২০০৫ সালের আগস্ট বা সেপ্টেম্বর মাস। আমরা বগুড়ায়।
একদিন বগুড়া শহরে ঢুকবার মুখেই পাখির দোকান দেখে পাইলট আর ঐশী বায়না ধরলো, ওদের অনেকগুলো পাখি চাই, ওরা পুষবে।
ওদের জন্য কয়েকটা পাখি ও পাখিদেরর জন্য একটা খাঁচা কিনলাম। পাইলট আর ঐশী খুশিতে আটখানা। আমি আর আমার স্ত্রীও ওদের সাথে পাখিদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।
কিন্তু খাঁচাটা খুব ছোট্ট। আমরা ছোট্ট খাঁচা ছেড়ে ঘরের একটা বারান্দাকেই খাঁচা বানিয়ে ফেললাম। মুনিয়া, লাভ বার্ড, ইত্যাদি বেশ ক’টা পাখি। আমি, ঐশী আর পাইলটকে নিয়ে পাখিদের পরিচর্যা করি। আমার পরিচর্যা এমন পর্যায়ে পৌঁছুলো যে, মনে হতে লাগলো, ঐশী বা পাইলটের জন্য নয়, আমার জন্যই পাখিগুলো শখ করে কিনেছি।
কিন্তু পাখিগুলো দিনে দিনে শুকিয়ে যাচ্ছিল, কারণ, ওরা কোনো খাবার খাচ্ছিল না। পাখিদের দোকান থেকে সব ধরনের খাবার আনলাম, কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না।
একদিন সকালে দেখি একটা পাখি মরে মাটিতে পড়ে আছে। আমার চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো। পাইলট আর ঐশীর চেহারাও কাঁদো-কাঁদো। পাখিগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে আমি অস্থির হয়ে পড়ি। কিন্তু হায়, তার পরের দিন আরো একটা পাখি মারা যায়। আমি কালবিলম্ব না করে পাখিগুলো বাইরে নিয়ে আকাশে উড়িয়ে দিই— ওরা দুর্বল ডানায় ভর করে খুব কষ্টে গাছের ডালে গিয়ে বসে। ওদের দিকে আমি চেয়ে থাকি— আমার বুক ছিঁড়ে যেতে থাকে। আমি বেশ কিছুক্ষণ ওদের চোখে চোখে রাখি। ভয় হচ্ছিল, যদি কোনো পাখি উড়তে না পেরে মাটিতে পড়ে যায়! এভাবে অনেকক্ষণ বসে থেকে আমি ঘরে ফিরে যাই— পাখিগুলো তখনো আশপাশের গাছগুলোতে বসে ছিল।
কেন যেন আমার মনে একটা সূক্ষ্ম আসা উঁকি দিচ্ছিল। পোষা প্রাণীরা মনিবের কাছে বার বার ফিরে আসে। বিড়ালের বেলায় এসব ঘটে থাকে। কুকুরের বেলায় ঘটে। অনেককে চিল, ঘুঘুপাখি পুষতে দেখি— ওরা মনিবের মাথায়, হাতে ভর করে মনিবের সাথে সাথে ঘুরতে থাকে। গাছে উড়ে যায়, আবার মনিবের কোলে ফিরে আসে। হাঁসমুরগিরা সকালে কুলায় ছেড়ে বের হয়, সন্ধ্যায় গৃহিনীর নীড়ে আপনাআপনিই ফিরে আসে। আমাদের পাখিগুলোও হয়ত, হয়ত-বা দিনশেষে ঘরে ফিরে আসলেও আসতে পারে। বারান্দার নেটের কাছে এসে ভিতরে ঢুকবার জন্য ওরা ডানা ঝাপটাবে— আমরা অধীর উল্লাসে ছুটে গিয়ে ওদেরকে বরণ করে নিয়ে আসবো।
ঘণ্টাখানেক পর ঘরের বাইরে এসে পাখিগুলোকে খুঁজি। ওরা নেই। ওরা সন্ধ্যায় আমাদের বারান্দায় ফিরে এসে ডানা ঝাপটালো না। ওরা চিরতরে ওদের রাজ্যে হারিয়ে গেছে।
পাখিগুলোকে এত যত্ন দিলাম, ওরা কীভাবে আমাকে ছেড়ে হারিয়ে যেতে পারলো? আমার হাত থেকে ছাড়া পেয়ে যখন ওরা উড়ে যাচ্ছিল, ‘হে বন্ধু, বিদায়’ স্বরূপ একবারও ওরা আমার দিকে ফিরে তাকালো না! হায় নিষ্ঠুর পাখি! হায় নিষ্ঠুর মুনিয়া!
