somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহাশূণ্য থেকে মহান আল্লাহ – (পর্ব-২)

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শূণ্য থেকে এক। এক থেকে অনেক। শূণ্য এক ও অনেক এটা প্রকৃত ধারা।শূণ্য অসীম হলে সেটা মহাশূণ্য। অনেকে এক থাকে। একে এক থাকে। ভগ্নাংশ একের অংশ। শূণ্য থেকে এক।তার মানে শূণ্যতে এক ছিল। একে এক আছে। অনেকেও এক আছে।ভগ্নাংশও যেহেতু একের অংশ সেহেতু এক চির বিদ্যমান।

শূণ্যতে এক ছিল এর কারণ শূণ্য থেকে এক এসেছে।তো শূন্যতে এক না থাকলে শূণ্য থেকে এক আসলো কেমন করে? শূণ্যতে অনেক থাকলে শূণ্য থেকে অনেক না এসে এক আসল কেন? শূণ্য থেকে অনেক আসলে তারা একে অপরের সাক্ষি হওয়ার কথা। কিন্তু এমন কোন সাক্ষি নেই।শূণ্য থেকে এক আসলে তার সাক্ষি থকার কথা নয়।তার সাক্ষি সে একা নিজেই। এবার তার কথা কেউ বিশ্বাস করুক অথবা না করুক।

শূণ্য থেকে কি আসতে পারে, এক না অনেক? প্রকৃত শূণ্য হলো যাতে কিছুই থাকে না।কিছুই না থাকলে সে শূণ্যকে সীমা দিয়ে সসীম করা যায় না।সংগত কারণে সে শূণ্য অসীম। অসীম এক হয়, অনেক হয় না। কারণ অসীমকে অনেক করতে সীমা দিয়ে অনেক করতে হয়। আর সীমা দিলে অসীম আর অসীম থাকে না সসীম হয়ে যায়।সংগত কারণে অসীম এক। সংগত কারণে অসীম শূণ্য এক। সংগত কারণে এক থেকে এক আসার কথা অনেক আসার কথা নয়। এক অনেক হতে পারে ভগ্নাংশে। কিন্তু শূণ্য এক হলেও এর ভগ্নাংশ নেই। কারণ এতে কিছুই নেই। তো এর থেকে কিসের ভগ্নাংশ বের হবে? সংগত কারণে শূণ্য থেকে কোনভাবেই অনেক আসতে পারে না, বরং শূণ্য থেকে এক আসতে পারে।সংগত কারণে শূণ্য এক অনেক এটা প্রকৃত ধারা।মাঝখান থেকে এক বাদ দিয়ে শূণ্য থেকে অনেক এটা অপ্রকৃত ধারা।কারণ শূণ্য থেকে এক না এসে কোনভাবেই অনেক আসতে পারে না। যারা বলে সৃষ্টিকর্তা নেই সব কিছু নিজে নিজে হয়েছে তারা শূণ্য থেকে এক বাদ দিয়ে শূণ্য থেকে অনেক এ ধারার স্বীকৃতি প্রদান করে। যা মূলত মিথ্যা।

শূণ্য থেকে অনেক না এসে এক আসলে, প্রশ্ন আসে অনেক তবে কেমন করে হলো? শূণ্য থেকে যেহেতু অনেক আসতে পারেনি, শূণ্য থেকে যেহেতু শুধু এক আসতে পারে, যেহেতু এখন অনেক আছে সেহেতু এটা অবশ্য স্বীকার্য অনেক অবশ্যই একের সৃষ্টি। সংগত কারণে সৃষ্টিকর্তা এক। সৃষ্টিকর্তা অনেক নয়। সংগত কারণে সৃষ্টিকর্তা অনেক বলা মিথ্যা কথা।আর সৃষ্টিকর্তা নেই বলাও মিথ্যা কথা।কারণ সৃষ্টি থাকলে সৃষ্টিকর্তা কেমন করে থাকে না?

এখন প্রশ্ন হলো সৃষ্টিকর্তাকে কে সৃষ্টি করেছে? সৃষ্টিকর্তা এলেন শূণ্য থেকে। শূণ্যতে ছিলনা কিছু। তো সৃষ্টিকর্তাকে কে সৃষ্টি করবে? সংগত কারণে সৃষ্টিকর্তাকে কেউ সৃষ্টি করেনি। তো সৃষ্টিকর্তা হলেন কেমন করে? তো সে কথা সৃষ্টিকর্তার সঠিক দাবীদার আল্লাহ থেকেই শুনা যাক তিনি এ বিষয়ে কি বলেন? এ বিষয়ে আল্লাহ বলেছেন,‘কুল্লুমান আলাইহা ফান, ওয়া ইয়াবকা অজহু রাব্বিকা যুল যালালি ওয়াল ইকরাম – তাতে সব কিছু বিলিন হয়ে থাকে। আর বাকী থাকে অথবা বাকী থাকবে তোমার মহিমাম্বিত ও দয়াময় প্রভু’- সুরাঃ ৫৫ আর রাহমান, আয়াত নং ২৬ ও ২৭।

