাই- মেয়ে পছন্দ হয় নি- এ কথাটি পাত্রীপক্ষের মুখের ওপর সরাসরি বলতে বাঁধে।
শিমু আপা খুব খুড়িয়ে হাঁটেন না- ঠায় দাঁড়িয়ে থাকলে মনে হয় ডানদিকে সামান্য কাত হয়ে আছেন, হাঁটতে গেলে সেই কাতটুকু স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়ে।
শিমু আপা স্নিগ্ধ সুন্দরী। গায়ের রং ধবধবে ফর্সা নয়, চেহারায় কোনোরূপ উগ্রতা নেই- কেমন শান্ত ধীর, দেখলেই মনে হয় যেন কবিতার শরীর।
শিমু আপার জন্য আমার খুব কষ্ট হতে শুরু করে। বুকের ভেতর একটা অস্থিরতা অনুভব করতে থাকি, সেই কষ্ট দিন দিন বাড়তে থাকে, বাড়তেই থাকে।
শিমু আপার বাবা আমৃত্যু অপর মানুষের সন্তানাদি পড়িয়ে গেছেন, তাদের মানুষ করার জন্য। তারা বড়ো হয়ে একদিন তাঁর নাম বলবে, তিনি মরেও অমর থাকবেন। কিন্তু নিজের বড়ো মেয়েটাকে তিনি পড়াতে পারেন নি।
শিমু আপা শিক্ষকের মেয়ে ছিলেন, মা-ও অশিক্ষিতা নন। তারপরও আপা পর পর দুবার এস.এস.সি-তে ফেল করেছিলেন। তৃতীয় বারের মাথায় অংকে গ্রেসসহ তৃতীয় বিভাগে তাঁর পাশ জোটে। এইচ.এস.সি-তে প্রথমবার ফেল করলে দ্বিতীয়বারের মতো আর কোনো চেষ্টা করা হয় নি- আপার নিজের ওপর যেমন আস্থা ছিল না, তেমনি অর্থ-অপচয় করার আর কোনো মানসিকতা ছিল না, সঙ্গতিও ছিল না। সেই থেকেই বিয়ের জন্য তাঁর প্রতীক্ষার শুরু।
একদিন আমি মনে মনে খুব উত্তেজনা বোধ করতে লাগলাম। শিমু আপাকে আমি একটা কথা বলতে চাই। সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথম দেখায়ই তাঁকে কথাটা বলবো, ভাবলাম। বলা হলো না, আমার বুক খুব কাঁপছিল। ভাবলাম, একটু পরেই বলবো। দুপুরে বলবো। বিকেলে- সন্ধ্যায়- রাতে।
তার পরের দিন সুযোগটা পেয়ে গেলাম। আমি আর শিমু আপা বাসায় একা। আমি প্রতিজ্ঞায় স্থির- আপাকে বলবো- আপা, আমি আপনার জীবনটাকে এভাবে জ্বলেপুড়ে শেষ হতে দেব না। আপনিও মানুষ। আপনি এভাবে ধ্বংস হয়ে যাবেন, তা আমার সহ্য হবে না। তারপর আপার হাত ধরে বলবো, শিমু আপা, আমি আপনাকে প্রচণ্ড ভালোবাসি। আমরা কি একটা নতুন জীবন গড়তে পারি না? চলুন, আমরা একটা সংসার পাতি।
আমি খাটের ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে বালিশে মাথা ঘষছিলাম। এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ টের পাই- আপা আমার পাশে বসে মাথায় হাত রাখছেন। আমি চমকে তাকাতেই আপা বলেন, তুমি কাঁদছো কেন?
কাঁদছি? কই, না তো।
আপা আমার দিকে তাকিয়ে আছেন, আশ্চর্য, আমি যে সত্যিই ফুঁপিয়ে কাঁদছিলাম তা আমি নিজেই টের পাই নি।
কাঁদছো কেন? আপা আবার জিজ্ঞাসা করেন।
আমি হাত দিয়ে চোখের কোনা মুছি। আপা বলেন, বাড়ির কথা মনে পড়ছে খুব? বোকা ছেলে, তুমি কি পুরুষ মানুষ না? পুরুষ মানুষ কি বাড়ির জন্য এভাবে কাঁদে?
আমার খুব খারাপ লাগছে আপা- খুব খারাপ লাগছে- বলেই আমি কাত হয়ে আপার কোলের ওপর মাথা রেখে তাঁর কোমর জড়িয়ে ধরি। আপা আমার মাথায় বিলি কাটেন আর নরম ছোটো ছোটো শব্দে আমাকে সান্ত্বনার কথা শোনাতে থাকেন। আমি হঠাৎ উঠে বসি, তারপর খপ করে তার হাত ধরে আমার বুকের সাথে মিশিয়ে বলি- আপা, আমার বুকের ভেতর দারুণ কষ্ট। আমি তা বলতে পারছি না আপা- আপা, আমি আপনাকে ছাড়া বাঁচবো না, আপনাকে আমি বিয়ে করতে চাই ...।
