বিগত কোনো বছরগুলোতে সারাদেশে এ+ পেতো মাত্র ৯-১০ হাজার জন ৷ হিসেবে গরমিল হলে তা ১-২ হাজারের বেশী হবে না ৷ আর এখন মাত্র ১০-১২ বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে দাড়়িয়েছে প্রায় ১২-১৪ গুনেরও বেশী ৷ রাতারাতি এতো আমূল পরিবর্তন? কিভাবে সম্ভব? রাতারাতি কি বাংলাদেশের মানুষের মস্তিষ্ক পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে? তাও আবার এতো স্বল্প সময়ে? যেখানে পড়ালেখার মান বাড়ানোর কথা সেখানে আমাদের সরকারি ব্যবস্থা পড়ালেখার মান টেনে নিচের দিকে নামিয়ে আনছে ৷ এতে পাশের হার বাড়ছে,সরকারের নাম ডাক বাড়ছে ৷ তবে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না ৷ বরং ঠিক ১০-১২ বছর আগে যে পরিমান বেকার যুবক ছিল তার সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে ৷
এমন এক অবস্থা এখন,ঠিক আগামি ১০ বছর পরে রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করলে বলবে আমি মেট্রিকে এ+ পাইছিলাম ৷
: তো চাকরী হয় নাই কেন? রিকশা চালান কেন?
: নির্বাক!
রিকশাওয়ালা উত্তর দিতে পারবে না কারন তার যোগ্যতা ছিল না ৷
আমার অভিযোগ ঐ রিকশাওয়ালার ওপর নয়,যারা এ+ পাচ্ছে তাদের ওপরও নয় ৷ অভিযোগ ব্যবস্থাপনার ওপর ৷ এতো ভুরি ভুরি এ+ সরকারের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে যে আপনাদের শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক! সহজ-সাবলীল ৷ পানি ভাত! আমরা কিছু শিখতে পারছি না ৷ ক্লাস সিক্সের গনিত বইয়ের একটা সূত্র জিজ্ঞাসা করলে পারি না ৷ কিন্তু এ+ পেয়ে যাচ্ছি ৷ দোষ তো আমাদের না ৷ আগের মতো হোক শিক্ষা ব্যবস্থা ৷ কঠিন থেকে কঠিনতর করা হোক ৷ এ+ পেতে আমাদের মুখে ফেনা উঠে যাক পড়তে পড়তে! এ+ না পেয়েও শিক্ষিত হওয়া যায় ৷ আমি সরকারী কিংবা বিরোধী দলে ভর্তি হতে আসি নাই ৷ পরিবর্তন চাই আপনাদের ব্যবস্থার ৷ কেন ক্লাস সিক্সের সূত্র ২ মিনিট ধরে মনে করে বলতে হবে! এটা শিক্ষিতদের দিক থেকে শিক্ষিত হওয়া নয় ৷ এ ব্যবস্থার পরিবর্তন হোক ৷ যোগ্যতা অনুযায়ী এ+ পাক! ব্যবস্থা আরও কঠিন করা হোক! এ+ এর চিন্তা না করে শিক্ষিত হওয়ার চিন্তা করা হোক ৷ দেশে তাহলে একজন বেকারও থাকবে না ৷ কেউ শিক্ষিত হওয়ার জন্য পড়ালেখা করে না ৷ সবাই ভাল চাকরী,দামি গাড়ি,বড় বাড়ী,পয়সাওয়ালা শশুরবাড়ী এসব চিন্তা করে ৷ আমি নিজেও ব্যতিক্রম নয়! ঐ যে এ+ আমাদের ডিএনএ তে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে ৷ আপনাদের ব্যবস্থা ঢুকিয়ে দিয়েছে ৷ সুতরাং কঠিন হোক ব্যবস্থা ৷ আমাদের বাবারা যাতে বলতে না পারে যে, “তোদের এগুলো পড়ালেখা হইলো কোনো?আমাদের সময় যে কিভাবে পড়ছি! পুরো বই মুখস্থ করতে হইতো! শুনবি আমার এখনও মুখস্থ!” ৫০ উর্ধবয়সী বাবা যদি তার পড়া এখনো মুখস্থ রাখতে পারে তাহলে একটু হলেও ধারনা করা যায় যে তারা কি পরিমান পড়ালেখা করেছে!ওনারাই আসল শিক্ষিত! অথচ ভালো রেজাল্ট করতে পারে নি ৷ বড়ই লজ্জা পাই তখন! আমার তো কিছুই মনে নাই ৷ সৃজনশীল! বানায় লেখবো! এই চিন্তায় আমরা পরীক্ষার হলে যাই! বাহ! ভালো ব্যবস্থা! বানায় বানায় লেখার শিক্ষা ব্যবস্থা! মুত্র বিসর্জন করি আপনাদের বিকৃত মস্তিষ্কে যে মস্তিষ্ক থেকে এরকম ব্যবস্থার উদ্ভব হয়!
ফেবুতে:ফজলে রাব্বী শরীফ