২৪ এপ্রিল ২০১৩ সময় তখন সকাল ৮:৪৫মি.। হঠাৎ সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামের একটি বহুতল ভবন ধসে পড়ে। ভবনটিতে ৫টি পোশাক কারখানা ছাড়াও একটি ব্যাংক এবং একাধিক দোকান ছিল। কাজের শুরুতে ব্যস্ততম সময়ে এই ভবন ধসের ঘটনাটি ঘটে। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ন থাকা শর্তেও কর্তৃ্পক্ষের একগুয়েমির কারনে ভবনটিতে প্রায় ৫ হাজারের মত কর্মীকে দিয়ে কাজ করানো হতো। ধসে পড়ার সময় ভবনটিতে প্রায় ৩ হাজার কর্মী ছিল বলে ধারনা করা হয়। নয়তলা বিশিষ্ট রানা প্লাজা ধসে মারা যান ৫টি পোশাক কারখানাসহ ১,১৩৫ জন শ্রমিক। গুরুতর আহত হয় এক হাজারেরও বেশি৷ এই ভবন ধসকে বিশ্বের ইতিহাসে ৩য় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে ধরা হয়।
আজও স্বজনদের আহাজারি কান পাতলে শোনা যায়। ট্রাজেডির ৩ বছরেও স্বাভাবিক জীবন-যাপনে ফিরতে পারেনি সেই রানা প্লাজার শ্রমিকরা। তাদের সংগ্রাম যেন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সাথে। মানবেতর জীবন যাপন করছে আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারীরা। শারীরিক সমস্যা ছাড়াও মানসিক অনেক সমস্যায় পীড়িত হচ্ছে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের এই মানুষ গুলো।
প্রতি বছর এই দিনটি আসলে স্বজনহারা মানুষ গুলো প্ল্যাকার্ড আর ফুল নিয়ে দাড়িয়ে থাকে। জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের স্মৃতি আজও খুজে ফিরে। দেশের অর্থনৈতিক এই কারিগরদের অসহায়ত্ব আজও দেখতে হয় আমদের। দূর্ঘটনার ৩ বছরে পার হলেও নিখোঁজ ও আহত শ্রমিকদের সংখ্যা, তাদের দীর্ঘ বেকারত্বের সমাধান কেউ দিতে পারে নি। পারেনি তাদের ক্ষতিপূরণের সম্পূর্ণ টাকা প্রদান করতে। আজ পর্যন্ত বিশ্বের ইতিহাসে এই ৩য় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনার দোষীদের বিচার হয়নি।
গোলাপি বেগম, রাজ্জাক ও আমিনরা আজও যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। রহিমা তার মেয়ে রিমা আক্তারের ক্ষতিপূরণের জন্য আজও দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। ফেরদৌসি এখনো তার নিখোঁজ ছেলে মহিদুলের অপেক্ষায়। এ যেন শেষ হবার নয়।
শোষিতের আর্তনাদ এর আজ ৩ বছর। আসুন আমরা এই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াই। যেমনিভাবে ধসের প্রথম প্রহরে আমরা ছিলাম রক্তমাখা মানুষগুলোর পাশে।