পাখিদের জন্য আমার মন আজও কাঁদে।
২
কিছুদিন ধরে প্রায় প্রতি সকালেই আমার ঘুম ভাঙে ঘুঘুপাখি অথবা শালিকের ডাকে। বেডরুমের উত্তর দিকে তাকালেই বেশ কটি গাছ। গাছের ছায়া জানালায় এসে পড়ে। কাচখোলা জানালার কার্নিশে বসে শালিকগুলো দাপাদাপি করে, পরস্পর ঝগড়া করে, আবার প্রাণ খুলে ডাকাডাকি করে। ওদের দেখে আমাদের ছোটো ছেলে লাবিব খুব উত্তেজিত— জানালা খুলে সে শালিক ধরবে। তার মাকে বলে, আমাকে বলে, এক থাবায় শালিক ধরে এনে তার হাতে তুলে দিতে। আমরা লাবিবের কথায় হাসি। লাবিব জানে না যে এভাবে পাখি ধরা যায় না।
আজ যখন বাইরে বেরোবো, সকাল ১১টার দিকে, জানালার কার্নিশে দেখি একটা ঘুঘু ডেকে ডেকে খুন হয়ে যাচ্ছে। এমন সময় স্ত্রী ঘরে ঢুকে বলে, ‘দেখো দেখো, কত কিউট না ঘুঘুটা!’ আমি পোশাক পরতে পরতে ঘুঘুর দিকে তাকাই। ওর ডাকে একটা সুললিত সুর বা ছন্দ আছে। আমাকে মোহিত করে সেই সুর। অনেকক্ষণ ধরে ওর ডাক শুনতে ইচ্ছে হচ্ছিল। কিন্তু আমার দেরি হয়ে যাচ্ছিল। স্ত্রী বললো, ‘চলো, ওখানে একটা বাসা বানিয়ে দিই।’ আমি ঘুঘুর জন্য বাসা বানানোর কথা ভাবতে ভাবতে বাইরে চলে যাই।
বাসায় ফিরতে সন্ধ্যা হলো। ঘরে আসতেই স্ত্রী জানালা দেখিয়ে বলে, ‘দেখো, ঘুঘুটার জন্য বাসা বানিয়ে ফেলেছি।’ ঘুঘুর হয়ত এখন ডিম পাড়ার সময়। শালিকেরও ডিম পাড়ার সময় হয়ে থাকবে হয়ত। শালিক ও ঘুঘুরা নিজেদের বাসা নিজেরাই তৈরি করতে পারে। ছোটোবেলায় শালিকের বাসায় ছোঁ মেরেছি, চড়ুই ও বাবুইয়ের বাসা, ঘুঘুর বাসা, বকের বাসা, ডাহুকের বাসায় হানা দিয়েছি। আরো কত জানা-অজানা পাখির পেছনে ছুটে বেড়িয়েছি। বড়ো হবার পর পাইলট আর ঐশীর জন্য সেই যে একবার লোহার খাঁচায় পাখি পুষেছিলাম, দুটো পাখি মরে গিয়েছিল, বাকিদের আকাশে ছেড়ে দিয়েছিলাম— এরপর পাখিদের দুঃখ আমাদের মনের গভীরে ক্ষতের মতো রয়ে গেলো। পাখিরা কি গাছ ভালোবাসে, নাকি মানুষের কাছাকাছি থাকতেই বেশি পছন্দ করে? মানুষের গন্ধ কি ওদের খুবই প্রিয়? ওরা বার বার জানালার পাশে এসে এভাবে ডাকে কেন? ওদের কি গাছ নেই? গাছ কি ওদের জন্য নিরাপদ নয়? কোনো নিষ্ঠুর ব্যাধ কি ওদের পিছু নিয়েছে?
