অনেক কাল আগের কথা,
একজন ভীতু মানুষ- রশিদ মিয়া,
ঢাকায় এসেছিল ভাত খাবে বলে।
শিউলি, কিংবা বকুল ফুলের মতো এক থালা ভাত!
এক থালা ভাতের আশায় দিন কাটতো তার।
এতো সাধারণ, হয়তো তাই, তার মনে স্বস্তি নেই-
“গলির কুত্তা গুলি হুদাই মাঝ রাইত হইলে কান্দে,
কোন মুরুব্বী যে মরে!
কী না জানি বিপদ আসে!
আহারে! কী কান্দাডা কান্দে!”
কুসংস্কারে বিশ্বাস করতো মূর্খ রিকশাচালক রশিদ মিয়া।
কী অদ্ভুত! উপরওয়ালা “কু-ডাক” কবুল করলেন।
শত শত খালি পায়ের ছাপ মুছে দিয়ে
এক মধ্যরাতে, মানুষ নয় নিশ্চিত-
ভয়ংকর কোন দানব এলো।
শিশু, বৃদ্ধ, শিক্ষক, কৃষক সবই মরল।
রশিদ মিয়ার বাবা মরল।
বোন, মা, এমন কী বৃদ্ধাও বাদ গেলো না। - ছিঃ!
“হায় আল্লাহ্! এইডা তো বিপদ না, এইডা রোজ কেয়ামত!”
ওটা গণ্ডগোল নয়, ওটা যুদ্ধ ছিল।
রিকশাচালকের পেশীবহুল পা সম্বল করে ভীতু রশিদ মিয়া
চোখের জলে বুক ভাসিয়ে দেশ ছেড়েছিল।
তেতাল্লিশ বছর পর, বৃদ্ধ রশিদ মিয়ার চোখে ছানি,
ভাল দেখতে পায় না, শুধু কান পেতে শোনে।
গলির কুকুর গুলো আজও মাঝ রাত হলে কাঁদে।
“রহম করো খোদা! কইলজায় কু-ডাক ডাকে।”
ঢাকা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৪