এর আগে আজগুবি ছড়ার প্রথম কিস্তি ব্লগে পোস্ট করেছিলাম। এ ছাড়াও ‘নিজের ভাষায় কবিতা লেখা’ শিরোনামে আরেকটা ছড়ার পোস্ট ব্লগে পাবলিশ করেছিলাম। এরপর প্রায় দু বছর কেটে গেছে, ব্লগে কোনো ছড়ার পোস্ট যেমন দিই নি, আগের মতো ছড়ার কোনো দ্বৈরথও আমাদের আর হয় নি। ব্লগে শায়মার সাথেই আমার ছড়ার যুদ্ধ সবচাইতে বেশি হয়েছে। অন্যান্যদের মধ্যে সবাক, রাগ ইমন, প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য।
ব্লগার ফালতু বালকের ছড়ার পোস্টে কমেন্টের ঘরে আমি বেশকিছু ছড়া লিখেছিলাম। আজকের পোস্টের বেশকিছু ছড়াই ঐ রকম।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পোস্টে ছোটো-বড় ছড়া লিখেছি, যেগুলো এতদিন আমার রাফখাতায় টুকে রাখা ছিল না। আজ সেগুলো একত্র করেছি।
আজগুবি ছড়ার ১ম পর্ব থেকে শুধু ‘সফদার ডাক্তার’ রিপিট করা হলো, বাকিগুলো নতুন।
বলতে ভুলে গেছি, আগামীতে ‘আজগুবি ছড়া’ নামে একটা ছড়ার বই বের করার ইচ্ছে রয়েছে। ছড়াগুলোর সাথে উপযুক্ত কার্টুন দেয়া গেলে খুব মজার হতো। কিন্তু আমি আঁকতে পারি না। সহৃদয় আঁকিয়েদের সহযোগিতা কামনা করছি।
**
সফদার ডাক্তার
সফদার ডাক্তার মাথা ভরা চুল তার
খিদে পেলে ভাত খায় গিলিয়া
ছিঁড়ে গেলে কী উপায় এই ভয়ে রাস্তায়
হাঁটে জুতা বগলেতে তুলিয়া
প্রিয় তার টক শো, মহিষের মাংস
অটবির ছিমছাম খাটিয়া
সাঁচা কথা কয় সে, কারণটা এই যে
খায় নাকি ফ্রুটিয়া সে চাটিয়া
সফদার ডাক্তার ইয়া বোঁচা নাক তার
শুলে শুধু দেখা যায় ভুঁড়ি খান
কিপটে সে আদৌ নয়, এই তার সদা ভয়-
ঘরে বুঝি এলো কোনো মেজবান
সফদার ডাক্তার খুব ‘ফানি’ কাজ তার
ডিনারের পরে করে কুস্তি
মাঝরাতে ওঠে ঘেমে তারপর খালে নেমে
স্নান করে হয় তার স্বস্তি
সফদার ডাক্তার মাথা ভরা টাক তার
কেঁচোকাটা কাঁচি তার পকেটে
চেঁছে ফেলা ভুরু তার চোখ দুটো সরু তার
পান খেয়ে হেঁটে যায় শকেটে
সফদার ডাক্তার ইদানীং সাধ তার
ব্লগে নাকি এ্যাকাউন্ট খুলিবেন
অনলাইন সাজেশন করিবেন বিতরণ
মাস্টার কার্ডে ফি তুলিবেন
৩০ নভেম্বর ২০০৯ রাত ২:৫১
**
ফালতু বালক
এই ছেলেটা আবোল-তাবোল
ফালতু বকে বাঁধায় কি গোল?
সত্যিকারের সেই ইতিহাস
আমরা কি সব জানি?
কে বলে সে ফালতু বালক
জানো কি সে বিমান-চালক?
বরই গাছের ডগায় বসে
ঝাঁকায় সে ডাল জোরসে কষে
আর ডেকে কয়, এই দেখে যাও
আমার বিমানখানি।
এই ছেলেটা কী বাহাদুর
আমরা কি সব জানি?
২৯ অক্টোবর ২০১২
**
দোহার
মাঝিদের বাড়ি, তাঁতীদের বাড়ি
গোয়ালার বাড়ি, চাষাদের বাড়ি
সবগুলো বাড়ি গলাগলি ধরে
বসে আছে সারি সারি
কোথাও শাবুক মেঘুলা-দোহার
কোথাও বা চর পদ্মার পার
সবচেয়ে বড় জয়পাড়া হাট-
চৌধুরীদের বাড়ি
পশ্চিমে বহে পদ্মা জননী
পুবে আড়িয়াল বিল
দোহারবাসীকে ধন্য করেছে
জীবনকে গতিশীল
২৯ অক্টোবর ২০১২
**
ইচ্ছে
তোমার সাথে কথা বলার
ইচ্ছে ছিল, জানতে
‘প্রেম গুটিয়ে’ চলে গেলে
কলের পানি আনতে
এখন আমার ভাল্লাগে না
কিচ্ছুটুকুন করতে
ইচ্ছে করে খালের জলে
ঘোড়ার পিঠে চড়তে
২৪ মে ২০১২
**
সুবোধ বালক
এক যে ছিল সুবোধ বালক
জমিদারের নাতি
শ্বশুর বাড়ি আসতে-যেতে
তার ছিল এক হাতি
হাতির পিঠে চড়তো নাতি
দাদুর কোলে বসে
দুলকি তালে যেতে যেতে
ঘুম দিত খুব কষে
শ্বশুর বাড়ি গিয়ে নাতি
কী করতো জানো?