একটা প্লাস্টিক ওয়াটার বোটলের ঘাড় কেটে ফেলে কাত করে রেখে দিয়েছে জানালার শিকের গা ঘেঁষে। ওটাই পাখির বাসা— আমার স্ত্রীর বানানো। ওখানে পাখিরা আসবে, ঘুমোবে, কিচিরমিচির করবে, ডিম পাড়বে, ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফুটাবে। কিন্তু বাসাটা দেখে আমি হেসে দিলাম। এত্ত ছোটো বাসা! ওখানে পাখিরা ঢুকবে কী করে? কিন্তু স্ত্রীর আন্তরিকতায় আমি মুগ্ধ হলাম।
একদিন খড়কুটো ও বাঁশের কঞ্চি দিয়ে চমৎকার একটা বাসা বানিয়ে জানালার কার্নিশে বসিয়ে দিলাম। পাখিদের জন্য নিরাপদ ও আরামপ্রদ বাসা এরচেয়ে দ্বিতীয়টি আর হয় না।
কিন্তু ঘুঘু বা শালিকেরা কেউ এলো না তার পরের দিন সকালে। তার পরের দিন সকালেও না। এভাবে কিছুদিন কেটে গেলো। আমার মন খারাপ হলো। পাখিরা আমাদের মনে মায়া সৃষ্টি করে চলে যায়, আর ফিরে আসে না।
একদিন সকালে পাখির ডাকাডাকিতে আমার ঘুম ভাঙলো। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখি— এটি সেই ঘুঘু, বা সেই ঘুঘুটার মতো অন্য একটা। পর্দার ফাঁক দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে একটু হয়ত চমকালো, বা অবাক হলো, অথবা আমাকে শুভেচ্ছা জানালো। হঠাৎ ডাকাডাকি বন্ধ করে নীরব থাকলো কিছুক্ষণ। এরপর উল্লাসে ঘুঘুটা নেচে ওঠে। উড়াল দিয়ে গাছের ডালে গিয়ে বসে, লেজ নাচিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে। আবার আমার বানানো বাসায় উড়ে এসে বসে। ওর দাপাদাপির শব্দ আমাকে অদ্ভুত আনন্দ দিতে থাকে।
‘খুব কিউট না!’ আমার স্ত্রীও ঘুম থেকে উঠে আমার শরীরের উপর দিয়ে দৃষ্টি বাড়িয়ে পাখিটার দিকে তাকিয়ে অস্ফুট স্বরে বললো। তার কণ্ঠে আনন্দমিশ্রিত বিস্ময়।
পাখিটা আমার বানানো বাসাটাকে আপন করে নিল। ওখানে বসে, খুটখুট করে চারদিকে তাকিয়ে বাসাটা দেখে— হয়ত অবাক হয়, এত সুন্দর বাসাটি তার জন্য কে বানালো? এমনও হতে পারে, পাখিটি পরিযায়ী, কোনো এক দূরদেশ থেকে আসা সে আমাদের অতিথি। জানালার কার্নিশে সে বসে। ভিতরের দিকে তাকায়— আমরা তখন হাত উঁচু করে ওকে শুভেচ্ছা জানাই। সে আনন্দে কয়েকপাক ঘুরে ডেকে ওঠে, উড়ে গিয়ে ডালে বসে পাখা ঝাপটায়, পুচ্ছ দোলায়, নাচে, আবার বাসায় ফিরে এসে আমাদের দিকে তাকিয়ে জানান দেয়— হ্যালো! নিজ্ঝুম দুপুরে সুর করে ডাকতে থাকে— ঘুঘুস্সই— ঘ্রুঘ্রুর্রই।
আমার স্ত্রী জানালা খুলে কিছু চালের গুঁড়া বাসায় ছিটিয়ে দিল। ঘুঘুটা তখন খাবার বা সাথির খোঁজে বনে বনে উড়ছিল।
পরদিন আমাদের চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। একজোড়া পাখি। ওরা খুটখুট শব্দ করে; বাসার ভিতর বসে ডানা ঝাপটায়; মৈথুন করে। আমরা সারাবেলা, যখন-তখন, ঘুঘুদের দেখি। ওরাও আমাদের দেখে। শুভেচ্ছা জানায়।
