প্রতিরাতে বারোটা বাজলেই তোমাকে দেখি
শিফন শাড়িতে ঝরে পড়ে সুনিপুণ হাসি
তখন ভাবি ছাইছুতো এ ব্লগ লেখালেখি
এর চেয়ে ঢের ভালো প্রেম-ভালোবাসাবাসি
তোমার ছায়ামুখ একটু আধটু যা দেখি-
অঙ্গে অঙ্গে সুধা, সুরে তুমি গানের বায়স!
এসব রম্যকথায় হাসি পেলে আমি গেছি
গোপন ঘুমগুলো কেড়ে খাবে রাত্রিরাক্ষস।
তুমি ভাবো এসব লিখেছি তোমার উদ্দেশে
আড়ালে আবডালে কেঁদেকুটে চোখে করো ঘা
মিছেমিছি নিজেকে কষ্ট দাও ক্রূর আক্রোশে
আদতে এ হলো একটি সনেটের খসড়া।
সনেট অন্য কিছু না, মামুলি কবিতা মাত্র
এ লিখে নষ্ট হলো একটি মূল্যবান রাত্র।
২২ মার্চ ২০১২
এবার খানিকটা বিশ্লেষণ করা যাক এ সনেটটির
এটা কি আদতে সনেট? যে-কোনো একটা কবিতাকে উদ্দেশ্য করে যেমন জিজ্ঞাসা করা যায়, এটা কবিতা হয়েছে কিনা, তেমনি যে কোনো সনেটের ব্যাপারেই এ প্রশ্নটি করা যায় - ‘এটা কি আদতে সনেট হয়েছে?’ সনেট বিশ্লেষণের জন্য আমার মতে এর ভাববিন্যাসটিই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। কিন্তু সনেটের সৃষ্টিকাল হতে এ যাবত যত সনেট পয়দা হয়েছে, সবার আগেই বিশ্লেষণ করা হয়েছে এর বাহ্যিক রূপকল্পটি, এবং ভাবপ্রবাহের বিন্যাস আলোচিত হয়েছে অনেক কম। এতে ধরে নেয়া যায়, রূপকল্পটিই একটি সনেটের প্রধানতম বৈশিষ্ট্য।
নীচে দেয়া লিংকের ১ম পোস্টে আপনারা দেখবেন, রূপকল্প নির্মাণে কত বিচিত্র নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছে। সর্বশেষ এ-ও দেখা যাচ্ছে- প্রতি পঙ্ক্তিতে স্বর/মাত্রা/অক্ষরসংখ্যা সমান রেখে অমিত্রাক্ষর ছন্দে সনেট লেখা হচ্ছে। আমরা অতি সত্ত্বর এ অমিত্রাক্ষর ধারার সনেট খুব দেখতে পাবো বলে আমার মনে হচ্ছে।
এ পোস্টের লেখাটাকে আমি দাবি করছি এটা একটা সনেট, যাতে প্রচলিত সনেট থেকে কিছু ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে; তবে এ ব্যত্যয় ঘটানোর কাজ প্রসিদ্ধ কবিরা আগেও করেছেন; যেমন, এর প্রতি পঙ্ক্তিতে ১৪টির পরিবর্তে ১৬টি করে অক্ষর রয়েছে। রূপকল্প : কখকখ গঘগঘ ঙচঙচ ছছ। ‘দেখি’র সাথে ‘গেছি’র ‘ই’ ধ্বনি, এবং ‘করো ঘা’র সাথে ‘খসড়া’র ‘আ’ ধ্বনি যোগে অনুপ্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে। ১৪ লাইনের জায়গায় ১৬ লাইন এবং ১৪ অক্ষরের পরিবর্তে ১২, ১৬, ১৮, এমনকি ২৬ বা তারও বেশি সংখ্যক মাত্রায় সনেট রচিত হতে দেখা গেছে। নীচের লিংকগুলোতে তার উদাহরণ পাওয়া যেতে পারে, অন্যথায় কবি আব্দুল কাদিরের 'ছন্দ সমীক্ষণ' বইয়ের সনেট সংক্রান্ত অধ্যায় দেখতে পারেন। আমার লিংকের পোস্ট দুটো মূলত কবি আব্দুল কাদিরের বই থেকেই তুলে দেয়া।
সনেট সংক্রান্ত আমার দুটো পোস্ট
সনেটের অন্ত্যমিল ও পঙ্ক্তি-বৈচিত্র্য : প্রথম পর্ব
সনেটের অন্ত্যমিল ও পঙ্ক্তি-বৈচিত্র্য : দ্বিতীয় পর্ব
ছন্দ সম্পর্কে জানতে চাইলে পড়তে পারেন নীচের লেখাটি
বাংলা কবিতার ছন্দ - প্রাথমিক ধারণা
এবার একটা উপকারী পোস্টের লিংক
একুশে বইমেলা-২০১৮ সমাগত। যাঁরা বই প্রকাশ করতে চান, প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য এখনই উপযুক্ত সময়। নবীন লেখকলেখিকাদের জন্য এটি একটি অবশ্যপাঠ্য প্রবন্ধ। রেডি রেফারেন্স হিসাবে প্রিন্ট করে রাখলে বেশি উপকার পাবেন বলে মনে করি।
নবীন লেখকলেখিকাদের জন্য :: কীভাবে বই বের করবেন
বিঃ দ্রঃ ছবিটা কেন দিলাম এ প্রশ্ন তো! তাও আবার শিফন শাড়ির জায়গায় সুয়েটার/জিন্স! নিশচয়ই একটা কারণ আছে। কারণটা কিছুদিন পরে বলা যাবে নে
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:০০