কোথায় সব বিলিন হয়, আর কেনবা বিলিন হয়? এমন স্থান যাতে কিছু থাকে না।যাতে হওয়ার মত পরিস্থিতি থাকে না। আর হওয়ার মত পরিস্থিতি না পেয়ে তাতে সব বিলিন হয়।তো তাতে যদি কিছুই না থাকে তো তাতে হওয়ার মত পরিস্থিতি কেমন করে থাকে? সংগত কারণে তাতে কিছু না হতে পেরে বিলিন হয়।এখন আবার সব আছে কারণ থাকার মত পরিস্থিতি আছে। থাকার মত পরিস্থিতি বিলিন হলে। বিলিন পরিস্থিতির পথ ধরে আবার সব বিলিন হবে। ইস্রাফিল (আ.) শিংগায় ফু দিলে যে শব্দ হবে তাতে প্রথমে থাকার মত পরিস্থিতি নষ্ট হবে। এর পর সেই পথ ধরে সব কিছু আবার বিলিন হবে। কিন্তু থেকে যাবেন সৃষ্টিকর্তা। কিন্তু কেন?

বিলিন হয় হওয়ার মত পরিস্থিতি না পেয়ে আর বিলিন হয় থাকার মত পরিস্থিতি না পেয়ে।সসীমের হওয়ার মত ও থাকার মত পরিস্থিতি এর সীমা। সীমা না পেলে সসীম আর সসীম হয়না বাধ্য হয়ে তখন সেটা অসীমে বিলিন হয়। সীমা হারিয়ে ফেল্লেও সসীম আর সসীম থাকে না অসীমে বিলিন হয়। তার মানে যেথা হতে আগমন যেতে হয় সেথা। আল্লাহ বলেছেন, ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন- নিশ্চয় আল্লাহর জন্য এবং তাঁর নিকট ফিরে যেতে হবে’।তার মানে হওয়ার কারণ আল্লাহ আর যাওয়ার কারণও আল্লাহ। তিনি সীমা প্রদান করেছেন বলে সব হতে পেরেছে। তার দেওয়া সীমা তিনি কেড়ে নিবেন বলে আবার সব বিলিন হতে হবে। কিন্তু তিনি বিলিন হবেন না, কারণ তাঁরতো সীমাই নেই, বিলিন হবেটা কি? তিনি অসীম অসীমের সীমা থাকে না। তিনি হয়েছেন অসীমে, রয়েছেন অসীমে। বিলিন হয়ে যাবেনটা কোথায়? সে জন্য তাঁর বিলিন হওয়া সম্ভব নয়। যাদের বিলিন হওয়া সম্ভব বিলিন শুধু তারাই হবে।

বিলিন হওয়া সূত্রের কারণেই সসীমের সৃষ্টিকর্তার প্রয়োজন আছে আর অসীমের সৃষ্টিকর্তার প্রয়োজন নেই।বিলিন হওয়া সূত্রের কারণে সকল সসীম অসীমে বিলিন হয়ে একজন অসীম হয়েছেন। এরপর অসীম সীমা দিয়ে দিয়ে সব সসীমকে সৃষ্টি করেছেন।এরপর শব্দ শক্তির মাধ্যমে তিনি যখন আবার সকল সসীমের সীমা তুলে দিবেন তখন তারা আবার বিলিন হয়ে পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে।‘কুল্লুমান আলাইহা ফান, ওয়া ইয়াবকা অজহু রাব্বিকা যুল যালালি ওয়াল ইকরাম – তাতে সব কিছু বিলিন হয়ে থাকে। আর বাকী থাকে অথবা বাকী থাকবে তোমার মহিমাম্বিত ও দয়াময় প্রভু’- সুরাঃ ৫৫ আর রাহমান, আয়াত নং ২৬ ও ২৭।–এ কথার দ্বারা আল্লাহ এ সত্য প্রকাশ করেছেন।