ঝালমুড়ি আর মাঠা খেতো
আর সে খেতো পানও।
যখন হতো ফেরার পালা
ফিরতো চড়ে হাতি
দাদুর কোলে নাতবউ আর,
বউয়ের কোলে নাতি।
৯ আগস্ট ২০১৩
**
একজন মহারাজার কথা
তোমরা কি তার নাম শুনেছ
যার কথাটি বলছি এখন
ছোট্ট যদিও কিন্তু জেনো
দেখতে সে নয় যেমন-তেমন
স্যুট পরেছে টাই পরেছে
চক্লেট রং শু পরেছে
কালো রেভেন চশমা চোখে
মাথার উপর হ্যাট রয়েছে
তারপর সে ডাঁটের সাথে
ড্রুয়িং রুমে পড়লো বসে
দেখতে যেন মস্ত জ্ঞানী
আলাপ করে গভীর রসে
কিন্তু মজার কাণ্ড দেখো
স্যুট-টাই-হ্যাট চশমা ছাড়া
পুরোটা সে জামার ভিতর
ভদ্দরলোক ন্যাংটো খাড়া
সত্যি জানো, কী হয়েছে?
বলছি তবে, সবুর করো
আজকে লাবিব রাগ করেছে
তাইতো পোশাক এমনতরো
বাবার গায়ের পোশাক পরে
পরিবারের কর্তা সে আজ
আমরা সবাই পাইক-পেয়াদা
সে সেজেছে বীর মহারাজ
২৪ আগস্ট ২০১৪
**
ছড়াকণিকা
*
এতো এতো ছড়া পড়ে চুল গেছে পেকে
সাদা চুল কালো করি গোয়ালাকে ডেকে
৯ সেপ্টেম্বর ২০১২
**
এই সেরেছে
এসে গেছে
দুলকি ঘোড়ার
ছড়ার রানি
ছড়ায় ছড়ায়
ছড়ির লাগি
দেখবো ছড়ি
টানাটানি
৯ সেপ্টেম্বর ২০১২
**
ছড়া গেছে দাঁড়িয়ে
বটগাছ ছাড়িয়ে
পাহাড়ের প্রান্তে
তালগাছে বেল হয়
পাটশাকে নিরাময়
তুমি কি তা জানতে?
১০ সেপ্টেম্বর ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২১
**
হাবিজাবি যখন-তখন
কে যে এসব লেখে
আবোল-তাবোল বকাবকি
কার বা কাছে শেখে,
পিছন থেকে বুদ্ধি দিতে
তার সাথে আর কে কে
ঘুণাক্ষরে পেতাম যদি খোঁজ
নাওয়া-খাওয়া-গাওয়া ভুলে
পেটের উপর দু ঠ্যাং তুলে
গেঞ্জি এবং লুঙ্গি খুলে
ওদের সাথেই পাঞ্জা দিতাম রোজ
১১ সেপ্টেম্বর ২০১২ রাত ১০:২৮
**
আজ সারাদিন ব্যস্ত ছিলাম মস্ত বড় কাজে
তার কিছুটা প্রমাণ যদি চাও
দু কানে দুই চাট্টি মারো
নাকের ডগায় পেরেক গাড়ো
কপাল ’পরে দু খান চাড়া বসাও
রণ্পা পরে উর্ধ্বমুখে পিছন পানে হাঁটো
কুয়োয় নেমে কুড়াল দিয়ে এঁটেল মাটি কাটো
১১ সেপ্টেম্বর ২০১২ রাত ১০:৪৪
***
ধাঁধা থেকে ছড়া আমার
হয় না আদৌ পড়া
সময়-বেজি দৌড়ে পালায়
যায় না তাকে ধরা
ধাঁধার চেয়ে কঠিন কিছু
এই জগতে নেই
দেখলে ধাঁধা মাথা ঘোরায়
হারিয়ে ফেলি খেই
১২ সেপ্টেম্বর ২০১২ দুপুর ২:৩৫
**
একটি পাখি খুব মনোরম
কুসুম ছানার মতো
পাখায় তাহার অবাক আলো
চিরদিন উদ্গত
সেই পাখিটা আত্মভোলা বড়।
নিজের নামও যায় ভুলে সে
কাণ্ড কেমনতরো!
৬ মে ২০১২ রাত ১১:৫৫
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:১০