সেদিন বিকেলে কী হলো জানি না। ঘুঘু, টিয়ে, শালিক, বউ-কথা-কও, বাবুই, চড়ুই— শত শত পাখি পাশের গাছটায় এসে জড়ো হলো। ওদের শোরগোলে আমাদের বাসাটা ভরে গেলো। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি আসছে; ওড়াউড়ি করছে। জানালার কার্নিশে ঠাঁই নেই। আমাদের দিকে পুঁটিপুঁটি করে তাকায়। হঠাৎ হেসে দিয়ে আবার ডালে গিয়ে বসে। আমার ঘোর কাটে না— এ কি সত্যি, যা দেখছি! এ যে রাজ্যের পাখি আমার জানালায়! পাখিদের সমাবর্তন। আমি জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়াই, পর্দা সরিয়ে আমি আরো অবাক হয়ে যাই— শুধু পাশের গাছটাতেই নয়, আশপাশের গাছগুলোতেও পাখিদের তিল ধারণের ঠাঁই নেই। এতদিন কোথায় ছিল এই পাখিরা? হঠাৎ করে এখানেই বা ওরা এলো কেন? আমার বিস্ময়ের ঘোর কাটে না। আমাকে কে যেন ডাকলো। দরজায় কলিং বেল। দরজা খুলে দেখি কেউ নেই। উপরের তলার কাজের মেয়েটা মাঝে মাঝে দুষ্টুমি করে কলিংবেলে চাপ দিয়েই দৌড়ে পালায়। কিন্তু কে যেন আমাকে নীচতলা থেকে নাম ধরে ডাকলো। আমি দোতলার সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে আত্মহারা হয়ে যাই— গাছের পর গাছ পাখিতে ছেয়ে গেছে। আকাশে মৌমাছির মতো উড়ছে পাখিরা। অমন সময় একটা আশ্চর্য ঘটনা ঘটলো— একটা পাখি বিমান অবতরণের মতো ধীরে ধীরে নেমে এসে আমার কাঁধ জুড়ে বসলো। আমি অবাক হয়ে যাই। এবং ওর দেখাদেখি আরো একটা পাখি, না দুটো, না তিনটা, দেখতে দেখতে ৭টা পাখি উড়ে এসে আমার মাথায়, দুই কাঁধে, ঘাড়ে এসে বসলো। আমি বিস্মিত— আমার ঘোর কাটে না। আমি ওদের দিকে তাকাই। ওরা আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। ওদের চোখ ঝলমল করছে হাসিতে। ওরা হাসছে। হাসছে। না, ওদের চোখে পানি। ওরা কাঁদছে। ওরা ডুকরে কাঁদছে। এরপর ঘটলো সবচেয়ে আশ্চর্য ঘটনাটি— ওরা কথা বলে উঠলো। ‘তোমার মতো আমাদের মনেও দুঃখ। আমাদের দুটো বোন তুমি মেরে ফেলেছিলে। মনে পড়ে?’ আমার ঘোর কাটে। এইতো, পাখিদের চিনতে পেরেছি আমি। ওরা আর কেউ নয়, আমার হারিয়ে যাওয়া মুনিয়া, লাভ বার্ড। যে দুটো মুনিয়া মারা গিয়েছিল, ওরা এদের বোন ছিল। চেহারায় কী অদ্ভুত মিল! কিন্তু ওদের কথায় আমি কষ্ট পেলাম। দুটো মুনিয়া মরে গেলে আমি কত কষ্ট পেয়েছিলাম ওরা কি তা জানে না? ধীরে ধীরে ওরা শান্ত হয়ে ওঠে। ওদের চোখ আনন্দে ভরে যায়। একটা পাখি বলে, ‘আর দুঃখ করো না। তোমার কষ্টও আমরা বুঝি। তোমার বুকের নীরব কান্না আমাদের বুকেও এতদিন ধরে বাজতো। তাই তোমাকে দেখতে সাধ হলো।’ এ কথা বলে ডান কাঁধে বসা একটা মুনিয়া পাখা দুলিয়ে আমার চোখের পানি মুছে দিল।
‘তোমরা এতদিন বেঁচে থাকো?’ আমি আশ্চর্য হয়ে পাখিদের জিজ্ঞাসা করি।
‘আমরা মরি না। তোমাদের কান্না ও ভালোবাসায় আমরা অনন্তকাল বেঁচে থাকি।’
