আলকোরআন, সূরাঃ ৪ নিসা, আয়াত নং ৩ এর অনুবাদ
*তোমরা যদি আশংকা কর যে, ইয়াতিম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না, তবে বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে, দুই, তিন, অথবা চার জন; আর যদি আশংকা কর যে, সুবিচার করতে পারবে না তবে একজনকে অথবা তোমাদের অধিকার ভূক্ত দাসীকে। এতে পক্ষপাতিত্ব না করার অধিকতর সম্ভাবনা।
# পক্ষপাতিত্ব জায়েজ নয় এ আয়াত দ্বারা বুঝাগেল।
আলকোরআন, সূরাঃ ৪ নিসা, আয়াত নং ১২৯ এর অনুবাদ
*আর তোমরা যতই ইচ্ছা কর না কেন তোমাদের স্ত্রীদের প্রতি সমান ব্যবহার করতে কখনই পারবে না, তবে তোমরা কোন একজনের দিকে সম্পূর্ণ ঝুঁকে পড়বে না ও অপরকে ঝুলানো অবস্থায় রাখবে না।যদি তোমরা নিজদিগকে সংশোধন কর ও সাবধান হও তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
# পক্ষপাতিত্ব না করা সম্ভব নয় এ আয়াত দ্বারা বুঝাগেল। তারমানে পক্ষ থাকলে পক্ষ পাতিত্ব থাকবেই।তবে যখন উপরোক্ত আয়াত সমূহ নাজিল হলো তার আগেই অনেকের বহু স্ত্রী ও দাসী গ্রহণের কাজ হয়ে গিয়েছিল। সে ক্ষেত্রে আল্লাহ যতটা সম্ভব ন্যায় বিচার কামনা করেছেন। তবে তিনি একাধীক পক্ষ থাকা পদ্ধতির সংশোধন চেয়েছেন।সংগত কারণে আল্লাহর কামনা এক স্ত্রী অথবা এক দাসী। উভয় একত্রে নয়।
আলকোরআন, সূরাঃ ৫৫ রাহমান, আয়াত নং ৭২ ও ৭৩ এর অনুবাদ
৭২। তারা হুর, তাবুতে সুরক্ষিতা।
৭৩। সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
# এখানে হুর পুরুষের জন্য আলাদা এমন বলা হয়নি বরং হুর নারী পুরুষ উভয়ের জন্য। তো কোন নারী নারী পুরুষ উভয়ের জন্য হলে উহা পরিচারিকা হয়। স্ত্রী সতীন নয়, সতীন স্ত্রী নয়, সুতরাং কোন নারী নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য হলে সে বা তারা স্ত্রী বা সতীন জাতীয় কিছু হওয়া সম্ভব নয়। কোন নারী উভয়ের জন্য হলে সে বা তারা উভয়ের বান্ধবীও হতে পারে।যা হওয়া সম্ভব নয় এমন অসম্ভব কল্পনা করা উচিৎ নয়।
আলকোরআন, সূরাঃ ৫৬ ওয়াকিয়া, আয়াত নং ১০,২২,২৩ ও ২৪ এর অনুবাদ
১০। আর অগ্রবর্তি তো অগ্রবর্তি
২২।আয়ত লোচনা হুর
২৩।সুরক্ষিত মুক্তা সদৃশ
২৪। তাদের কর্মের পুরস্কার
# এখানে হুর অগ্রবর্তিদের পুরস্কার।অগ্রবর্তি নারি ও পুরুষ অবশ্যই। আলাদাভাবে পুরুষ অবশ্যই নয়। কাজেই হুর নারী হয়ে থাকলে তারা অবশ্যই পরিচারিকা অথবা বন্ধবী। স্ত্রী বা সতীন অবশ্যই নয়। কারণ নারীর স্ত্রী হয় না আর পুরুষের সতীন হয় না।
আলকোরআন, সূরাঃ ৫৬ ওয়াকিয়া, আয়াত নং ৩৫,৩৬,৩৭ ও ৩৮ এর অনুবাদ
