(জানি, কখনো এ কবিতাটি তোমার হাতে পৌঁছুবে না। কিন্তু ধরো, দৈবাৎ একদিন পৌঁছুলোই,
সেদিন প্রথমবার অমনোযোগে চোখ বুলিয়ে যাবে, যেতে যেতে এক জায়গায় হঠাৎ তোমার চোখ
আটকে যাবে- হয়ত, তখন তুমি আবার ‘শুরু’ থেকে পড়তে শুরু করবে- হয়ত-বা, নিশ্চিত নই,
পড়তে পড়তে কিংবা পড়া শেষ হলে নিগূঢ় মনে ভাববে- কে লিখেছে এ কবিতাটি? আমাকে তুমি
চিনতে পারবে না, কিংবা পারবে- নিশ্চিত নই। তবে নিশ্চিত জেনো, এটি আমিই লিখেছি)
ইদানীং সারাটা সময় বড্ড আবেগাক্রান্ত থাকি
মাথা-মুণ্ডু কত কী যে করি, কবিতা লিখি,
গান, গল্প, উপন্যাস লিখি, ছবি আঁকি
স্বরচিত বইয়ের প্রচ্ছদের।
ঘণ্টা দুয়েক পর যখনই পুনর্বার পড়ি, দেখি এসবের
কিছুই হয় নি - কবিতা, গান, গল্প
কিংবা উপন্যাস -গাঁজাখুরি সবই।
তিনবেলা ভাত খাওয়ার মতো
তিনবেলা যায় না কবিতা লেখা, তাহলে
এদেশের চৌদ্দ কোটি জনগণের প্রত্যেকেই হতে পারতো কবি।
এখনো নিবিষ্ট মনে প্রতিদিন তোমার ভালোবাসার দিনলিপি পড়ি,
পড়ি আর মুগ্ধ বিস্ময়ে উপলব্ধি করি
কী এক ‘আগুন-প্রতিভা’ ঘুমিয়ে তোমার ভেতরে।
তখনও হয়ত-বা কবিতাই চেনো না তুমি, ততদিনে
অন্তত দশটি বছর ধরে
সাহিত্যে আমার নীরব পদচারণা, আরো দেখেছি হিসেব করে
পৃথিবীতে তোমার আগমন আমার থেকে
ঠিক-ঠিক দশটি বছর পরে।
তুমি যদি হও ‘পঁচিশ’ বছরের ‘খুকি’
আমি তবে ‘পঁয়ত্রিশ’ বছরের ‘বুড়ো’,
অথচ কবিতায় তুমি এক পরিণত মূর্ত মহিয়সী,
আর আমার আজ, কাল অথবা পরশু জন্ম হলো।
আজকাল সন্ধ্যা হলেই বড্ড আবেগাক্রান্ত হয়ে উঠি :
সহসাই তোমার ফোন আসবে, কিংবা মুঠোফোনে সংকেত-
ই-মেইলে এইমাত্র পাঠিয়ে দিয়েছো
একগুচ্ছ সতেজ কবিতা। তোমার কবিতার ঘ্রাণে
আবিষ্ট হবার আগে আমি বহুক্ষণ আমাতে
বুঁদ হয়ে পড়ে থাকি, অকস্মাৎ
সম্বিৎ ফিরে পেলে দ্রুত মুঠোফোন খুলে দেখি
বিরান খাঁ-খাঁ মরুভূমি।
তবুও আশায় থাকি
আশায় থেকে-থেকে
থেকে-থেকে
থেকে-থেকে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে
অধীর নিশ্বাসে ই-মেইল খুলতেই
বিশাল পর্দা জুড়ে ভেসে ওঠে ধবধবে ‘শূন্যতা’।
তিনবেলা ভাত খাওয়ার মতো সত্যি তিনবেলা
যায় না কবিতা লেখা; কিন্তু
আমি জানি তিনবেলারও অধিক- সারাবেলা
কলমে কর্ষণ করো তুমি, তোমার
অনলবর্ষী কবিতা অহর্নিশি আমার অন্তরে আগুন জ্বালে,
তোমার কবিতার ফল্গুনদী আমার হৃদয়ে এখনো দিব্যি প্রবহমান।
কতদিন তোমার কবিতা পড়ি না, গল্প পড়ি না,
উপন্যাস, কিচ্ছুটকুন পড়তে পাই না-
আমার অন্তর্দহনের জ্বালা কী করে বুঝবে তুমি?
আমার কী দোষ ছিল, কবি? একবারও বলো নি
কী আমার অপরাধ ছিল।
আমাকে যন্ত্রণায় বিদ্ধ করে অপার্থিব সুখ তুমি পাও। বক্র
ওষ্ঠে সতত ধরে রাখো অতি ক্ষীণ ক্রূর হাসিরেখা-
আমার দুঃখগুলো কবে উবে যেতো, যদি বলতে
আমাকে কষ্ট দিয়ে তুমিও সুখে নেই, তুমিও
নিদারুণ কষ্টে বেঁচে আছো।
আজও তুমি কিছুই বললে না।
• ২০০৪
-----
'অন্বেষা', একুশে বইমেলা ২০০৫
-----
এমনিতেই কবিতা হয় না, এর উপর স্কুল জীবনে লেখা- এসব হাবিজাবি নিয়ে 'অন্বেষা'।
কবিতা কত কাঁচা ও দুর্বল হতে পারে, তা দেখতে চাইলে ডাউনলোড করতে পারেন।
এগুলো দেখে কেউ কেঁদে ফেললে তার দায়ভার একমাত্র আমারই। নিজের দোষ অন্যের
উপর চাপাইতে লজ্জা করে
অন্বেষা ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন
উৎসর্গঃ সেই অকুতোভয়, সংশপ্তক পাঠক, যাঁরা এটা পড়লেন বা পড়লেন না, 'অন্বেষা' ডাউনলোড করলেন বা করলেন না, কিন্তু 'উৎসর্গ'র উপর চোখ বুলিয়ে গেলেন
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৪১