আপা আমার হাত থেকে আস্তে তাঁর হাত ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে দাঁড়ান। তাঁর চোখ ধীরে ধীরে কঠিন হতে থাকে। আপা বলেন, তুমি আমাকে ভুল বুঝেছ। তুমি যা ভেবেছ আসলে আমি তা নই। আমার চেয়ে তিন-চার বছরের ছোটো তুমি, আমার ছোটো ভাইয়ের বন্ধু- কী করে আমাকে নিয়ে এমন করে ভাবলে? আমাকে দেখলে কি মনে হয় শরীরের যন্ত্রণায় আমি ছটফট করছি? আপা হঠাৎ উত্তেজিত হতে থাকেন। বলেন, তুমি আমাকে কী মনে করছো? আমাদের সংসার চলে না বলে আমি শরীর বেচে খাই, তুমি তাই ভাবছো? তাই তুমি একটু চেখে দেখতে চাইছ? ছিঃ, এত নোংরা তোমার মন, এত নিচ তুমি? চোখে অগ্নিবর্ষণ করে আপা দ্রুত বেরিয়ে গেলেন।
আমার শরীর বরফ হয়ে আসে। আমি অনুভব করতে থাকি, এতদিন যা ভেবেছি তা আমার অলীক ভাবনা ছিল। বাস্তবে ফিরে আসি। আমার বাবা একজন কৃষক- গণি মিয়ার মতো- আমার সন্তান যেন না বলতে পারে আমার বাবা একজন কৃষক ছিলেন- সে উদ্দেশ্যে আমি গ্রাম ছেড়ে শহরে এসেছি। আমার মেধার খবর আমি জানি, আমার বাবা তা বোঝেন না। তিনি বোঝেন এবং গর্বের সাথে উচ্চারণ করেন, আমার পুলা কত বড়ো বড়ো পাশ দেয়- আমার পুলা বড়ো অইয়া ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, জর্জ, ব্যারিস্টার অইব- সকল বাবা যেমন চান, আমার গণি মিয়া কৃষক বাবাও তেমনি আরো অনেক কিছু চান, অনেক কিছু ভাবেন। দৈবাৎ আমি যদি এমন এক উচ্চাসীন ব্যক্তি হয়ে উঠি, যা কখনো হবার নয়- গ্রাম থেকে আমার বাবা শহরে বেড়াতে আসবেন, পায়জামা-পাঞ্জাবি তার পরনে, হাতে মাটির হাঁড়িতে অতিখাঁটি রসগোল্লা, গরুর খাঁটি দুধে যা তৈরি- আমার বাবা খুব গর্ব করে বলবেন, আমি কৃষক আছিলাম, আমার পুলা কত্ত বড়ো অফিসার অইছে- কিন্তু আমি জানি, কৃষক হওয়াতে কোনো গর্ব আর খ্যাতি নেই। জীবন বৃত্তান্তে অতি কৌশলে বাবার আসল পেশা গোপন করে লিখবো- My father is a business man.
সেই কৃষক-পুত্র আমি উপলব্ধি করতে শুরু করি- শিমু আপার প্রতি আমার যে টান অনুভব করেছি তাতে হয়ত সত্যিকারের ভালোবাসা ছিল, কিন্তু আমি বুকে টোকা দিয়ে বলতে পারছি না, তার শরীরের প্রতি আমার কোনো লোভ জন্মে নি। আমি কি সত্যিই তাঁকে বিয়ে করতে পারতাম? আমার বাবা- আমার জন্য যাঁর দুচোখে স্বপ্নের অন্ত নেই- তিনি কি এমন একটা বিয়ে মেনে নেবেন? কৌশিক আমার সহপাঠী, সে কি তার চেয়ে বয়সে তিন-চার বছরের বড়োবোনকে আমার হাতে তুলে দেবে? সকল অসম্ভাবনাকে কাটিয়ে যদিও বা তাঁকে বিয়ে করা গেল- কিন্তু সেটাই তো প্রকৃত জীবনের শুরু। যাঁকে সুখ দেয়ার জন্য বিয়ে করবো তাঁকে কি সত্যিকারের সুখ দিতে পারবো? আমি এক কৃষক-পুত্র, অপরিণত বয়স্ক দরিদ্র ছাত্র, সর্বদা নিজের থাকা-খাওয়ার দুশ্চিন্তায় মাথা ভনভন করে, নতুন বউকে কী খাওয়াব?
আমি বুঝতে পারলাম, যা ভেবেছি তা অতি অস্বাভাবিক এবং তা কেবল আবেগের বশেই আমি করেছি।
কৌশিকদের বাসা ত্যাগ করেছিলাম চোরের মতো। বিদায়কালে দরজায় দাঁড়িয়ে আপাকে ডাকলাম, আপা, আমি চলে যাচ্ছি। দরজাটা আটকে দেন।
শিমু আপা দৌড়ে এসে পথ আগলে বলেন নি, তুমি যেয়ো না। তোমার ভুল আমি ক্ষমা করে দিলাম। তুমি ভালোভাবে লেখাপড়া করো, আমার মতো খুড়ো মেয়ে কেন, নিপার মতো সুন্দরী মেয়েই তোমার বউ হবে। তুমি নিপাকে পছন্দ করো না?
চৌকাঠ পার হতেই ঝপাট শব্দে দরজা বন্ধ হয়ে গেল। আমি যেতে যেতে একবার ধীরে পেছন ফিরে তাকালাম, মনে মনে বলি, দেখি, জানালায় কেউ দাঁড়িয়ে কিনা। শূন্য জানালা খাঁ-খাঁ করছিল।