৩৫।আমরা ওদেরকে সৃষ্টিকরেছি বিশেষ রূপে
৩৬। ওদেরকে করেছি কুমারী
৩৭। সোহাগিনী ও সমবয়স্কা
৩৮। ডানদিকের লোকদের জন্য
# এখানে হুর ডানদিকের লোকদের জন্য পুরস্কার। ডানদিকের নারি ও পুরুষ অবশ্যই। আলাদাভাবে পুরুষ অবশ্যই নয়। কাজেই হুর নারী হয়ে থাকলে তারা অবশ্যই পরিচারিকা অথবা বন্ধবী। স্ত্রী বা সতীন অবশ্যই নয়। কারণ নারীর স্ত্রী হয় না আর পুরুষের সতীন হয় না।
আলকোরআন, সূরাঃ ৫৬ ওয়াকিয়া, আয়াত নং ১৭ ও ১৮ এর অনুবাদ
১৭।তাদের সেবায় ঘোরাফিরা করবে চির কিশোরেরা।
১৮।পানপাত্র, কুঁজা ও প্রস্রবন নিঃসৃত সুরাপূর্ণ পেয়ালা নিয়ে।
# এখানে চির কিশোরেরা জান্নাতিদের সেবক। সংগত কারণে হুরগণ সেবিকা হিসেবে অনুমেয়। কারণ সেবক থাকলে সেবিকাও থাকার কথা। আর নারী সেবিকাদের সেবার মান বালক সেবকদের থেকে ভাল।
*হাদিসে আছে শহীদের জন্য থাকবে ৭০ জন হুর।
# শহীদ নারী ও পুরুষ উভয়ে। এমন কি ইসলামের প্রথম শহীদ হজরত সুমাইয়া (রা.)। তিনি একজন নারী। তাঁর জন্য হুর তাঁর সখি, বান্ধবী অথবা পরিচারিকা।তাঁর স্বামীর জন্য হুর তাঁর স্ত্রী জাতীয় কিছু হলে হতে পারে তাঁর হজরত সুমাইয়ার (রা.) কথা খেয়াল থাকবেনা। এটা অবিচার ও পক্ষপাতিত্ব। আল্লাহ পক্ষপাতিত্ব পছন্দ করেন না বলে পরিস্কার বলে দিয়েছেন। আল্লাহর অপছন্দের কাজ জান্নাতে হবে বলে মনে হয় না।
আর আদমের (আ.) জন্য আল্লাহ একজন হাওয়া (আ.) তৈরী করে তাঁদেরকে জান্নাতে থাকতে দিয়েছেন। আদমের (আ.) জন্য আল্লাহ ৭০ জন হুর তৈরী করেননি।কাজেই জান্নাত ব্যবস্থা বহুগামীতা দিয়ে শুরু হয়নি।আদমের (আ.) একাধীক স্ত্রী থাকলে তাঁর সন্তানদের মায়ের পেটের ভাই বোন বিয়ে করতে হতো না। এর দ্বারা বুঝাগেল মায়ের পেটের ভাই-বোন বিয়ে করার চেয়ে আল্লাহর নিকট একাধীক স্ত্রী অধিক অপছন্দের।সমস্যার কারণে ভাই-বোন বিয়ে আগে জায়েজ থাকলেও আল্লাহ পরে সেটা নাজায়েজ করেছেন। আর দু’বোন একত্রে বিবাহ করাও আল্লাহ পরে নাজায়েজ করেছেন। এমনকি ইসলামে তের জনকে বিয়ে করা আল্লাহ অবৈধ করেছেন।
আমরা কোরআন ও হাদিসের আলোকে যেটা বুঝতে পেরেছি সেটা হলো বহুগামীতা আল্লাহর পছন্দ নয়।বিশেষ কারণে এটা জায়েজ থাকলেও, না করাই উত্তম। আর মহানবি (সা.) সহ যারা বহু বিবাহে যুক্ত ছিলেন তাঁদের ঘটনা আল্লাহর ইচ্ছা প্রকাশ পাওয়ার আগের ঘটনা। কাজেই মহানবির (সা.) দৃষ্টান্ত দেখিয়ে এটাকে ভাল কাজের রূপ প্রদান করা ঠিক নয়।
বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৮