somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এইতো সেদিনের কথা

১৪ ই মে, ২০১৭ রাত ৯:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাধারণত ফুল নিয়ে ছেলেরাই মেয়েদের জন্য অপেক্ষা করে। কিন্তু আমি সর্বদাই তার উলটো করি, তবে আমি সত্যিকারের ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম না, আমি সেই কাগজের ফুল টা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম যেটা আমি বানিয়েছিলাম আর সে এসে অধিকার জমিয়ে বললো, "মনে করো ফুল টা আমার,এখন আমি এটা তোমাকে দিলাম। " তখনও বুঝতাম না যদিও তবু ফুল টা খুব যত্নে ডাইরির পাতায় রেখে দিয়েছিলাম। সেই ফুল টা নিয়েই তার অপেক্ষা। জানি আজ আসবে সে, দীর্ঘ অপেক্ষার পর তাকে দেখবো আজকে। আজ আমার কতো মাতামাতি, কি বলবো, কোথায় যাবো, ইশ!! এক্কেবারেই দিশেহারা হয়ে যাচ্ছি। আমার ফোন রিং টা বাজতেই দেখি তার কল,দ্রুত রিসিভ করলাম
- হ্যালো
-সরি বাবু,আমি আজ আসতে পারবো না।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
- তুমি বাড়ি চলে যাও।
বরাবরই মাথা ঝুলিয়ে হাঁটা দিলাম। কতো উৎসাহিত ছিলাম আজকে সব আমার চেহারায় কালো মেঘের মতো ঘনিয়ে এসেছে। বাড়ির দরজা খুলতেই সারপ্রাইজ বলে অনেকগুলো আওয়াজ একসাথে মিলিয়ে গেলো। লাইট অফ ছিলো, আমি ঘরে ঢুকতে লাইট ও অন হয়ে গেলো। সবার প্রথমে সেই মানুষটাকেই দেখলাম, যার অপেক্ষায় আমি এতোক্ষণ যাবত বাহিরে ছিলাম। এভাবে করে মন খারাপ করিয়ে সারপ্রাইজ দিবে মোটেও মেনে নিতে পারছিলাম না,তখন ও আমার মন খারাপ ছিলো। আমার কুঁকড়ে থাকা হাত ধরে আর ঝুলানো মুখ ওপরে তুলে সে কি যেন বিড়বিড় করে বলছে-
- শুভ জন্মদিন।
-মানে?
-আজকে তোমার জন্মদিন পাগলী।
-ওহ হ্যাঁ!
-তোমার মনে আছে?
- আমার লক্ষ্মীর সব কথাই আমি কনে রাখি।কেন একবার তোমায় বলেছিলাম না তোমার সব কথা আমি বলতে পারি।
- কিভাবে তোমায় ধন্যবাদ দিবো।থ্যাংকিউউউ
- কি বলো! এটা আমার কর্তব্য ছিলো। আর তুমি তো আমার হবু স্ত্রী, তোমার জন্য তো সবই করতে পারি।আচ্ছা আমি না তোমার বড়, আর আজকে তোমার জন্মদিন, এখন আমার পা ছুয়ে সালাম করো আর দোয়া নাও।
- আচ্ছা ঠিক আছে, আমি সারাজীবন চাই এভাবে তোমার কাছ থেকে দোয়া নিতে।
-আরে কি করছো, আমি মজা করলাম। তোমার জায়গা আমার পায়ে না, তোমার আসল জায়গা আমার বুকে, এসো।
আশ্চর্য হলাম সবার সামনে এভাবে কথা বলছে কিভাবে, আর বাসায় তো কেউ জানতো না এসব কথা, তবে কি? আমি বিলম্ব করলে সে বলে
- কি ভয় পাচ্ছো?দেখো ওদিকে..
ওদিকে তাকাতেই অবাক হলাম যে তার ও বাবা - মা এসেছে, দ্রুত সালাম করলাম।
তার পর আমার আব্বু আম্মু কাছে আসলো,
- ভয়ের কোনো কারণ নেই মা, আমাদের একমাত্র মেয়ে তুই, আর তুই যাকে পছন্দ করবি, আমরা তাকে কিভাবে অপছন্দ করবো?
কথা টা শুনার পর কেমন যেন অনুভূতিতে চোখে পানি চলে আসলো,মা কে জড়িয়ে ধরে বললাম
- আম্মু, আমার জন্মদিনে এত্তো বড় উপহার দিলে, আমায় ক্ষমা করো, আব্বু আম্মু তোমরা জীবনে আমাকে অনেক কিছু দিয়েছো, সেই তুলনায় আমি তোমাদের জন্য কিছুই করতে পারিনি।
- না মা! তুই আমাদের এতো ভালোবাসিস সেটাই যথেষ্ট, আমাদের কাছে, সুখে থাক।
আবার ফিরে ঐ মানুষটার দিকে তাকালাম কিভাবে পারে সে এতো সহজে সব কিছু সামলে নিতে, আমার জন্য যা করেছে, বুঝতে বাকি নেই, তার চেয়ে ভালো জীবনসঙ্গী আমার জন্য আর কেউ হতে পারবে না।কাছে গিয়ে শক্ত হাতটা খপ করে চেপে ধরলাম,
- ভালোবাসি অনেক বেশি। ধন্যবাদ। সত্যি আমি মনে করি আমার জীবনসঙ্গী তোমার চেয়ে ভালো আর কেউ হতে পারবে না, আমি কথা দিলাম কোনোদিনও তোমায় কষ্ট দেবো না।
- ভালোবাসি আমিও। তাই তোমার জন্য সবই করতে পারি। আর তুমি কষ্ট দিলেও আমি কষ্ট পাবো না, তোমার সব রাগের মাঝেও আমি আমার ভালোবাসাই খুঁজে পাই।
- মনে আছে যেদিন তুমি প্রথম আমাকে বলতে এসেছিলে যে তুমি আমাকে ভালোবাসো, সেদিন বার বার আসছিলে আর বলছিলে এক গ্লাস পানি দেয়া যাবে? আর আমি বার বার তোমায় পানি এনে দিচ্ছিলাম, এভাবে তুমি ৯ গ্লাস পানি খেয়েছো, আমার মনে আছে। এইতো সেদিনেরই কথা, আর আজ দেখো আমরা কতদূরে পৌঁছে গেলাম।
- আমার লক্ষ্মীর মনে থাকবে না তো কার মনে থাকবে।
এক পলক তাকিয়েই থাকলাম তার দিকে জানিনা কি ভালো কাজ করেছিলাম এতো ভালো একটা জীবনসঙ্গী পেয়েছি। আমার জীবনের প্রতিটা মুহুর্ত এখন তার। তার মনে একটা কষ্ট দেয়াও চলবে না। আমার জীবনটাই একটা নতুন গতিতে এনে দিলো এই মানুষটা। এখন আর কিছু ভাবতে চাই না, এখন তার কথাই ভাবতে চাই, বাকি জীবন তার সাথে কাটাতে চাই। যাই হয়ে যাক, আমি যেন প্রতি ক্ষণে তার পাশে থাকি এই চেষ্টা করবো।তার প্রত্যেকটা হাসির কারণ আমি হতে চাই, তার কষ্টে সুখ আমিই বয়ে আনতে চাই। আমার জীবনে এখন শুধু আমি থাকবো না, থাকবো আমি ও সে আর আমাদের পরিবার। ভালোবাসি, বড্ড বেশি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×