**

খ্যাতির লাগিয়া, উপন্যাস, একুশে বইমেলা ২০০৪

**

ডাউনলোড লিংকঃ খ্যাতির লাগিয়া
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:১৯
২৭টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দেশনায়ক তারেক রহমানকে সম্পৃক্ত করার নেপথ্যে  

লিখেছেন এম টি উল্লাহ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৮


আগেই বলেছি ওয়ান ইলেভেনের সরকার এবং আওয়ামীলীগের যবনায় জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে পৌনে একশ মামলা হলেও মূলত অভিযোগ দুইটি। প্রথমত, ওই সময়ে এই প্রজন্মের নিকট উপস্থাপন করা হয়েছিল দেশনায়ক তারেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পকে নিয়ে ব্লগারদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



**** এডমিন টিমের ব্লগারেরা আমাকে বরাবরের মতোই টার্গেট করে চলেছে, এভাবেই সামু চলবে। ****

ট্রাম্পের বিজয়ে ইউরোপের লোকজন আমেরিকানদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী শংকিত; ট্রাম্প কিভাবে আচরণ করবে ইউরোপিয়ানরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পের বিজয়, বিশ্ব রাজনীতি এবং বাংলাদেশ প্রসংগ

লিখেছেন সরলপাঠ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২১

ট্রাম্পের বিজয়ে বাংলাদেশে বা দেশের বাহিরে যে সব বাংলাদশীরা উল্লাস করছেন বা কমলার হেরে যাওয়াতে যারা মিম বানাচ্ছেন, তারাই বিগত দিনের বাংলাদেশের ফ্যাসিস্টের সহযোগী। তারা আশায় আছেন ট্রাম্প তাদের ফ্যাসিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠেলার নাম বাবাজী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩১

এক গ্রামীণ কৃষক জমিদার বাড়িতে খাজনা দিতে যাবে। লোকটি ছিলো ঠোটকাটা যখন তখন বেফাস কথা বা অপ্রিয় বাক্য উচ্চারণ করে ক্যাচাল বাধিয়ে ফেলতে সে ছিলো মহাউস্তাদ। এ জন্য তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×