তারপর পাখিদের সাথে আমার অনেক কথা হলো। আমাকে ছেড়ে যেতে ওদেরও খুব কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু ওরা ওদের মা, বাবা, অন্যান্য ভাইবোনদের জন্য খুব কাঁদতো; তাদের দেখতে না পেয়ে ওরা মরে যাচ্ছিল। ওরা আজও ওদের হারিয়ে যাওয়া মা-বাবা-ভাইবোনদের খুঁজছে— তারা কোথায়, কোন রাজ্যে কাদের সাথে মিশে গেছে, ওরা জানে না। মা-বাবা-ভাইবোনদের জন্য কষ্টে ওদের বুক জমে যায়। কথা বলতে বলতে ওদের কাঁধে নিয়ে আমি অনেক পথ ঘুরে বেড়ালাম। ঘুরে বেড়ানো শেষে ওরা বললো, ‘আর কী? এবার বিদয়া দাও।’
‘ঠিক আছে, যাও। আবার এসো।’
ওরা ‘হে বন্ধু, বিদায়’ বলে ডানা ঝাপটে উড়ে গেলো। উড়ে যেতে যেতে ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকিয়ে বললো, ‘প্রতি বসন্তে আমরা আসবো, তোমাকে দেখতে। তুমি ভালো থেকো।’
বলতে বলতে পাখিরা উড়ে গেলো; ধীরে ধীরে সবগুলো পাখি বিকেলের রঙিন আলোর সাথে পশ্চিমাকাশে মিলিয়ে গেলো।
পরিশিষ্ট
পাখির বাসায় চাল বা খুদ ছিটিয়ে রাখি। ঘুঘু আসে, শালিক আসে। ওরা আনন্দ করতে করতে চালখুদ কুড়িয়ে খায়। মাঝে মাঝে ওদের বাসায় মেহমান আসে। কিছুদিন বাদে হয়ত দু-একটা চড়ুই পাখিও আসবে। ওদের দেখে খুব ভালো লাগে। ওরা পাখি, কিন্তু পাখি নয়; ওরা আমাদের পরিবারের সদস্য।
১৫ মার্চ ২০১৪
কৃতজ্ঞতা
সামহোয়্যারইন ব্লগে আমার ধুলোপড়া চিঠি শীর্ষক কবিতা পোস্টে প্রিয় ব্লগার মাঈনউদ্দিন মইনুল প্রেম বিষয়ক একটা সুন্দর প্রশ্ন করেছিলেন। সেই প্রশ্নের উত্তরে আমি যা লিখেছিলাম, এ লেখার প্রথম অংশটুকু তার সম্প্রসারিত রূপ। এ কাহিনিটি আমার বুকে একটা ক্ষত সৃষ্টি করেছে। আমার আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, কলিগদের সাথে এটা অনেক শেয়ার করেছি। ফেইসবুক বা ব্লগেও বিভিন্ন জায়গায় আমি এ ঘটনাটা বিধৃত করেছি। মূলত মাঈনউদ্দিন মইনুলের জন্যই আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া কাহিনিটি একটা লিখিত রূপ প্রকাশ করা সম্ভব হলো। প্রিয় ব্লগার মাঈনুদ্দিন মইনুলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
সামহোয়্যারইন ব্লগে আমার পাখি ও জীবন শীর্ষক একটি পোস্টে প্রিয় কবিব্লগার স্বপ্নবাজ অভি তাঁর নানু বাড়িতে পোষা টিকু নামক এক টিয়ে পাখির উল্লেখ করেন, যেটি খাঁচা থেকে ছেড়ে দেয়ার দু মাস পরে ফিরে এসেছিল। আমি তাঁর ঐ কমেন্ট থেকে এ লেখার সিকোয়েল-২ গল্পটি লিখতে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। প্রিয় ব্লগার স্বপ্নবাজ অভির প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
*
'কালের চিহ্ন', প্রকাশকাল একুশে বইমেলা ২০১৬-এর অন্তর্ভুক্ত
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১৭ রাত ১০:৩৭