নিজে নিজে সব হয়ে অসীমে বিলিন হয়ে একজন অসীম হয়েছেন। সেই অসীম সীমা দিয়ে সব সৃষ্টিকরেছেন। এজন্যই আল্লাহ বলেছেন. ‘ইন্নাল্লাহা খালাকা কুল্লা সাইয়িন- নিশ্চয়ই আল্লাহ সব সৃষ্টি করেছে’।তিনি সৃষ্টি না করলে সসীমের সীমাটা দিবে কে ইটের ভাটায় ইট তৈরী হয় এর দশ ইঞ্চি, পাঁচ ইঞ্চি ও তিন ইঞ্চি সীমা কেউ দিতে হয় কি? সংগত কারণে সসীম নিজে নিজে হতে পারে না। এর অস্তিত্বের পিছনে কারো না কারো অবদান থাকতে হয়। কিন্তু অসীমের সীমা দিবে কে? এত্তবড় সীমা দেওয়া কারো পক্ষে সম্ভব নয়। সেজন্য সসীমের সৃষ্টিকর্তা না থাকা সম্ভব নয়। আর অসীমের সৃষ্টিকর্তা থাকা সম্ভব নয়।

অসীম মহাশূণ্যে সব কিছু নিজে নিজে হতে গিয়ে সীমা না থাকায় সীমা না পেয়ে সব কিছু অসীমে বিলিন বা মিশে গিয়ে একজন অসীম হয়েছেন। সেই অসীমের নাম আল্লাহ। আর এভাবেই মহাশূণ্য থেকে মহান আল্লাহ হয়েছেন।তারমানে শুধুমাত্র অসীম মহান আল্লাহ নিজে নিজে হয়েছেন।কোন সসীম নিজে নিজে হতে পারেনি। আমনরা জানি নিজে নিজে যা হয় তা’ বড় হয়। অসীম ও সসীমের মাঝে অসীম বড়। সংগত কারণে নিজে নিজে শুধু অসীম হয়।এসীম শুধুমাত্র একজন। সংগত কারণে নিজে নিজে শুধু একজন অসীম হয়। সেই একজন অসীমের নাম আল্লাহ। সুতরাং নিজে নিজে শুধু আল্লাহ হতে পারেন। কারণ সে যোগ্যতা তাঁর রয়েছে। আল্লাহ ছাড়া আর কিছু নিজে নিজে হতে পারে না। কারণ আল্লাহ ছাড়া আর কিছুর নিজে হওয়ার যোগ্যতা নেই বিধায় আল্লাহ ছাড়া আর কিছু নিজে হতে পারে না।এ জন্য আল্লাহ ছাড়া আর সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ এবং তাঁর নিজের সৃষ্টিকর্তাও তিনি নিজে। এ জন্য তিনি সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা। তিনি ছাড়া আর কিছু নিজে নিজে সৃষ্টি হতেও পারে না। আর তিনি ছাড়া আর কেউ নিজেকে টিকিয়েও রাখতে পারে না।আর এটাই মহা প্রকৃতি যার ব্যতিক্রম সম্ভব নয়।

বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।

ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:০৮
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দেশনায়ক তারেক রহমানকে সম্পৃক্ত করার নেপথ্যে  

লিখেছেন এম টি উল্লাহ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৮


আগেই বলেছি ওয়ান ইলেভেনের সরকার এবং আওয়ামীলীগের যবনায় জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে পৌনে একশ মামলা হলেও মূলত অভিযোগ দুইটি। প্রথমত, ওই সময়ে এই প্রজন্মের নিকট উপস্থাপন করা হয়েছিল দেশনায়ক তারেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পকে নিয়ে ব্লগারদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



**** এডমিন টিমের ব্লগারেরা আমাকে বরাবরের মতোই টার্গেট করে চলেছে, এভাবেই সামু চলবে। ****

ট্রাম্পের বিজয়ে ইউরোপের লোকজন আমেরিকানদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী শংকিত; ট্রাম্প কিভাবে আচরণ করবে ইউরোপিয়ানরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পের বিজয়, বিশ্ব রাজনীতি এবং বাংলাদেশ প্রসংগ

লিখেছেন সরলপাঠ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২১

ট্রাম্পের বিজয়ে বাংলাদেশে বা দেশের বাহিরে যে সব বাংলাদশীরা উল্লাস করছেন বা কমলার হেরে যাওয়াতে যারা মিম বানাচ্ছেন, তারাই বিগত দিনের বাংলাদেশের ফ্যাসিস্টের সহযোগী। তারা আশায় আছেন ট্রাম্প তাদের ফ্যাসিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠেলার নাম বাবাজী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩১

এক গ্রামীণ কৃষক জমিদার বাড়িতে খাজনা দিতে যাবে। লোকটি ছিলো ঠোটকাটা যখন তখন বেফাস কথা বা অপ্রিয় বাক্য উচ্চারণ করে ক্যাচাল বাধিয়ে ফেলতে সে ছিলো মহাউস্তাদ। এ জন্য তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×